Basic TechnologyTechnology

ইন্টারনেট অফ থিংগস | কি এর ভবিষ্যৎ? | বিস্তারিত

ইন্টারনেট অফ থিংগস এর ধারণা এবং ভবিষ্যৎ

বন্ধুরা আপনারা সকলেই নিশ্চয় ইন্টারনেট অফ থিংগস সম্পর্কে শুনেছেন। আর যেহেতু আমরা সকলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাই আমাদের জানাটা অবশ্যই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠে যে কি এই ইন্টারনেট অফ থিংগস। বন্ধু আপনি এই পোস্টটি পড়তে থাকুন আর আমি আপনাকে আজ এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে চলেছি।


ইন্টারনেট অফ থিংগস

বন্ধু আপনি ভেবে দেখুন আপনার ঘরে এমন কতগুলো ডিভাইজ রয়েছে যা ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। আপনার ওয়াইফাই রাউটার, আপনার সকল স্মার্টফোন, তাছাড়া আপনার ঘরের যতো গুলো ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ডেস্কটপ রয়েছে সেগুলো সবই কিন্তু ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। আবার হতে পারে আপনার ঘরে অনেক স্মার্ট ডিভাইজ রয়েছে যেমন ক্রোম কাস্ট, টেম্প্রেচার মনিটর, বা আপনার ঘরের সিকিউরিটি ক্যামেরা যা আপনি রিমোট থেকে অ্যাক্সেস করেন। বন্ধুরা এভাবেই আমরা দিনের পর দিন এমন নতুন কিছু ডিভাইজ ব্যবহার করা শুরু করছি যা ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত।

এখন প্রশ্ন হলো এই ইন্টারনেট অফ থিংগস আসলে কি? দেখুন ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত যতো গুলো ডিভাইজ রয়েছে তাদের সকলের মধ্যেকার একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার সিস্টেমই হলো ইন্টারনেট অফ থিংগস। ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত সকল ডিভাইজ একসাথে কাজ করানো এবং এদের একটি পরিবারের মতো গড়ে তোলায় হলো এর লক্ষ্য।

দেখুন আপনি আপনার ফোনে গুগল চালান বা ইউটিউব চালান বা ফেসবুক চালান এতো সাধারনভাবে ইন্টারনেট হলোই। কিন্তু এছাড়াও ইন্টারনেট অফ থিংগস এমন এক কৌশল হবে যাতে আপনার সকল ডিভাইজ নিজেদের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কথা বলবে এবং তারা আপনার কাজ করে দেবার জন্য এবং সেবার মান উন্নয়ন করার জন্য কাজ করবে। এবং তারা সকল কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পূর্ণ করবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

ইন্টারনেট অফ থিংগস এর ধারণা এবং ভবিষ্যৎ

মনে করুন আপনার একটি কার আছে এবং তাতে একটি জিপিএস ইউনিট লাগানো আছে [জিপিএস কি? কীভাবে কাজ করে]। এবং এই জিপিএস ইউনিট ইন্টারনেটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। এখন মনে করুন গাড়িটি চলছে এবং হঠাৎ করে সামনে কোন অ্যাকসিডেন্ট ঘটে গেলো। আর অ্যাকসিডেন্ট হতেই মনে করুন গাড়িটি নিজে থেকেই পুলিশ ষ্টেশনে কল দিয়ে দিল এবং তথ্য পাঠিয়ে দিল যে অমুক জায়গায় কার অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে এবং দয়া করে আপনারা এখানে এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে দিন। তো দেখুন বন্ধুরা ইন্টারনেট অফ থিংগসে আপনাকে কিছু করার প্রয়োজন নেই সরাসরি আপনার কার থেকে ম্যাসেজ গেছে এবং পুলিশ ষ্টেশনে এমনি কোন ডিভাইজ আছে যা স্বয়ংক্রিয় ভাবে ম্যাসেজটি রিসিভ করলো এবং ঐ ডিভাইজটি আবার কোন সেলফ ড্রাইভ কার বা এ্যাম্বুলেন্স সেখানে পাঠিয়ে দিল।

আবার আরেকটি উদাহরণ নিন। মনে করুন আপনি আপনার ঘরের গ্যারেজ আপনি খুলে রেখে চলে এসেছেন। এবং আপনার ঘরের জানালা গুলোও আপনি খুলে রেখে এসেছেন। এখন আপনার ঘরে এবং গ্যারেজে আপনি সেন্সর লাগিয়ে রেখেছেন। তো এই অবস্থায় ডিভাইজ গুলো নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করবে। সেন্সর দেখবে যে আপনার ঘরের ভেতর আপনার কোন অ্যাকটিভিটি নেই। তখন আপনার সেন্সর আপনার ফোনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে দেখবে যে তার লোকেশন ঘর থেকে অনেক দূরে তখন সেন্সর গুলো বুঝে যাবে আপনি ঘরে নেই এবং সে অনুসারে আপনার ঘরের জানালা এবং গ্যারেজের দরজা স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং আপনার কাছে ম্যাসেজ চলে যাবে যে আপনার দরজা জানালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার আপনার ঘরের সামনে আসতেই দরজার সেন্সর আপনাকে স্ক্যান করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে।

তো বন্ধুরা এরকম অনেক ছোট বড় জিনিষ রয়েছে যা ইন্টারনেট অফ থিংগস এর মাধ্যমে সম্ভব হবে। কিন্তু আজকের দিনেও এর গুরুত্ব ১% পর্যন্তও পৌছাতে পারেনি। আমি পুরা আশা রাখি যে ভবিষ্যতের দিনে এই প্রযুক্তি গুলো খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করতে দেখতে পাবো। কিন্তু এখন তো বিষয় গুলো কোন স্বপ্নের চেয়ে কম কিছু নয়। মনে করুন আপনি একটি কার চালাচ্ছেন এবং তার ভেতর এমন কিছু ডিভাইজ রয়েছে যা সর্বদা আপনার কার অ্যানালাইসিস করছে এবং কার প্রস্তুত কোম্পানির কাছে সরাসরি সকল ডাটা পৌঁছে দিচ্ছে। এবং আপনার কার প্রস্তুতকারী কোম্পানি আপনার ফোনে সরাসরি আপনাকে নটিফাই করবে যে আপনার কারের তৈল প্রায় শেষের পথে আপনি সামনের পাম্প থেকে ট্যাঙ্ক লোড করুন, সামনের পাম্প এতো কিলো দূরে। আবার হয়তো বল্ল আপনার ব্রেক ঠিক মতো কাজ করছে না আপনি চলে আসুন সামনের সার্ভিস সেন্টারে। তো বন্ধুরা ভেবে দেখুন কত মজাদার সব বিষয়। আপনাকে কিন্তু কোন কাজই করতে হবে না। কিন্তু সকল কাজ স্বয়ংক্রিয় ভাবে হয়ে যাবে। ভেবে দেখতে পারছেন কি ইন্টারনেট অফ থিংগসের উন্নয়ন করা গেলে কি রকম সুবিধা আমরা পেতে চলেছি?

আবার মনে করুন আপনি একজন হৃদ রোগী এবং আপনার শরীরে কোন ডিভাইজ লাগানো আছে। আপনার সকল হেলথ তথ্য সরাসরি ডাক্তারের কাছে চলে যাবে এবং আপনাকে ডাক্তার সবসময় লাইভ অ্যানালাইসিস করাতে পারবে। তো বন্ধুরা এই হলো ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি। যা সবকিছু বদলিয়ে রেখে দেবে।

শেষ কথা

বন্ধুরা হয়তো ভবিষ্যতে ইন্টারনেট অফ থিংগস অনেক ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠবে এবং আমাদের সকলের লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করে দেবে। এই ধারনার সুবিধা গুলো অফুরন্ত। আশা করছি পোস্টটি ভালো লেগেছে আপনার। আপনার যেকোনো মতামত আমাকে অবশ্যই জানাবেন নিচে কমেন্ট করে। তাছাড়া আপনি টুইটারে হ্যাস ট্যাগ #Techubs লিখেও আপনার যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত জানাতে পারেন। আর পোস্টটি শেয়ার করে আপনার সকল বন্ধুকে জানিয়ে দিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button