আমাদের ফাস্ট লাইফস্টাইলে জীবনের কোনো গ্যারান্টি নেই।
অথচ, আমাদের প্রায় সবারই পরিবার রয়েছে ও আমাদের চারপাশে থাকা প্রিয়জনদের চিন্তা সবসময়ই আমাদের ভাবায়।
আর, আমরা চাই আমাদের অবর্তমানে যাতে আমাদের পরিবার-পরিজন সুস্থ ও সুখী থাকেন সেই জন্যে কিছু ব্যবস্থা করে যেতে।
আবার, আমরা আমাদের অনেক কষ্টের টাকা খরচ করে যখন কোনো বহুমূল্য জিনিস কিনি, তখন সেই জিনিসের স্থায়িত্ব বা ক্ষতির চিন্তাও কিন্তু আমাদেরকে চিন্তিত করে তোলে।
তাই, নিজেদের প্রিয়জনের সুবিধার্থে কিংবা মূল্যবান কোনো জিনিসকে রক্ষা করতে আমরা অনেক সময়ই সেই জিনিস বা নিজের জন্যে ইন্স্যুরেন্স বা বীমা করিয়ে থাকি।
তাই, আজকে আমাদের এই আর্টিকলে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো এই বীমা কি ? বা ইন্সুরেন্স কাকে বলে, ও এটির প্রকারগুলো কি কি, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে।
প্রথমে জানি, এই বীমা বলতে কি বুঝায় ?
ইন্স্যুরাস বা বীমা কি ? (what is insurance in Bengali)
বীমা বা ইন্স্যুরেন্স হল সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার হাতিয়ার।
যে ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে যেকোনো ব্যক্তি বা ব্যবসাকে বিভিন্ন আর্থিক ক্ষতি বা ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।
যদিও মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি কখনোই পূরণীয় নয়, তবে অন্তত আর্থিক ক্ষতি এই বীমা দ্বারা পূরণ করা সম্ভব।
জীবন অবশ্যই অনিশ্চিত, যা আপনি কোনোভাবেই পাল্টাতে পারবেন না, তবে বীমা আপনাকে অবশ্যই আপনার জীবন-সম্পর্কিত আর্থিক ক্ষতি অনেকটা পরিমাণে কমাতে সাহায্য করে।
বীমা কাকে বলে বা বীমার সংজ্ঞা:
বীমা বা ইন্স্যুরেন্স হল দুটি পক্ষের মধ্যে করা একটা আইনী চুক্তি।
আর, এই চুক্তি মূলত বীমা কোম্পানি (insurer/বীমাকারী) ও ব্যক্তি (insured/বীমাকৃত) মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
যেখানে বীমা কোম্পানি সেই বীমাকৃত ব্যক্তির দ্বারা প্রদত্ত প্রিমিয়ামের বিনিময়ে তাকে কোনো আকস্মিক আর্থিক ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
সহজ কথায় বলতে গেলে, বীমা হল একটি ঝুঁকি হস্তান্তরকারী প্রক্রিয়া।
এই প্রক্রিয়ায় আপনি আপনার ঝুঁকি বীমা কোম্পানিকে হস্তান্তর করেন।
আর, অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনার কারণে আপনি যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন, তার জন্য আপনি আর্থিক দিক থেকে সেই কোম্পানির কাছ থেকে কভারেজ পান।
এই বীমার ব্যবস্থার করার জন্যে আপনি যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন, তাকেই বলা হয় ‘প্রিমিয়াম’।
আপনি আপনার জীবন থেকে শুরু করে আপনার ব্যবহার করা স্মার্টফোন পর্যন্ত বিভিন্ন জিনিসের উপর বীমার ব্যবস্থা করতে পারবেন।
অর্থাৎ, এক কথায় বলা যায় যে, আপনার কাছে যা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ আপনি বীমার মাধ্যমে তাই-ই আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।
বীমা কভারেজকে আর্থিক সুরক্ষা নীতির আকারে বর্ণিত একধরণের চুক্তিপত্র হিসেবে বলা যেতে পারে।
এই নীতি অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে তৈরী হওয়া আর্থিক ঝুঁকি থেকে মানুষকে সুরক্ষা দেয়।
বীমাকৃত মানুষটি হলেন বীমার পলিসিধারী বা policyholder।
আর, যেই কোম্পানি বীমার ব্যবস্থা করে, তারা হল বীমাকারী, বীমা প্রদানকারী কোম্পানি, বীমা বাহক কিংবা আন্ডাররাইটার।
পলিসিহোল্ডার সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘প্রিমিয়াম’ বা অর্থ বীমা কোম্পানিকে প্রদান করেন।
আর, এই প্রিমিয়ামের পরিবর্তে সেই বীমা কোম্পনি ওই ব্যক্তিকে বীমা কভার প্রদান করে।
তবে, বীমা হল একটি নির্দিষ্ট শর্তাবলী সাপেক্ষ চুক্তি।
যেই চুক্তিগুলো মেনে তবেই বীমা কোম্পনি তাদের পলিসিধারকদের ক্ষতি পূরণ দিয়ে থাকে।
প্রিমিয়াম পেমেন্টের পরিমাণের উপর নির্ভর করেই বীমা কভারেজ বা ‘পলিসি সীমা’-এর অর্থের পরিমাণ নির্দিষ্ট করা হয়।
তাহলে আশা করছি, বীমা বলতে কি বুঝায় সেটা আপনারা বুঝতেই পেরেছেন।
বীমার উপাদান গুলো কি কি:
বন্ধুরা, ইন্সুরেন্স কাকে বলে (What Is Insurance), এই বিষয়ে তো এখন বুঝেই নিয়েছেন, চলুন এবার আমরা বীমার উপাদান গুলো এক এক করে জেনেনেই।
যেকোনো ইন্স্যুরেন্স পলিসি বাছার আগে বীমা কিভাবে কাজ করে সেটা বোঝা জরুরী।
যেকোনো সাধারণ বীমা পলিসির মূল কয়েকটি উপাদান থাকে, সেগুলো হল –
১. প্রিমিয়াম:
কোনো পলিসির প্রিমিয়াম হল সেই বীমার মূল্য।
প্রিমিয়ামকে সাধারণত মাসিক খরচ হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
যেকোনো বীমা পলিসিতে প্রিমিয়ামের পরিমাণ আপনার বা আপনার ব্যবসার ঝুঁকির পরিমাণের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয় যে আপনার কোন ধরণের বীমা কাভারেজ চাই।
ধরুন, আপনার একটি গাড়ি আছে আর গাড়ি চালানোর সময়ে আপনার দুর্ঘটনা ঘটানোরও ইতিহাস আছে।
তো সেক্ষেত্রে, আপনি আপনার গাড়ির বীমা পলিসি নির্বাচন করতে চাইলে বেশি অর্থের বীমাই করতে চাইবেন।
আর, বেশি অর্থের বীমাতে প্রিমিয়ামের পরিমাণও বেশি থাকে।
অন্যদিকে, একজন সাবধানী ড্রাইভার আপনার চেয়ে কম টাকার বীমাই করবেন এই ব্যাপারে।
তাই, বিভিন্ন পলিসিহোল্ডার একই ধরনের পলিসির জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রিমিয়াম নিতে পারেন।
২. পলিসি লিমিট:
একটা কভারড ক্ষতির জন্য কোনো পলিসির অধীনে একজন পলিসিহোল্ডার সর্বোচ্চ যে পরিমাণ টাকা প্রদান করবেন, সেই পরিমাণটাই হল পলিসি লিমিট।
কোনো ম্যাক্সিম পলিসি লিমিট সেট করা যায় প্রতি পিরিয়ডের (যেমন- বার্ষিক বা পলিসির মেয়াদ) উপর, ক্ষতি বা আঘাতের জন্য কিংবা পলিসির আয়ুর উপর নির্ভর করে।
সাধারণত, উচ্চ পলিসি লিমিটগুলোর ক্ষেত্রে উচ্চ প্রিমিয়াম দিতে হয়।
একটি সাধারণ জীবন বীমা পলিসির জন্য, বীমাকারী সর্বোচ্চ যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন, তাকে অভিহিত মূল্য (face value) হিসাবে গণ্য করা হয়।
যা বীমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তার মনোনীত ব্যক্তিকে (nominee) প্রদান করা হয়।
৩. বাদ (deductible):
ডিডাক্টিবল বা বাদ যাওয়া মূল্য হল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ, যা পলিসিহোল্ডারকে বীমাকারীর দাবি (claim) পরিশোধ করার আগে দিতে হয়।
বীমা কোম্পানি ও পলিসির প্রকারের উপর নির্ভর করে ডিডাক্টিবলগুলো প্রতি-পলিসি বা প্রতি-দাবির উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
সাধারণত, উচ্চ ডিডাক্টিবলসহ পলিসিগুলো কম ব্যয়বহুল হয়, কারণ উচ্চ ব্যয়ের ফলে ক্লেইমের অর্থের পরিমাণ কমে যায়।
৪. বিশেষ বিবেচ্য বিষয়:
স্বাস্থ্য বীমার ক্ষেত্রে যাদের দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে বা নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন তাদের কম ডিডাক্টিবলসহ পলিসিগুলি গ্রহণ করা উচিত।
যদিও, বার্ষিক প্রিমিয়াম তুলনামূলকভাবে উচ্চ ডিডাক্টিবল পলিসির চেয়ে বেশি ব্যয়সাপেক্ষ।
তবে, সারা বছর কম খরচে চিকিৎসা সেবাযুক্ত বীমাই হল সেরা নির্বাচন।
বীমা কত প্রকার ও কি কি – (Different Types of Insurance Policies)
মূলত, বীমা ৮ ধরণের হয়ে থাকে।
সেগুলো হল-
১. লাইফ ইন্স্যুরেন্স বা জীবন বীমা:
এই ধরণের বীমার মূল বিষয়বস্তুই হল একজন মানুষের জীবনকে অর্থের বিনিময়ে সুরক্ষিত করা।
এখানে পলিসিহোল্ডারের মৃত্যুর সময় বা একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় বীমার নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তার মনোনীত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়।
বর্তমানে জীবন বীমা সর্বাধিক জনপ্রিয়, কারণ জীবন হল যেকোনো মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি।
এই ধরণের বীমা পোলিসিহোল্ডারের অকাল মৃত্যুতে তার পরিবারকে সুরক্ষা প্রদান করে।
কিংবা, বৃদ্ধ বয়সে যখন উপার্জনের ক্ষমতা হ্রাস পায় তখন পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থও প্রদান করে।
ব্যক্তিগত বীমার অধীনে কোনো ধরণের দুর্ঘটনায় একটা সীমিত পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয়।
বীমা শুধুমাত্র সুরক্ষাই দেয় না বরং এটি বীমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুতে বা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তার দেওয়া যথেষ্ট পরিমাণ টাকাও ফেরত দেয়।
২. জেনারেল ইন্স্যুরেন্স বা সাধারণ বীমা:
সম্পত্তি বীমা, দায় বীমা, ও অন্যান্য ধরনের বীমা হল সাধারণ বীমার উদাহরণ।
এমনকি, ফায়ার ও মেরিন বীমাকে সম্পত্তি বীমার অন্তর্গত বলে মনে করা হয়।
দায় বা লায়াবিলিটি বীমার সবথেকে কঠিন বীমাটি হল ফিডেলিটি বীমা।
এই ধরণের বীমায় বীমা কোম্পানিগুলো বীমাকারীর যে তৃতীয় পক্ষের কাছে ধার রয়েছে সেই ধারের অঙ্ক শোধ করতে হয়।
৩. প্রপার্টি ইন্স্যুরেন্স বা সম্পত্তির বীমা:
সম্পত্তি বীমার অধীনে ব্যক্তির সম্পত্তিকে একটি নির্দিষ্ট ঝুঁকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়া হয়।
অগ্নিকান্ড থেকে শুরু নানাধরণের দুর্যোগ, সম্পত্তি চুরি বা দুর্ঘটনায় সম্পত্তির ক্ষতি হলে, সেই ক্ষতিপূরণ এই ধরণের বীমায় দেওয়া হয়ে থাকে।
৪. মেরিন ইন্স্যুরেন্স:
সমুদ্রে পাথরের সাথে ধাক্কা থেকে শুরু করে, শত্রু দ্বারা আক্রমণ ও আরও নানাক্ষেত্রে এই বীমা কার্যকরী।
এটি দু ধরণের হয় – ইনল্যান্ড ও ওশান মেরিন বীমা।
এখানে জাহাজ, মালবাহী ও জাহাজী মালের উপরেও বীমা লাগানো যায়।
৫. ফায়ার ইন্স্যুরেন্স:
এই ধরণের বীমায় ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে সমাজের যেকোনো ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি, কিংবা দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও দুর্ঘটনায় লেগে যাওয়ায় আগুনের দ্বারা ক্ষতিও এই বীমায় কভার করা হয়ে থাকে।
৬. লায়াবিলিটি ইন্সুরেন্স:
এই বীমায় বীমাকৃত ব্যক্তি সম্পত্তির ক্ষতি পরিশোধ করতে বা কোনো ব্যক্তির ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে দায়বদ্ধ।
৭. সোশ্যাল ইন্স্যুরেন্স:
এই বীমায় সমাজের দুর্বল অংশগুলোকে সুরক্ষা প্রদান করা হয়, যারা পর্যাপ্ত বীমার জন্য প্রিমিয়াম দিতে অক্ষম তাদের সুরক্ষা দেওয়া হয়। পেনশন পরিকল্পনা, অক্ষমতা বেনিফিট, শিল্প বীমা, বেকারত্ব সুবিধা, অসুস্থতা বীমা প্রভৃতি সামাজিক বীমার বিভিন্ন প্রকার।
৮. হেলথ ইন্সুরেন্স:
এই ধরণের বীমা হলো এমন এক বিশেষ ধরণের বীমা যেখানে একজন ব্যক্তির চিকিৎসার খরচ গুলোকে কভার করা হবে।
অবশই, আপনি কত বেশি প্রিমিয়াম দিচ্ছেন এবং আপনার পলিসি লিমিটের ওপরে নির্ভর করে বীমা কম্পানি আপনার চিকিৎসা খরচ গুলো বহন করবেন।
বীমার সুবিধাগুলো কি কি ?
একটা বীমা পলিসি বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে এবং একাধিক সুবিধা প্রদান করে থাকে।
এই ইন্স্যুরেন্স বা বীমার বেশ কিছু সাধারণ সুবিধার কথা নিচে আলোচনা করা হল –
১. সুরক্ষা প্রদান করে:
বীমাগুলো আর্থিক ক্ষতির প্রভাবকে হ্রাস করে কোনো ব্যক্তিকে বিপদজনক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করে।
এটি আর্থিক সংকটের সময় আর্থিক প্রতিদান দিয়ে পীড়িত ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেয়।
এই বীমাগুলো শুধুমাত্র মানুষকে আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্ত করে না, বরং এই ধরণের পরিস্থিতি থেকে তৈরী হওয়া মানসিক চাপ থেকেও মুক্ত করে।
২. নিশ্চয়তা প্রদান করে:
বীমা যেকোনো পলিসিধারীদের আশ্বাসের অনুভূতি দেয়।
যেকোনো ব্যক্তি এই নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্যেই তাদের আয়ের একটা ছোট অংশ নিয়মিত বীমাতে ব্যয় করে তাদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে।
সুতরাং, বীমাতে সামান্য প্রিমিয়ামের বদলে বিশ্বাসযোগ্য আর্থিক সহায়তা পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে।
দুর্ঘটনা, বা কোনো বিপদের সম্মুখীন হলে এটি পলিসি হোল্ডারদের আর্থিক দিক থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
৩. ঝুঁকি ভাগ করে নেওয়া:
যে পদ্ধতিতে বীমা পলিসি কাজ করে তা এটিকে একটি সমবায় প্রকল্পে রূপান্তরিত করেছে।
একজন বীমাকারী বা বীমা কোম্পানি তার নিজস্ব মূলধন থেকে অর্থ প্রদান করতে অনেক সময়েই অক্ষম হয়।
যেকোনো বীমা কোম্পানী সম্মিলিতভাবে ঝুঁকি সামলায় আর একসাথে অনেক প্রিমিয়াম গ্রহণ করে।
তাই, এই বীমা কোম্পানিগুলো বিপুল সংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ লোককে কভারেজ দেয়।
আর, যে বীমাকৃত ব্যক্তি বীমা কভারেজ দাবি করেন, বীমা কোম্পানি তাকে বাকি বীমাকৃতদের অর্থ তহবিল থেকেই সেই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কভারেজের অর্থ প্রদান করে।
এইভাবে, সমস্ত পলিসিহোল্ডার সেই নির্দিষ্ট বিপদে পড়ার ব্যক্তির ঝুঁকি ভাগ করে নেয়।
৪. ঝুঁকির মান
বীমা পলিসিগুলো ঝুঁকির মাত্রাগুলোকে মূল্যায়ন করে এবং এই ঝুঁকিগুলো আসার বিভিন্ন কারণের পূর্বাভাসও দিয়ে থাকে।
বীমা ঝুঁকির মাত্রার উপর ভিত্তি করে কভারেজের পরিমাণ এবং প্রিমিয়াম প্রদানের পরিমাণ নির্ণয় করে।
এটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ও তার ফলস্বরূপ হওয়া ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে।
৫. পুঁজির উৎপাদন:
বিভিন্ন প্রিমিয়াম থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে বীমা কোম্পানির তহবিল তৈরি হয়।
বীমাকারীরা এই থোক টাকা বাজারের বিভিন্ন অংশে বিনিয়োগ করে।
যেমন- স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড ও আরও অন্যান্য উৎপাদনকারী চ্যানেলে বীমা কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করে থাকে।
তাই, এই বীমাগুলো ব্যবসার জন্য আয় এবং মুনাফা বাড়াতে সাহায্য করে।
যা কোম্পানির মূলধনের ক্ষতির বিরুদ্ধে রক্ষা করে।
৬. অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে:
বীমা নীতিগুলি আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রদানের জন্য ঘরোয়া সঞ্চয়গুলোকে (domestic expenses) একত্রিত করে।
এই নীতিগুলো বীমাকৃত সম্প্রদায়ের ক্ষতি বা ধ্বংসের কারণে হওয়া ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করে।
এটি শুধুমাত্র সমানভাবে ঝুঁকিকে ভাগ করে দেয় তাইই হয়, বরং তহবিল ব্যবহার করে ব্যবসা-বাণিজ্যকেও বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. সংরক্ষণের অভ্যাস তৈরী করতে সাহায্য করে:
বীমা পলিসিগুলো মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
তারা প্রিমিয়াম প্রদানের জন্য আয়ের একটি অংশ জমিয়ে রাখে, যা তাদের অজানা ভবিষ্যতের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে।
অনেক বীমা পরিকল্পনা আছে, যেখানে বীমা-ও-সঞ্চয় বা বীমা-ও-বিনিয়োগের স্কিম রয়েছে।
তাই, বীমা ব্যক্তিদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে তোলে।
আজকে আমাদের বীমা নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখনই শেষ হল।
লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আমাদের শেষ কথা,,
তাহলে বন্ধুরা,, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানলাম বীমা কাকে বলে এবং বীমা কত প্রকার ও কি কি।
Insurance meaning in Bengali নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।
এছাড়া, ইন্সুরেন্স (Insurance) এর বিষয়ে আপনার মনে অন্যান্য কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে আমাদের অবশই জানিয়ে দিতে পারেন।