এন্ড্রয়েড সেফ মোড কি? চালু করার উপায় ও সুবিধা জানুন
সেফ মোড সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্নোত্তর
সেফ মোড” শব্দটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ও কম্পিউটার এর দুনিয়ায় বেশ পরিচিত একটি বিষয়। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে অ্যাপ ক্র্যাশ, ফ্রিজ বা স্লো হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে সেফ মোড এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। মূলত ফোনের কোনো সমস্যা থার্ড পার্টি অ্যাপ এর কারণে হচ্ছে কিনা তা জানতে সেফ মোড ব্যবহার করা হয়।
এন্ড্রয়েড সেফ মোড কি?
অ্যাপ বা উইজেটের সমস্যা সমাধানে অ্যান্ড্রয়েডে সেফ মোড ব্যবহৃত হয়, যা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। মূলত সকল থার্ড পার্টি অ্যাপ ডিসেবল থাকে সেফ মোডে। একাধিক উপায়ে এন্ড্রয়েড সেফ মোড চালু করা যায়। থার্ড পার্টি অ্যাপের পাশাপাশি কিছু হোম স্ক্রিন উইজেটও রিমুভ করে সেফ মোড।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সেফ মোড থার্ড পার্টি অ্যাপ এর অ্যাকসেস ব্লক করে দেয় ও সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সেফ মোড চালু করলে ডিভাইসের স্পিড বেড়ে যায় ও অনেক সমস্যার সমাধান হয়। তবে ফোন দ্বারা খুব সীমিত কাজ করা যায় সেফ মোডে।
সেফ মোড কিভাবে চালু করতে হয়?
সেফ মোড চালু করার একাধিক উপায় আছে তা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেফ মোড চালু করার একাধিক উপায়সমূহ সম্পর্কে।
প্রথম নিয়ম
- পাওয়ার বাটন প্রেস করে ধরে রাখুন
- প্রদর্শিত অপশনগুলো হতে Power Off সিলেক্ট করুন
- এবার Power Off অপশনটিতে প্রেস করে ধরে রাখুন
- Reboot to safe mode লেখাযুক্ত একটি পপ-আপ দেখতে পাবেন
- প্রদর্শিত নির্দেশনা পড়ার পর Ok তে ট্যাপ করুন
- এরপর আপনার ফোন সেফ মোডে চালু হবে
দ্বিতীয় নিয়ম
উল্লেখিত উপায় আপনার ফোনে সেফ মোড চালু করা না গেলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এবার জানি চলুন সেফ মোড চালু করার একটি বিকল্প পদ্ধতি সম্পর্কে।
- পাওয়ার বাটন প্রেস করে ধরে রাখুন
- Power Off অপশনে ট্যাপ করে ডিভাইস বন্ধ করুন
- এবার ফোনে লোগো না দেখা পর্যন্ত পাওয়ার বাটন প্রেস করে ধরে রাখুন
- লোগো স্ক্রিনে দেখার পর ভলিউম ডাউন বাটন প্রেস করে ধরে রাখুন
- ডিভাইস পুনরায় চালু হওয়া পর্যন্ত বাটন প্রেস করে রাখুন
- এবার ডিভাইস সেফ মোডে রিস্টার্ট হবে
উল্লেখ্য যে ডিভাইস সেফ মোডে চালু হওয়ার পর “Safe Mode” লেখা স্ক্রিনে ওভারলে হিসেবে দেখতে পাবেন।
সেফ মোড কিভাবে বন্ধ করতে হয়
সেফ মোড চালু করা কিছুটা কঠিন হলেও সেফ মোড বন্ধ করা কিন্তু বেশ সহজ। প্রথমে পাওয়ার বাটন প্রেস করে ধরে রাখুন। এবার Restart অপশন সিলেক্ট করুন। ব্যাস! আপনার ফোনে এবার সেফ মোড বন্ধ হয়ে যাবে ও ফোন সাধারণভাবে চালু হবে।
সেফ মোড ব্যবহারের নিয়ম
সেফ মোডে থার্ড পার্টি অ্যাপস ও গেমস ডিসেবল হয়ে গেলেও ডিফল্ট অ্যাপস ব্যবহার করে কল করা বা মেসেজ পাঠানো যায়। ব্রাউজার এর মত প্রি-ইন্সটলড অ্যাপগুলো সেফ মোডে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া আপনার গ্যালারিতে থাকা ছবি বা ভিডিও সেফ মোডে চেক করতে পারবেন।
সেফ মোডের মূল উদ্দেশ্য হলো কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে তা সমাধান করা। সেফ মোডে যদি আপনার ফোন কোনো সমস্যা ছাড়া চলে তবে হতে পারে থার্ড পার্টি কোনো অ্যাপের কারণে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। থার্ড পার্টি অ্যাপ দ্বারা ফোনে সমস্যা হচ্ছে এটি বুঝা গেলেও নির্দিষ্ট কোন অ্যাপ এই সমস্যা করছে তা জানা যায়না। এইক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান হলো সন্দেহজনক অ্যাপগুলো একে একে আনইন্সটল করে দেখা।
সেফ মোডেও যদি আপনার ফোনের কোনো সমস্যা দূর না হয়, তবে তা অপারেটিং সিস্টেম বা হার্ডওয়্যার সম্পর্কিত কোনো সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করা যেতে পারে বা নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যেতে পারেন।
সেফ মোড সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্নোত্তর
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে সেফ মোড সম্পর্কে তো অনেক তথ্য জানা গেলো। এবার চলুন কিছু সাধারণ প্রশ্ন জেনে নেওয়া যাক সেফ মোড সম্পর্কে।
সেফ মোড এর উদ্দেশ্য হলো ডিভাইস ক্র্যাশ করা বা দূর্বল পারফরম্যান্স প্রদান করলে তার পেছনের কারণ খুঁজে বের করে তার সমাধানে সাহায্য করা। এটিকে অনেকটা টেম্পরারি ফ্যাক্টরি রিসেট বলা যেতে পারে।
ফোন সেফ মোডে চালু করার পর ফোন কেনার সময় শুধুমাত্র যেসব অ্যাপ ছিলো অর্থাৎ প্রি-ইন্সটলড অ্যাপ ছাড়া অন্য কোনো অ্যাপ থাকেনা। প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা কিংবা সাইডলোড করা কোনো থার্ড পার্টি অ্যাপ সেফ মোডে ব্যবহার করতে পারবেন না।
অনেকের প্রশ্ন থাকে যে সেফ মোডে ফোনের কোনো ফাইল ডিলিট হয়ে যায় কিনা। এই প্রশ্নের উত্তর হলো না, সেফ মোডে ফোনের কোনো ফাইল বা অ্যাপ ডিলিট হয়ে যায়না। সেফ মোড মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে ব্যবহৃত হয়। সেফ মোড চালু থাকলে কোনো ধরনের অ্যাপ ইন্সটল করা যায়না।
উল্লেখিত কোনো উপায়ে যদি আপনার ফোনে সেফ মোড ওপেন করা না যায়, তাহলে ফ্যাক্টরি রিসেট এর মাধ্যমে ফোনের সকল ডাটা মুছে ফেলে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন। অবশ্যই ফোন রিসেট করার আগে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এর ব্যাকাপ নিয়ে রাখবেন।