বর্তমানে স্মার্টফোনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এর সাউন্ড কোয়ালিটি। ভালো সাউন্ড লোয়ালিটি স্মার্টফোনকে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য একটু হলেও যথেষ্ঠ। আগে স্মার্টফোন বা মোবাইল কেনার আগে স্পিকার বা গান বাজিয়ে চেক করে কেনার একটা ক্রেজ থাকলেও, এখন মানুষ স্পিকার তথা ফোনের সাউন্ড কোয়ালিটিকে অত নজরে আনে না। বেশিরভাগ মানুষই এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের কেনার ক্ষেত্রে কেবল র্যাম ( Ram), প্রোসেসর আর ক্যামেরা নিয়েই ব্যস্ত। আজ কথা বলব এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের স্পিকার এর সাউন্ড কোয়ালিটি বাড়ানো নিয়ে। আপনার ফোনে কি সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো? না আপনি একে আরও বাড়িয়ে নিতে পারবেন, সবই জানবেন এই আর্টিকেলটি পড়ে।
স্মার্টফোনে ভালো র্যাম, প্রোসেসর থাকলেও, সেই ফোনের সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো বা মনের মত নাও হতে পারে। আবার স্পিকার এর খারাপ প্লেসমেন্ট এর জন্যও সাউন্ড কোয়ালিটি হয় খারাপ। চলুন তাহলে জানি কি কি ভাবে আপনার প্রিয় এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের সাউন্ড কোয়ালিটি বাড়াতে পারবেনঃ
ভালো মিউজিক প্লেয়ার
আপনি যদি মিউজিক লাভার হন এবং আপনার যদি অডিও কোয়ালিটি ভালো দরকার হয়,তাহলে কিছু ৩য় পক্ষ মিউজিক অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করে এই সমস্যা দূর করতে পারেন। এক্ষেত্রে Poweramp,BlackPlayer এর মত মিউজিক প্লেয়ার ব্যবহার করতে পারেন। Poweramp যেহেতু পেইড, তাই এর বিকল্প হিসেবে BlackPlayer ব্যবহার করা যেতে পারে। Poweramp এবং Blackplayer এর মত অ্যাপলিকেশনের ভেতরকার Equalizer সাউন্ড এর কোয়ালিটিকে অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনে থাকা ডিফল্ট Music App এবং Audio Equalizer দিয়ে হয়ত এরকম Enhancement করা যায় না।
রুট করে
আপনার এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন যদি রুটেড হয়, অথবা অডিও কোয়ালিটি ভালো করার জন্য আপনি যদি আপনার ফোন রুট করতে চান, তবে কিছু অ্যাপসকে পারমিশন দিতে পারেন আপনার সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো করার স্বার্থে। এর ভেতর একটি হল, Viper’s Audio এর তৈরি Viper4Android। V4A তে পাওয়া যাবে HTC BoomSound, Dolby Audio এর মত হাই-এন্ড Audio Equalizer। এটি ব্যবহার করে সহজেই আপনার ফোনের অডিও কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
AudioFX,Dolbi Atmos রুটেড ডিভাইস এর জন্য বিকল্প হলেও এগুলোর চাইতে V4A তুলনামূলক ভালো। তো রুটেড ডিভাইসে অডিও কোয়ালিটি ভালো করতে Viper4Android ব্যবহার করতে পারেন।
হেডফোন এর ব্যবহার
আপনি কি এখনও আপনার ফোনের বাক্সের সাথে আসা হেডফোন ব্যবহার করছেন? আর ভাবছেন, আপনার ফোনের বেস্ট অডিও কোয়ালিটি পাওয়ার জন্য এর বিকল্প নেই। তাহলে আপনি ভুল। ফোনের সাথে যে হেডফোনটি আপনি পাবেন তা আপনার ডিভাইস এর সাথে যেনো কোনরকম ভাবে মানানসই এরকম লো স্পেসিফিকেশনে বানানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানি বাক্সে থাকা ডিফল্ট হেডফোনে কোন গুরুত্ব দেয় না। শাওমি তো ফোনের সাথে কোন হেডফোনই দেয় না। তাই অনেক ক্ষেত্রে এসব ডিফল্ট হেডফোনে আপনি তেমন অডিও এক্সপেরিয়েন্স পেতে নাও পারেন। এক্ষেত্রে বাজার থেকে একটি ভালো ব্র্যান্ডের কোয়ালিটি সম্পন্ন হেডফোন কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ভালো হেডফোন ব্র্যান্ডগুলোর ভেতর এসবের হেডফোন কিনতে পারেনঃ
- একেজি
- স্কালক্যান্ডি
- শাওমি
- সনি ইত্যাদি।
নতুন হেডফোন কিনে একটি কাজ করবেন, সেটা হচ্ছে হেডফোন বার্ন। আপনি একটি নতুন হেডফোন কিনে এতে বিভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সীর গান টানা ৩-৪ ঘন্টা বাজাবেন। এক্ষেত্রে লং টাইম ইউজে আপনার হেডফোন স্মুথ এবং কোয়ালিটি সাউন্ড প্রোভাইড করার ক্ষমতা অর্জন করবে।নতুন বল পয়েন্ট কলম অাপনি প্রথমবার খোলার পর কাগজে কিছুক্ষন ঘষলে যে, কলমটা স্মুথ হয় – ব্যাপারটা ঠিক সেরকম। গুগল প্লে স্টোর থেকে ইন-বাউন্ড হেডফোন অ্যাপের ব্যবহারে হেডফোন বার্ন এর কাজ সমাধা করতে পারবেন।
অডিও অ্যাম্প্লিফায়ার
অনেকক্ষেত্রে আপনি লংটাইম বাইক রাইডার হলে, এসব ভালো হেডফোন থেকে বের হওয়া সাউন্ডও ঠিকমত আপনি নাও শুনতে পেতে পারেন। যদিও বাইক চালানের সময় বা অন্যান্য যানবাহন চালানের সময় হেডফোন ব্যবহার উচিত নয়, তবে আপনার যদি একান্ত হয়েই থাকে,সেক্ষেত্রে স্মার্টফোনের জন্য এক্সটারনাল অডিও অ্যাম্প্লিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
ফোন সেটিংস
ফোন সেটিংস বা ডিভাইস সেটিংসে কিছুটা তারতম্য করে নিয়ে সাউন্ড অনেকটা তারতম্য করা যায়,তবে এটা বেসিক । এইজন্য আগে দেখে নেবেন আপনার ফোনের মেইন স্পিকার এর ওখানে ধুলাবালি বা অন্যকিছু জমা হয়ে আছে কিনা, এর জন্য অনেকটা সাউন্ড ব্লক হয়ে যায়, আর আপনার মনে হয় সাউন্ড কোয়ালিটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। যদি ময়লা না থাকে, তাহলে আপনার স্মার্টফেনটি আনলক করুন এবং সচরাচর ডানসাইডে থাকা ভলিউম আপ বাটনটি প্রেস করে ভলিউম সর্বোচ্চ করে নিন। তারপর “কুইক নেভিগেশন পুল ডাউন বার” বা অ্যাপস ড্রয়ার থেকে Settings এ প্রবেশ করুন। সেখানে Sound & Notifications বা Audio Profiles থেকে কলের রিং টোন,মিউজিক,এলার্ম ইত্যাদির জন্য স্পিকার এর ভলিউম এডজাস্ট করুন।দেখা যায় যে,এখানে অনেক সময় রিং টোন ভলিউম কম করা থাকে, সেক্ষেত্রে এখান থেকে সে ভলিউমটা বাড়িয়ে নিলে, রিং টোন আগের থেকে আরও জোরে শোনা যাবে।
স্মার্টফোনের অডিও কোয়ালিটি নির্ভর করে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর ওপর।আর এন্ড্রয়েড ফোনের অডিও কোয়ালিটি খারাপ হওয়ার পেছনে হার্ডওয়্যার অনেকাংশে দ্বায়ী। একটি ভালো রেপুটেডেট ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে অডিও বা সাউন্ড সিস্টেমের জন্য উন্নত মানের চিপ থাকে। তদুপরি একটি কমদামি স্মার্টফোনে অতটা ভালো হার্ডওয়্যার থাকে না। সেক্ষেত্রে আপনি উপরের পদ্ধতি ব্যবহার করে সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ভালো অডিও তথা সাউন্ড কোয়ালিটি উপভোগ করতে পারেন।