Technology

ওয়াইফাই (WiFi) সম্পর্কে বিস্তারিত | কীভাবে ওয়াইফাই নিরাপদ রাখবেন?

কোন রাউটারটি আপনার কেনা প্রয়োজন?

ওয়াইফাই নিয়ে যখনই বিস্তারিত জানার কথা আসে তখনই ওয়াইফাই এ, বি, জি, এন, এসি, ২.৪ গিগাহার্জ, ৫ গিগাহার্জ, মাল্টি চ্যানেল ইত্যাদি টার্ম এসে আমাদের কনফিউজ করে দেয়। আজকের এই পোস্ট মূলত সকল কনফিউশন দূর করার জন্যই লিখিত। এই রেডিও প্রযুক্তির সম্পর্কে আমরা আজ বিস্তারিত জানবো এবং পাশাপাশি সুরক্ষিত থাকার কিছু উপায় সম্পর্কেও অবগত হবো।

এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

ওয়াইফাই (WiFi)

দেখুন এটি কোন নতুন প্রযুক্তি নয়, বা এমনটা নয় যে এটি এইত কাল আবিষ্কার হলো। প্রথমবার এটি ১৯৯৭ সালে উন্নতিকরন করা হয়েছিলো এবং আই ই ই ই (IEEE) নামক একটি প্রতিষ্ঠান এটিকে উন্নতিকরণ করেছিলো। এর প্রথম স্ট্যান্ডার্ড ১৯৯৭ সালে উন্নতি পায় এবং এর নাম দেওয়া হয় ৮০২.১১ ওয়াইফাই। এই নামটি এরকম রাখার কারন এর আলাদা আলদা প্রোটোকল আছে আলাদা আলদা যোগাযোগের জন্য। সেই সময়ে এই বেতার প্রযুক্তিটির স্পীড ছিল প্রত্যেক সেকেন্ডে ২ মেগাবিটস। যদিও এর গতি প্রথমের দিকে অনেক কম ছিল তারপরও সেই সময় হিসেবে অনেক বেশি কোন ব্যাপার ছিল। তারপর ১৯৯৯ সালের দিকে তারা এর দুইটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করে। একটি হলো ৮০২.১১ এ এবং আরেকটি ৮০২.১১ বি।

এ স্ট্যান্ডার্ড টি ছিল কমার্শিয়াল ব্যবহার করার জন্য এবং বি স্ট্যান্ডার্ড টি ছিল ঘর গৃহস্থালির ব্যাবহারের জন্য। এ স্ট্যান্ডার্ড টি কাজ করতো ৫ গিগাহার্জ ফিকুএন্সির উপরে এবং এর স্পীড ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৫৪ মেগাবিটস। আর স্ট্যান্ডার্ড বি কাজ করতো ২.৪ গিগাহার্জ এর উপরে এবং এর স্পীড ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১১ মেগাবিটস।

২.৪ গিগাহার্জ বা ৫ গিগাহার্জ কি?

আমরা বেতারের মাধ্যমে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গুলো সম্পূর্ণ করে থাকি যেমন আপনার মোবাইল ফোন, ব্লু-টুথ, ওয়াইফাই ইত্যাদি এরা প্রত্যেকে বেতার তরঙ্গে কাজ করে। এই বেতার তরঙ্গের অর্থাৎ যেটা আমরা ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিভ ওয়েভস বলে থাকি এতে অনেক আলদা আলদা ব্যান্ড থাকে। এবং প্রত্যেকটি ব্যান্ডে আলদা আলদা পাওয়ার এবং আলদা আলদা রেঞ্জ দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু ব্যান্ডকে আমরা এই ধরনের কাজের জন্য বরাদ্দ করে রেখেছি। যেমন রিমোট কন্ট্রোল কার, মাইক্রোওয়েভ অভেন, ব্লু-টুথ ইত্যাদি। তো এভাবেই দুইটি ব্যান্ড অনেক কমন ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, একটি হলো ২.৪ গিগাহার্জ এবং আরেকটি ৫ গিগাহার্জ। তো ওয়াইফাই, ব্লু-টুথ ইত্যাদি সব এই স্পীডে কাজ করে।

এখন একটি কথা আপনার জেনে নেওয়া প্রয়োজন সেটি হলো যতো বেশি ফ্রিকুএন্সি হবে স্পীডও ততো বেশি হবে। কিন্তু সিগন্যাল রেঞ্জ করে যাবে। কেনোনা যতো হাই পাওয়ারের সিগন্যাল হবে, ততো বেশি সেই সিগনালে লসেস হবে এবং সিগন্যাল বেশি দূর পর্যন্ত পৌছাতে পারবে না। আবার যতো কম ফ্রিকুএন্সি হবে স্পীডও ততো কম হবে কিন্তু সিগন্যাল অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হবে। তাই ৫ গিগাহার্জ এর এ স্ট্যান্ডার্ড এ অনেক বেশি স্পীড ছিল কিন্তু রেঞ্জ ছিল অনেক কম এবং বি স্ট্যান্ডার্ড চলতো ২.৪ গিগাহার্জ এর উপরে তাই এর স্পীড কম ছিল কিন্তু এই সিগন্যাল অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব ছিল।

৮০২.১১ জি, ৮০২.১১ এন, ৮০২.১১ এসি

এর পরে ২০০৩ সালে আরেকটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড উন্নতিকরন করা হয় এবং নাম দেওয়া হয় ৮০২.১১ জি। এতে স্ট্যান্ডার্ড এ এবং স্ট্যান্ডার্ড বি এর সকল সুবিধা একসাথে মিশিয়ে দেয়। এটি ২.৪ গিগাহার্জে কাজ করে কিন্তু প্রতি সেকেন্ডে ৫৪ মেগাবিটস স্পীড দিতে পারতো। ২.৪ গিগাহার্জে কাজ করার জন্য এটির সিগন্যাল অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব এবং এটিতে স্পীডও প্রতি সেকেন্ডে ৫৪ মেগাবিটস পাওয়া যায়। এই সুবিধাটির জন্য এই স্ট্যান্ডার্ডটি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো। এবং আজ থেকে ১০-১২ বছর পেছনে যতো গুলো ডিভাইজ দেখা যেতো সেখানে ৮০২.১১ জি ব্যবহার করা হতো।

২০০৯ সালে আবার একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড উন্নতিকরন করা হয় এবং নাম দেওয়া হয় ৮০২.১১ এন। এতে একসাথে দুইটি ব্যান্ডস ছিল। এবং একসাথে এটি ২.৪ গিগাহার্জ এবং ৫ গিগাহার্জ ফ্রিকুএন্সিতে আলদা আলদা ভাবে কাজ করতে সক্ষম ছিল। এই দুই ব্যান্ডের স্পীড প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ মেগাবিটস পর্যন্ত হতে পারতো। এবং একই সাথে অনেক ভালো রেঞ্জও পাওয়া যেতো। যদিও ৫ গিগাহার্জ ফ্রিকুএন্সিতে একটু কম রেঞ্জ পাওয়া যেতো কিন্তু ২.৪ গিগাহার্জে অনেক ভালো রেঞ্জ পাওয়া যেতো। এবং এটি অনেক ভালো একটি স্ট্যান্ডার্ড ছিল, তার কারণে আজও আমরা এই স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করে আসছি। আজ পর্যন্ত ৯০% ডিভাইজে আমরা এই স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করে আসছি।

এর পরে কেবল ৩ বছর আগে আরেকটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড আবিষ্কার করা হয় এবং এটির নাম দেওয়া হয় ৮০২.১১ এসি। আরেকটি কথা বলে রাখি এই যে জি, এন, এসি ইত্যাদি নাম শুনছেন এগুলোর কিন্তু কোন অর্থ নেই। অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন যে এগুলো কোন কিছুর সংক্ষিপ্ত রুপ। আসলে সেটা কিন্তু একদমই নয়। এগুলো শুধু মাত্র একেকটা নাম, ব্যাস। এখন ৮০২.১১ এসি, এটি ৫ গিগাহার্জ ফিকুএন্সিতে কাজ করে এবং এখনো পর্যন্ত এর সর্বউচ্চ স্পীড প্রতি সেকেন্ডে ১.৩ গিগাবিটস। তত্ত্ব অনুসারে এবং সামনের দিনে এটি প্রতি সেকেন্ডে ৬.৯ গিগাবিটস স্পীড দিতে সক্ষম হবে। কিন্তু এর রেঞ্জ কম হবে, কেনোনা এটি ৫ গিগাহার্জ ফ্রিকুএন্সিতে কাজ করে।

ওয়াইফাই স্পীড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

এর স্পীড সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে অনেকের মনে অনেক দ্বন্দ্ব বেধে আছে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আপনারা শোনেন যে, ৬০০ মেগাবিটস পার সেকেন্ড বা ১.৩ গিগাবিটস পার সেকেন্ড, ইত্যাদি। আপনারা হয়তো জানেন যে, কম্পিউটার এর মধ্যে ওয়্যারলেস এর সাহায্যে আমরা যে ডাটা গুলো আদান প্রদান করে থাকি তা বিট এর রূপে হয়ে থাকে। বিটস মানে জিরো এবং ওয়ান। তো কোন ডাটা স্ট্রিমে যদি 0001111 ইত্যাদি ক্রম থাকে তবে এতে প্রত্যেকটি সংখ্যা একটি করে বিট হয়ে থাকে। এই অবস্থায় যদি বলা হয় কোন কানেকশান এর স্পীড প্রতি সেকেন্ডে ৩০০ মেগাবিটস তবে এর অর্থ হলো ঐ স্ট্যান্ডার্ডটি প্রতি সেকেন্ডে ৩০০ মিলিয়ন বিটস আদান, প্রদান বা প্রসেস করতে পারবে। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে যতো বেশি বিটস আদান প্রদান করা সম্ভব হবে আপনি ততো বেশি স্পীড দেখতে পাবেন।

এখন মনে করুন আপনার রুমে একটি ১০ মেগাবিটস পার সেকেন্ড ইন্টারনেট এর কানেকশন রয়েছে। এবং আপনি একটি ১.৩ গিগাবিটস পার সেকেন্ড এর রাউটার কিনে ফেললেন। তো ঐ রাউটার লাগানোর ফলে আপনার ইন্টারনেট স্পীড কখনোয় বৃদ্ধি পাবে না। কিন্তু যদি আপনি একসাথে অনেক গুলো ডিভাইজ ব্যবহার করেন কিংবা আপনার ঘরের সাইজ যদি অনেক বড় হয় তবে সেখানে আপনি কিছু লাভবান হতে পারবেন। আবার যদি আপনার ডিভাইজ গুলোর মধ্যে আপনি কোন ফাইল শেয়ার করতে চান তবে অনেক দ্রুত ফাইল আদান প্রদান করতে পারবেন। কিন্তু ফাইল আদান প্রদান করার সময়ও যে ১.৩ গিগাবিটস পার সেকেন্ড স্পীড পাবেন তা কিন্তু নয়। আপনার ডিভাইজ গুলো যদি আবার ১.৩ গিগাবিটস পার সেকেন্ড রাইট অ্যান্ড রিড স্পীড সমর্থন করে তবেই আপনি আপনার রাউটারের সর্বউচ্চ গতি পেতে পারেন। কিন্তু একটি বেশি স্পীড ওয়ালা রাউটার লাগিয়ে আপনি যদি ভাবেন যে আপনার ইন্টারনেট স্পীডও বেড়ে যাবে তাহলে অবশ্যই আপনি ভুল ভাবছেন।

কোন রাউটারটি আপনার কেনা প্রয়োজন?

আমার মতামত অনুসারে আজকের দিনে আপনি যদি একটি ওয়াইফাই ৮০২.১১ এসি রাউটার কিনতে পারেন তবে আপনার জন্য অনেক সুবিধার হবে। কারন এসি রাউটার গুলোতে ডুয়াল ব্যান্ড থাকে যার মাধ্যমে আপনি আপনার কানেকশানের কর্মদক্ষতা বাড়াতে পারেন। আজকের দিনে ২.৪ নেটওয়ার্ক অনেক কমন একটি নেটওয়ার্ক, প্রায় প্রত্যেকে এই ফিকুএন্সি ব্যবহার করে। এই অবস্থায় আপনি যদি কোন ভিড়ভার এলাকায় অবস্থান করেন তবে সার্চ করলে সবসময় ৩০-৪০ টি সিগন্যাল দেখতে পাবেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগ সিগন্যালই হয়তো ২.৪ গিগাহার্জ। এখানে আপনি যদি ৫ গিগাহার্জ ব্যবহার করেন তবে আপনার সিগন্যাল কম বাধাগ্রস্থ হবে এবং আপনি খুব ভালো স্পীড উপভোগ করতে পারবেন।

আবার মনে করুন আপনার ঘরে ১০ টি আলদা আলদা ডিভাইজ রয়েছে। এর ভেতর কিছু ডিভাইজ ২.৪ গিগাহার্জকে সমর্থন করে এবং কিছু ডুয়াল ব্যান্ড আবার কিছু এসি সমর্থন করে। তো এই অবস্থায় আপনি এসি ডিভাইজে এসি সিগন্যাল ব্যবহার করুন, ২.৪ ওয়ালা ডিভাইজে ২.৪ ব্যবহার করুন এবং ৫ গিগাহার্জ ডিভাইজে ৫ গিগাহার্জ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন। এর ফলে আপনার রাউটার সকল ডিভাইজ গুলোকে একই করমদক্ষতায় নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হবে। তাছাড়া কি হবে দেখুন, মনে করুন আপনার কাছে ৫ টি ডিভাইজ আছে এবং ৫ টি তেই ২.৪ গিগাহার্জ ব্যবহার করলেন তবে আপনার রাউটারটি কানেকশান স্থাপন করার জন্য একেক করে একেকটি ডিভাইজের কাছে যাবে ফলে নেটওয়ার্ক স্পীড অনেক দুর্বল হয়ে পড়বে।

তো এজন্যই আমি বলবো অবশ্যই একটি ডুয়াল ব্যান্ড অথবা এসি রাউটার কেনা উচিৎ হবে আপনার জন্য। যেকোনো সস্তা রাউটার কিনতে পারেন আপনি, আমি বলবো না যে ২৫ হাজার টাকার রাউটার কিনতে হবে আপনাকে। আজকাল বাজারে ২-২.৫ হাজার টাকার ভেতর একটি ভালো রাউটার কিনতে পাওয়া যায়, তো আপনি সেটি কিনে ফেলুন, যাতে সামনের দিনে আপনার কোন সমস্যা না হয়।

এখানে আরেকটি কথা স্মরণ রাখা খুবই প্রয়োজনীয়। মনে করুন এখনো আপনার কাছে এমন একটি ডিভাইজ আছে যেটি স্ট্যান্ডার্ড জি বা স্ট্যান্ডার্ড বি তে কাজ করে, তবে ঐ ডিভাইজটিকে ইথারনেট ক্যাবল বা ল্যান ক্যাবল ব্যবহার করে সংযোগ প্রদান করুন। কারন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এ যদি কোন লো স্ট্যান্ডার্ড ডিভাইজ থাকে তবে ঐ ডিভাইজটি পুরো নেটওয়ার্ক এর স্পীড খারাপ করে দেয়।

ওয়াইফাই নিরাপত্তা সম্পর্কে বিস্তারিত

ওয়াইফাই নিরাপত্তা ভঙ্গ হওয়া আজকাল আর নতুন কোন বিষয় নয়। আমার মতে এতো দিনে হয়তো আপনিও ১০-১২ টি পোস্ট পড়ে ফেলেছেন ইন্টারনেটে যে কীভাবে এর নিরাপত্তা স্তর নষ্ট করে বা পাসওয়ার্ড চুরি করে এটি ব্যবহার করা যায়। তো চলুন এবার এর নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা শুরু করা যাক।

সর্বপ্রথম যে সিকিউরিটি সিস্টেমটি চালু করা হয়েছিলো তার নাম ছিল ডবলু-ই-পি (WEP) অর্থাৎ (Wired Equivalent Privacy)। কিন্তু এই সিকিউরিটি সিস্টেমটির ইনক্রিপশন ছিল মাত্র ৬৪ বিটের। [ইনক্রিপশন কি এবং কীভাবে কাজ করে জানতে অবশ্যই এই পোস্ট টি পড়ুন] এবং এই কথাটি হলো আজ থেকে ১৪-১৫ বছর আগের। যাই হোক, এই ডবলু-ই-পি সিকিউরিটি সিস্টেমটি নষ্ট করা অনেক সহজ একটি ব্যাপার ছিল। একটি সাধারন কম্পিউটারে ব্রুট ফোর্স অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে এই সিকিউরিটি সিস্টেমটি অনেক সহজেই নষ্ট করা যেতো। ব্রুট ফোর্স অ্যালগোরিদম হলো এমন একটি সিস্টেম যেখানে সকল সম্ভাব্য পাসওয়ার্ডকে বারবার ব্যবহার করে কোন সিস্টেমে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়।

২০০৬ সালে এর নতুন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমটি চালু করা হয়েছিলো এবং এর নাম ছিল ডবলু-পি-এ (WPA) (ওয়াইফাই প্রটেক্টেড অ্যাক্সেস)। তো এটি ডবলু-ই-পি এর তুলনায় কিছু বেশি শক্তিশালী ছিল। কিন্তু তখন সকল রাউটার গুলোতে আপডেট প্রদান করা হয়েছিলো যে তারা ডবলু-ই-পি থেকে যেন ডবলু পি এ তে চলে যায়। এই আপডেট দেওয়ার সময় অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং ডবলু-পি-এ সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ডও নষ্ট করা তেমন কঠিন ছিল না।

এর পরে আরেকটি নতুন সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে আসা হয়, যার নাম ডবলু-পি-এ ২ (এ-ই-এস) (WPA 2 AES)। এটি ডবলু-পি-এ এর একটি দ্বিতীয় সংস্করণ। এবং এটি কাজ করে এ-ই-এস এর উপর। এ-ই-এস মানে অ্যাডভান্সড ইনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড। এটি এমন একটি ইনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড যেটাকে যদি একটি সর্বাধুনিক কম্পিউটার দ্বারা নষ্ট করার চেষ্টা করা হয় ব্রুট ফোর্স অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে তবে এতে প্রায় কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে।

তো পিছনের ২-৩ বছর আগে যদি আপনি একটি রাউটার কিনে থাকেন তবে অবশ্যই সেখানে ডবলু-পি-এ ২ (এ-ই-এস) অপশন আছে পাসওয়ার্ড এর জন্য। এবং আপনি যদি এখনো অন্য কোন সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করে থাকেন তবে অবশ্যই সেটি সরিয়ে ডবলু-পি-এ ২ (এ-ই-এস) চালু করে নিন। এতে মনে করুন আপনার সিকিউরিটি নষ্ট করা এক প্রকারের অসম্ভব।

আরেকটি কথা, মনে করুন আপনি অন্য কারো ওয়াইফাই ব্যবহার করছেন বা কোন ফ্রী নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন তবে এই অবস্থায় শুধু এমন কোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন যার উপর আপনি পুরোপুরি ভরশা করতে পারবেন। যেমন ধরুন সেটি যদি কোন বড় কোম্পানির কানেকশন হয় যেমন গুগল তো তবেই সেটি ব্যবহার করুন। কেনোনা আপনি যখন কোন নেটওয়ার্ক এর সাথে আপনার কোন ডিভাইজ কে কানেক্ট করবেন তখন ঐ নেটওয়ার্ক এর মালিক আপনার উপর অর্থাৎ আপনার নেটওয়ার্ক কর্মকাণ্ডের উপর পুরো নজর রাখতে পারে। এতে আপনার নিরাপত্তাহানী হতে পারে। তাই কোন নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযুক্ত হওয়ার আগে অবশ্যই ভেবে দেখুন। আর যদি এমনটা হয় যে আপনাকে নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করতেই হবে যদিও আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না, তবে এই অবস্থায় ভিপিএন ব্যবহার করা উচিৎ হবে।

শেষ কথা

লিখতে লিখতে অনেক বেশিই লিখে ফেলেছি এবং পুরো বিষয়টিকে অনেক লম্বা করে ফেলেছি। তবে আশা করছি আপনি পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে পড়বেন না। কারন পোস্ট টির আনাচে কানাচে অনেক অজানা তথ্য লুকিয়ে রয়েছে। সত্যি বলতে আমি নিজেও এই পোস্ট টি গবেষণা করার সময় এমন কিছু বিষয় জেনেছি যা আগে জানতাম না। যাই হোক, আলোচনা আর লম্বা করতে চাচ্ছি না। আমার কাজ ছিল আপনাদের সব কিছু জানিয়ে দেয়ার তাই সব জানিয়ে দিলাম এবং আপনাদের কাজ হলো পোস্ট টি বেশি বেশি করে শেয়ার করা এবং কমেন্ট করা তাই সেটি অবশ্যই করতে ভুলবেন না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button