তথ্য প্রযুক্তি

জেনে নিন কম্পিউটারে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার কোড সম্পর্কে।

কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের কোড ব্যবহার করা হয়। নিচে কম্পিউটারের বিভিন্ন কোড সম্পর্কে আলোচনা করা হলো–

১. অকটাল কোড (Octal Code) : ৩ বিট বিশিষ্ট বাইনারি কোডকে অকটাল কোড বলা হয়। কম্পিউটার এবং মাইক্রোপ্রসেসরের সাথে সংযোগের জন্য অকটাল কোড ব্যবহার করা হয়।
২. হেক্সাডেসিম্যাল কোড (Hexadecimal Code) : হেক্সাডেসিম্যাল কোড হলো ৪ বিটের বাইনারি কোড। অকটাল কোডের মতো এ কোডও কম্পিউটার এবং মাইক্রোপ্রসেসরের সাথে সংযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ : হেক্সাডেসিম্যাল কোড হলো (৭৭)১৬ = (০১১১০১১১)
৩. বিসিডি কোড (BCD Code) : ‘বিসিডি’ (BCD) শব্দটির পূর্ণরূপ হলো Binary Coded Decimal। দশমিক সংখ্যার প্রতিটি অঙ্ককে সমতুল্য বাইনারি সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করাকে বিসিডি কোড বলে। দশমিক পদ্ধতির সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় প্রকাশের জন্য এ কোড ব্যবহার করা হয়। ০ থেকে ৯ এ দশটি অঙ্কের প্রতিটিকে নির্দেশের জন্য ৪টি বাইনারি অঙ্ক প্রয়োজন। ৪টি বিট দ্বারা  অর্থাৎ ১৬টি ভিন্ন অবস্থা নির্দেশ করা যায়। তাই ১৬টি অবস্থা ব্যবহার করে কয়েক প্রকার বিসিডি কোড তৈরি করা সম্ভব।
উদাহরণ : BCD ৮৪২১ কোড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং বহুল ব্যবহৃত কোড।
৪. আলফা নিউমেরিক কোড (Alphanumeric Code) : অক্ষর ( a – z, A – Z), অঙ্ক (০ – ৯) এবং বিভিন্ন গাণিতিক চিহ্নসহ (+, -, =, *, / ইত্যাদি) আরও কতকগুলো বিশেষ চিহ্নের (!, ?, @, #, $, %, ^ ইত্যাদি) জন্য ব্যবহৃত কোডকে আলফা নিউমেরিক কোড বলা হয়। ০ থেকে ৯ পর্যন্ত অঙ্কগুলো নির্দিষ্ট করা ছাড়াও কম্পিউটারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগানোর প্রয়াসে অক্ষর ও অন্যান্য চিহ্নের প্রয়োজন হয়। এ কারণেই আলফা নিউমেরিক কোডের উদ্ভব হয়েছে।
উদাহরণ : ASCII–7 একটি আলফা নিউমেরিক কোড। এ কোডের মাধ্যমে  বা ১২৮টি চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়। অনুরুপ ASCII–8 ও একটি আলফা নিউমেরিক কোড। এ কোডের মাধ্যমে  বা ২৫৬ টি চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়।
৫. আসকি কোড (Ascii Code) : আসকি কোডের পূর্ণরূপ হলো American Standard Code for Information Interchange। আসকি একটি বহুল প্রচলিত কোড। ASCI-7 ৭টি বিট নিয়ে গঠিত হয়, যার বামদিকের ৩টি বিটকে Zone এবং ডানদিকের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিট হিসেবে ধরা হয়। তবে একেবারে বামে একটি প্যারিটি বিট যোগ করে আসকিকে ASCII-8 ৮ বিট কোডে রূপান্তর করা হয়। মাইক্রোকম্পিউটারে এ কোডের ব্যাপক প্রচলন আছে।
উদাহরণ : ASCII-7 এবং ASCII-8 ইত্যাদি।
৬. ইবিসিডিআইসি কোড (EBCDIC Code) : ইবিসিডিআইসি (EBCDIC)-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Extended Binary Coded Decimal Information Code যার অর্থ দশমিক তথ্য কোডের বর্ধিত বাইনারি কোড। এটি একটি আট বিট কোড, তাই এর মাধ্যমে  = ২৫৬টি অঙ্ক, অক্ষর এবং চিহ্ন প্রকাশ করা যায়। ইবিসিডিআইসি (EBCDIC) কোডে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত অঙ্কের জন্য ১১১১, A থেকে Z পর্যন্ত বর্ণের জন্য ১১০০, ১১০১ ও ১১১০ এবং বিশেষ চিহ্নের জন্য ০১০০, ০১০১, ০১১০ ও ০১১১ জোন বিট (Zone Bit) হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ২৫৬টি বর্ণ, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্নকে এ পদ্ধতিতে কোড বলে কম্পিউটারে ব্যবহারের উপযোগী করা আছে। EBCDIC কোডটি সাধারণত IBM ও IBM সমতুল্য কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ : যদি ৩-কে EBCDIC কোডে প্রকাশ করতে হয় তাহলে প্রথমে ৩-এর জন্য বরাদ্দ জোন কোড (Zone Code) লিখে তার পরপরই ৩-এর সমতুল্য চার বিটের বাইনারি সংখ্যা লিখতে হবে। ৩-এর জোন কোড হলো ১১১১ এবং ৩-এর সমতুল্য চার বিটের বাইনারি সংখ্যা হলো ০০১১। অতএব, ৩-এর EBCDIC কোড হবে আট বিটের কোড ১১১১০০১১।
৭. ইউনিকোড (Unicode) : ১৯৯১ সালে Apple Computer Corporation এবং Xerox Corporation-এর যৌথ উদ্যোগে একদল প্রকৌশলী ইউনিকোড উদ্ভাবন করেন। বিশ্বের ছোটবড় সকল ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করার জন্য ইউনিকোড ব্যবহৃত হয়। ইউনিকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। এ কোডের মাধ্যমে ১৬ বা ৬৫,৫৩৬টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়। যেসব ভাষার জন্য ৮ বিট কোড অপর্যাপ্ত ছিল (যেমন- চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানিজ ইতাদি) সেসব ভাষার সকল চিহ্নকে ইউনিকোডের মাধ্যমে কোডভূক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button