Computer

কম্পিউটারের ইতিহাস- The History of Computer Part 04

বায়ােস BIOs 

বায়ােস’ শব্দটি ‘বেসিক ইনপুট আউটপুট সিস্টেম এর সংক্ষিপ্তরূপ। ১৯৯৯-এর এপ্রিলের ২৬ তারিখের কথা অনেকের মনে আছে। সেদিন চেরনােবিল ভাইরাস আক্রমণ করেছিল বায়ােসকে। বদলে দিয়েছিল তাতে লেখা নির্দেশগুলাে। ফলে সেটি অর্থহীন শব্দরাজি বা আবর্জনায় পরিণত হয়। কাজের সময় প্রয়ােজনীয় নির্দেশ খুজে না পেয়ে বিকল হয়ে যায় হাজার হাজার কম্পিউটার। বায়ােস যে কত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে তার নমুনা এ থেকেই পাওয়া যায়। বিশেষ উপায়ে এমনকি, ইন্টারনেট থেকে বায়ােস ফাইল সংগ্রহ করে অনেকের ফাইল মেরামত করতে হয়েছিল । বায়ােস কিছু ইনস্ট্রাকশন সেট বা নির্দেশের সমষ্টি। এটি রম’ বা ‘রিড ওনলি মেমােরি’র পর্যায়ভুক্ত। এতে আছে কিছু তথ্যও। কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সংযােগ দানের সঙ্গে সঙ্গে বায়োেসই প্রথম কাজ শুরু করে। এটি প্রথমে পরীক্ষা করে কম্পিউটারের সকল হার্ডওয়ার বা যন্ত্রাংশ। একে বলে পােস্ট বা পাওয়ার অন সেলফ টেস্ট। যন্ত্রাংশগুলাে ঠিক মতাে আছে কিনা বা কাজ করছে কিনা তাই এর মাধ্যমে দেখা হয়। এ পরীক্ষার নামে মেমােরি সেলফ টেস্ট। যত মেগাবাটি র্যাম আছে, দ্রুত তা পরীক্ষা ফলাফল মনিটরে প্রদর্শিত হতে থাকে। যাই হােম, এ কাজ শেষ হলে বায়ােসে দেখে এ (A) ড্রাইভে কোনাে বুটেবল ফ্লপি আছে কিনা। না থাকলে, বায়ােস হার্ড ডিস্কে অপারেটিং সিস্টেম খুঁজে বের করে এবং কম্পিউটার পরিচালনার ভার অপারেটিং সিস্টেমের উপর ছেড়ে দেয়। অপারেটিং সিস্টেমের উপর থাকলেও সফটওয়্যারের নির্দেশ অনুযায়ী বাহােস বিভিন্ন ইনপুট ও আউটপুট হার্ডওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে। এছাড়া প্রাগ এন্ড প্লে ও পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কাজগুলাে করে থাকে। বায়ােস বিশেষ বিশেষ সিপিইউ’র সাথে সংগতি রেখে তৈরি করা হয়। ফলে এক প্রসেসরের জন্য তৈরি বায়ােস অন্য প্রসেসরে চলে না। এ কারণে কম্পিউটার পরিচালনা সমস্যা বিরাজ করে। কোনাে কোনাে যন্ত্রাংশের নিজস্ব বায়ােসও থাকে। উইন্ডােজ বায়ােস রুটিনের অনেকগুলাে এড়িয়েও যেতে পারে। তার ফলে কম্পিউটার রিয়েল মােড়ে চালু হয়। ওই মােডে ডিভাইস ড্রাইভার বা যন্ত্র যথাযথভাবে সক্রিয় হয় না। হার্ডওয়্যার সমস্যা সমাধানের জন্য এ মােড়কে কাজে লাগানাে যায়। অন্যান্য সময়ে উইন্ডােজ প্রটেক্টেড মােড়ে চলে। বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের প্লাগ এন্ড প্লের সামর্থ্য বাড়ানাের জন্য বায়ােসের ধরণ বদলে যাচ্ছে। 

তা নতুন করে লিখতে হচ্ছে। বায়ােসের বিশেষ প্রকৃতির কারণে এটা কি হার্ডওয়ার নাকি সফটওয়ার এ নিয়ে বির্তক আছে। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের বিভাজন করা মাঝে মাঝে কঠিন হয়ে যায় । যেমন : কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে প্রসেসর নিজেই গাণিতিক কাজ করে। আবার অন্য সময় তা হয় সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণে । বায়ােসের সফটওয়্যার স্থায়ীভাবে হার্ডওয়্যারের মধ্যেই থাকে। এ দুটিকে পৃথকভাবে সম্ভব নয়। তাই এ ধরনের যন্ত্রাংশগুলােকে ‘ফার্মওয়ার’ও বলা হয়। এ কারণে সিপিইউও ফার্মওয়াররূপে গণ্য হয়ে থাকে। 

সফটওয়্যার

প্রত্যেকটি কম্পিউটারকে কাজের ক্ষমতা প্রদান করে সফটওয়্যার। সফটওয়ার ছাড়া কম্পিউটারটি তাৎপর্যহীন । সফটওয়্যার একটি প্রােগ্রাম বা কিছু নির্দেশের সমষ্টি । আমাদের সাথে কম্পিউটারের সংযােগ সাধন করে সফটওয়্যার। ইনপুট বা নির্দেশ দিয়ে ব্যবহারকারী এসব সফটওয়্যার থেকে প্রয়ােজন অনুসারে কাজ আদায় করতে পারে। সারকথা, সফটওয়্যার আছে বলেই কম্পিউটার আমাদের চাহিদা পূরণ করে। সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার কিছু যন্ত্রের সমাহার মাত্র। আর কিছু নয়। 

কম্পিউটারে প্রথম যুগে সফটওয়্যার বলতে কিছু ছিল না। এতে ভ্যাকুয়াম টিউবগুলােকে তারের সাহায্যে সংযুক্ত করা হতাে। ওই সংযােগই নির্ধারণ করতাে কম্পিউটার কি কাজ করবে। নতুন কাজের জন্য তারের সংযােগ খুলে নতুন করে লাগাতে হতাে। তখন সেটা পরিগণিত হতাে নতুন নির্দেশরূপে। পঞ্চাশের দশকে পাঞ্চড কার্ড ব্যবহার করে যে অবস্থার পরিবর্তন ঘটানাে হয় প্রােগ্রাম নির্দেশগুলাে তখন পাঞ্চড় কার্ডেই থাকতাে। দ্রুত গতির স্টোরেজ মাধ্যমগুলাে আসার পর সে অবস্থারও পরিবর্তন সাধিক হয়। সফটওয়্যার দু’ ধরনের। সিস্টেম সফটওয়্যার ও এপ্লিকেশন সফটওয়্যার। সিস্টেম সফটওয়ারকে সাধারণভাবে অপারেটিং সিস্টেমও বলে। তবে অপারেটিং সিস্টেম ছাড়াও ইউটিলিটি সফটওয়ার, ডাটা রিকভারি সফটওয়্যার ইত্যাদিও সিস্টেম সফটওয়্যারের আওতায় পড়ে। বিভিন্ন সময়ে কম্পিউটারের বহু অপারেটিং সিস্টেমের প্রচলন হয়েছে। যেমন : ইউনিক্স, ডস, উইন্ডােজ, লিনাক্স ইত্যাদি। বিভিন্ন সময়ে বহু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বহু অপারেটিং সিস্টেম হারিয়েও গেছে। কিছু কিছু টিকতে পারে নি। বেশির ভাগ পিসিতে এখন উইন্ডােজই ব্যবহৃত হয়টি মাইক্রোসফট কোম্পানির তৈরি। পিসিতে অ্যাপলও জনপ্রিয়। তার অপারেটিং সিস্টেমের নাম ম্যাক ওএস। সম্প্রতিকালে লিনাক্স কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বিভিন্ন প্রােগ্রামিং ভাষাকে অবলম্বন করে এপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। পৃথক পৃথক জাজের জন্য আছে পৃথক পৃথক এপ্লিকেশন সফটওয়্যার। আবার প্রােগ্রামিং ভাষা বা এপ্লিকেশন সফটওয়্যারের ভিত্তিতেও নির্দিষ্ট কাজের জন্য সফটওয়্যার বানানাে যায়। এগুলােকে বলে 

কাস্টমাইজড সফটওয়্যার। এপ্লিকেশন সফটওয়্যারকে প্যাকেজ সফটওয়্যার নামেও অভিহিত করা হয়। এপ্লিকেশন সফটওয়্যারগুলাের একটি বিশেষত্ব আছে। সেটি এই যে, অপারেটিং সফটওয়্যারের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এগুলাে তৈরি হয়। যে প্যাকেজ যে অপারেটিং পরিবেশের জন্য নির্মিত সে পরিবেশেই কেবল কাজ করে। অর্থাৎ এপ্লিকেশন সফটওয়্যারকে অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সঙ্গতি রেখেই তৈরি করা হয়। ওয়ার্ড ফর উইন্ডােজ শুধু উইন্ডােজ চলবে। ভসে চলবে না। আপেলের জন্য তার ভিন্ন সংস্করণ প্রয়ােজন নেয়। দৈনন্দিন লেখালেখির কাজের জন্য আমরা ব্যবহার করি ওয়ার্ডপ্রসেসর । তবে শুধু হরফ বা টেক্সটনিচয়, সেক্সটের সঙ্গে প্রয়ােজনবােধে ছবি সংযােজন করে । এমন কি, ছবির সম্পাদনাও করা যায়, আঁকাও যায়। ফ্যাক্সের সুবিধা নিয়ে ফ্যাক্স পাঠানাের কাজটিও করতে পারে। পারে ইন্টারনেটে ওয়েব পেজে নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে পৌছাতে। এক একটি সফটওয়ার তৈরি পরও সেগুলাের উন্নয়ন সাধনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকে। এর পেছনে বাণিজ্যিক কারণেও সেটি প্রয়ােজনীয় হয়ে পড়ে। পুরনােটির সংস্কার করা না হলে নতুন পণ্য এসে পুরনাে পণ্যের জন্য হুমকিও সৃষ্টি করতে পারে। যা হােক, নতুন সংস্করণের জন্য পৃথকভাবে দাম নির্ধারণ করা হয়।

বিভিন্ন সফটওয়ারের উন্নয়ন সাধন করা হয় পর্যায়ক্রমে। এভাবে উন্নয়ন সাধনের পর সেগুলাের ক্ষমতা বাড়ে, সুবিধাও বাড়ে। কাজেই আগেরটির সাথে পরেরটির পার্থক্য থাকে। এই পার্থক্যকে সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। বড় ধরনের উন্নয়ন সাধন করা হলে পূর্ণ সংখ্যা আর সামান পরিবর্তন করা হলে সেটিকে দশমিক দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। যেমন : ডস ৪ মানে চতুর্থ সংস্করণ। ইংরেজিতে একে ভার্সন’ বলা হয়। মূল সংস্করণের সামান্য উন্নয়ন সাধন করা হলে পূর্ববর্তী পূর্ণ সংখ্যার সাথে দশমিক যােগ করা হয়। উইন্ডােজ প্রথম দিকে ১, ২, ও ৩ এ রকম নামে চিহ্নিত করা হতাে। এখন সেগুলাে ৯৫ বা ৯৮ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। জনপ্রিয় এপ্লিকেশনসমূহকেও এরকম সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। যেমন : কোরেলড্র ৮ ও ৯ ইত্যাদি। 

সিস্টেম সফটওয়ার। System Software

সিস্টেম সফটওয়ার বলতে সাধারণভাবে অপারেটিং সিস্টেমকেই বােঝানাে হয়। তবে ইউটিলিটি সফটওয়ার, ডাটা রিকভারি সফটওয়্যার ইত্যাদিও সিস্টেম সফটওয়্যারের আওয়াতায় পড়ে। অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস কম্পিউটারকে ব্যবহার উপযােগী করে। কম্পিউটারের প্রথম যুগে অবশ্য অপারেটিং সিস্টেম ছাড়াই প্রােগ্রাম লেখা হয়েছে, কম্পিউটারকে কার্যকর করা হয়েছে। তা ছিল খুবই কঠিন। অপারেটিং সিস্টেমের অভ্যন্তরে আছে কার্নেল। এটিইওএসের মৌলিক কাঠামাে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ডিভাইসকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় মেমােরিকে বিভিন্ন সফটওয়ারের প্রয়ােজন অনুযায়ী বণ্টন করা হয়। অপারেটিং সিস্টেম যে কাজগুলাে করে সংক্ষেপে সেগুলাে হচ্ছে :১. প্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনা। ২, মেমােরির ব্যবস্থাপনা। ৩. ফাইলের ইনপুট/আউটপুট ব্যবস্থাপনা। ৪. ডিভাইস বা যন্ত্রসমূহের ইনপুট/ আউটপুট ব্যবস্থাপনা। এপ্লিকেশন প্রােগ্রাম চালানাের সামর্থ্য সৃষ্টি করা অপারেটিং সিস্টেমের বা ওএসের অন্যতম কাজ। অপারেটিং সিস্টেমের অভ্যন্তরে কানেলে এ উদ্দেশ্যে ফাংশন যুক্ত থাকে।

মাল্টিটাস্কিং অপারেটিং সিস্টেমে এক একটি এপ্লিকেশন চালু করার পরই অপারেটিং সিস্টেম পুনরায় আরেকটি এপ্লিকেশন চালু করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় । জটিল একটি প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে বিভিন্ন চালু এপ্লিকেশনের মধ্যে সময় ভাগ করে দেওয়া হয়। ফলে একদিকে ব্যবহারকারী ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের কাজ যখন করছেন, তখন অন্য একটি ফাইল তিনি প্রিন্ট করতে পারেন, সেই সাথে ইন্টারনেট থেকে ফাইল ডাউনলােডসহ অন্য কাজও করতে পারেন। মেমােরি ব্যবস্থাপনা অপারেটিং সিস্টেমের আর একটি মৌলিক কাজ। ওএসের দায়িত্ব হচ্ছে, বিভিন্ন চালু এপ্লিকেশন চালানাের জন্য পর্যাপ্ত মেমােরির সংস্থান করা। ডস কাজ করতাে রিয়েল মােড়ে। তাতে যেটুকু মেমােরি আছে, সবই একসাথে বণ্টিত বা ব্যবহৃত বলে গণ্য হয়, প্রয়ােজন থাকুক বা না থাকুক। তার ঊর্ধসীমাও আছে। উইন্ডােজ কাজ করে প্রটেক্টেড মােডে। তাতে ভার্চুয়াল মেমােরির ব্যবহার করা হয়। যদি র্যামে যেটুকু আছে, তাতে কাজ না চলে তাহলে হার্ড ডিস্কের খালি জায়গাও ওএস ব্যবহার করতে পারে। চালু প্রােগ্রামের জন্য যে মেমােরির প্রয়ােজন হয় না, সে মেমােরির উপর উইন্ডােজ সেই প্রােগ্রামকে হাত দিতে দেয় না। ওএসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে ফাইল সিস্টেম। বিভিন্ন ফাইলকে বিভিন্ন স্টোরেজ মাধ্যমে সঞ্চিত করে রাখতে হয়। ফাইলগুলােকে প্রয়ােজনবােধে মুছতে হয়, ফাইল থেকে ডাটা আনা-নেওয়া করতে হয়। ফাইলে নামও বদলাতে হতে পারে। ওএস আরাে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে হয় তা হচ্ছে এ ফাইলগুলােকে যে সব সেক্টরে রাখতে হবে, সেগুলাে চিহ্নিত করতে হয়। সেই সাথে ড্রাইভ কন্ট্রোলার যাতে প্রতিটি সেক্টর থেকে সে ফাইল খুঁজে বের করে আনতে পারে, সে অনুযায়ী নির্দেশ সংযুক্ত করে রাখতে হয়। উইন্ডােজের ফাইল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে ভার্চুয়াল ফাইল এলােকেশন টেবল। পিসির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাও ওএসের দায়িত্ব। কী-বাের্ড, মাউস, মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদি প্রতিটি যন্ত্রাংশের গঠন ভিন্ন। সেগুলাের ভাষাও ভিন্ন। এগুলাে ইনপুট-আউটপুটের যে চাহিদা দেয়, তা নিয়ন্ত্রিত হয় ডিভাইস ড্রাইভারের সাহায্যে। এত সব কাজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটার পরিচালনার বিষয়টি সম্পাদনা করে থাকে। 

উইন্ডােজ। Windows

কম্পিউটারের ডস চালু থাকা অবস্থাতেই মাইক্রোসফট উইন্ডােজ বের করে। তবে প্রথমদিকে উইন্ডােজ পিসিতে জনপ্রিয় হতে পারে নি। কারণ পিসিতে গ্রাফিক এপ্লিকেশন চালানাের মতাে পর্যাপ্ত ক্ষমতা ছিল না। মাইক্রোপ্রসেসরের উন্নয়নের সাথে সাথে উইন্ডােজের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে । এখন শতকরা ৯০ ভাগ পিসিতে উইন্ডােজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। পিসিতে এখন ডসকে প্রতিস্থাপন করেছে উইন্ডোজ। ডস পরিবেশে একবারের একাধিক কাজ করা যেতাে না। উইন্ডােজে একসাথে একাধিক কাজ করা যায়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, একসাথে একাধিক কাজ করার নাম মাল্টিটাস্কিং’। ব্যবহাকারী এর মাধ্যমে একাধিক প্রােগ্রাম কাজ করার সুযােগ পান। অপরদিকে ডস একসাথে একটিই এপ্লিকেশন চালাতে পারতাে। তাতে যে ইন্টারফেস ব্যবহৃত হয় তকে ক্যারাকটার ইউজার ইন্টারফেস বা কুয়ি। এতে কমান্ডকে লিখতে হয়। তার মানে মনেও রাখতে হয়। উইন্ডােজ অপারেটিং সিস্টেম গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস বা শুয়ি ব্যবহৃত হয়েছে। এতে লেখার বদলে মেনু, আইকন (দেখতে ছবি, আসলে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার নির্দেশ), টুলবার ব্যবহার করতে হয়। তাই কমান্ডর মুখস্থ রাখতে হয় না। উইন্ডােজে মাউস ব্যবহার করতে করতে কাজ করা বেশ সুবিধাজনক। এদিকে সিপিইউ’র ক্ষমতা যেরকম বেড়েছে, তাতে জিউউআই বা গুয়ির কাজ করার ক্ষমতা পুরােপুরি ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এভাবে সিইউআই বা কুয়ি ভিত্তিক ডস তার উপমােগিতা হারিয়ে ফেলে। ইউন্ডােজ ডসের তুলনায় বহুগুণ শক্তিশালী। ব্যবহাকারীর কাছে এর গ্রহণযােগ্যতা অনেক বেশি। ইংরেজিতে বলে ইউজার ফ্রেন্ডলি’। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর কাছে এটি বন্ধুসুলভ। উইন্ডােজ ব্যবহার করতে লাগে অনেক বেশি র্যাম, বড় আকারের হার্ড ড্রাইভ, ও হার্ড ড্রাইভে যথেষ্ট খালি জায়গা। অপরদিকে ডস ছােট অল্প ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হার্ড ডিস্কে কাজ করেছে। র্যামের চাহিদাও অতটা ছিল না। ১ মেগাবাইটের চেয়ে কমেই চলেছে (শুরুতে ১২ থেকে ৬৪০ কিলােবাইটেই চলত। উইন্ডােজ ১ম ভার্সন বের হয় ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে। প্রকৃতপক্ষে ইউন্ডােজের ৩.১ ভার্সনই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ ভাসানগুলােতে প্রথম যুক্ত হতে উস। তার উপর ভিত্তি করেই উইন্ডােজ চালু হতাে। উইন্ডােজ ৯৫ সীমিত মাত্রায় এবং উইন্ডােজ ৯৮ প্রায় পুরােপুরি ভসের উত্তরাধিকার ঝেড়ে ফেলেছে। তবে ডসের প্রােগ্রাম চালানাের সুবিধা উইন্ডােজ আছে। গেমগুলােও খেলা যায়। উইন্ডােজ নেটওয়ার্ক উপযােগী। উইন্ডােজ ৯৫ এর সাথে নেটওয়ার্ক সুবিধা বাড়ানাে হয়। এতে আরাে যুক্ত হয় ই মেল, ভয়েস মেল, ফ্যাক্স, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি সুবিধা। পিএনপি বা প্লাগ এন্ড প্লি-র মাধ্যমে বিভিন্ন হার্ডওয়ারের সংযােগ দানের সুবিধা দেওয়া হয়। এর আগে বিভিন্ন হার্ডওয়ার ডিভাইস বা যন্ত্রের সাথে অপারেটিং সিস্টেমের সমন্বয় সাধনের কাজটি ছিল জটিল। এক সময়, এমন কি প্রিন্টারের সাথে যােগাযােগের দায়িত্ব কোনাে কোনাে এপ্লিকেশন সফটওয়ার নিজেই গ্রহণ করতাে। এখন অপারেটিং সিস্টেম সে কাজটি সহজ ও সাবলীল করে দিয়েছে। 

উইন্ডােজে ফাইল ব্যবস্থাপনায় ফ্যাট ৩২ ব্যবহৃত হয়েছে। ফ্যাট মানে মাইল এলােকেশন টেবল। হার্ড ডিস্কে আমরা দেখেছি বিভিন্ন ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়। বড় হার্ড ডিস্কে ক্লাস্টারও বড় হয়ে যায়। ফলে ডিস্কে জায়গার অপচয় বেশি হয়। ফ্যাট ১৬ তে ফাইল সিস্টেম ২ গিগাবাইটের চাইতে বড় ফাইল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফ্যাট ৩২ এ সে সমস্যা নেই। ফ্যাট ১৬ তে প্রতিটি ক্লাস্টারের আকার বড়, ৩২ কিলােবাইট। কিন্তু ফ্যাট ৩২ এ ক্লাস্টারের আকার ছোেট, মাত্র ৪ কিলােবাইট। ফলে ফ্যাট ১৬ তে একটি ১ কিলােবাইট আকারের ফাইলের জন্যও ৩২ কিলােবাইট স্থান প্রয়ােজন হয়। তার তুলনায় ফ্যাটি ৩২ এ ৪ কিলােবাইটই লাগে। তাই ডিস্ক স্পেস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ফ্যাট ৩২ অধিকতর দক্ষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button