কমিউনিকেশন সিস্টেম (Communication System) কি?
বর্তমানে “কমিউনিকেশন” আমাদের জীবনে এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে এর যুগান্তকারী ফলাফল আমরা আমাদের চারদিকে খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারি। ফ্যাক্স, ফোন, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, মােবইল ফোন, কম্পিউটার ও তার সাথে দ্রুত গতির ইন্টারনেট এমনভাবে ছড়িয়ে গেছে যে, যেকোনাে মুহূর্তে এসবের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোনাে প্রান্তে যােগাযােগ করতে পারছি। কমিউনিকেশন সিস্টেম বা যােগাযােগ ব্যবস্থা বােঝার আগে কমিউনিকেশন ও সিস্টেম এই দুটি শব্দ আগে ভালাে করে বুঝে নিই। কমিউনিকেশন শব্দটি ল্যাটিন শব্দ “Communicare” থেকে এসেছে যার অর্থ “to share (আদান প্রদান)” । কমিউনিকেশন শব্দটির অর্থ হল যােগাযােগ। কার সাথে কার যােগাযােগ? মানুষের সাথে মানুষের? নাকি যন্ত্রের সাথে যন্ত্রের? প্রকৃত পক্ষে যন্ত্র বা ডিভাইস ব্যবহার করে মানুষের সাথে মানুষের যােগাযােগই হচ্ছে কমিউনিকেশন। অন্যদিকে সিস্টেম হচ্ছে এমন একটি সমন্বিত ব্যবস্থা যা কোনাে উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। তাহলে কমিউনিকেশন সিস্টেম বলতে পারস্পরিক যােগাযােগের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কতগুলাে উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত কোনাে সমন্বিত ব্যবস্থাকে বুঝব। আর এই যােগাযােগের জন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যম যেমন- টেলিফোন লাইন, ফাইবার অপটিক ক্যাবল, রেডিও ওয়েব, মাইক্রোওয়েব ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। সুতরাং যে পদ্ধতিতে আমরা উপাত্ত বা তথ্যকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কিংবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত করে এবং সেই তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে পারি তাকে কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে।
যােগাযােগ প্রক্রিয়া
যােগযােগের জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়াগুলাে ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত হয়-
• “Message signal” উৎপন্ন করা যেমন- কথন, সংগীত, চিত্র অথবা কম্পিউটার উপাত্ত।
• “Message signal” (যা প্রেরণ করতে হবে) তা সূক্ষ মাপের চিহ্ন দিয়ে যেমন: electric বা visual signal এর মাধ্যমে বিবৃত করা।
• তথ্য প্রেরণে ব্যবহৃত মাধ্যমের জন্য উপযুক্ত করে একটি মানানসই আকৃতিতে চিহ্নগুলাে এনকোড করা।
• কাঙ্খিত গন্তব্যে এনকোডেড চিহ্নগুলাে প্রেরণ করা।
ডিকোডিং এর অরিজিনাল চিহ্ন বা সিম্বল পুনরুৎপাদন করা।
• মূল Message Signal পুনরুৎপাদনের পর এটি পুরােপুরি প্রেরণকৃত Message Signal এর ন্যায় থাকে না। এই অসমতা যােগাযােগ ব্যবস্থা অপূর্ণতার উপস্থিতির কারণে হয়ে থাকে। তবে এই অপূর্ণতার পরিমাণ অবশ্যই নিরূপনযােগ্য হতে হবে।
• উৎস এবং গন্তব্যের ঠিকানা ঠিক করা
• ডেটা পাঠানাের সঠিক পথ নির্ণয়
• ডেটার নিরাপত্তা নির্ধারণ
• ডেটা পাঠানােতে কোনাে ভুল হয়ে থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ণয় করা এবং সঠিক ভাবে প্রেরণ করা।
• ট্রান্সমিশনের সময় ডেটা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য ডেটা আদান-প্রদানে সমন্বয় সাধনকরণ করা এবং কোনাে একটি ডেটা বা ইনফরমেশন হারিয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার করা। তথ্য সমূহের আদান প্রদান ব্যবস্থাপনা। ডেটা সমূহকে মেসেজের আকারে পাঠানাের জন্য কাঠামাে নির্ধারণ করা। ট্রান্সমিশন সিস্টেমের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাপনা।