ফাজানের নিয়ম কি? বিস্তারিত আলোচনা
যে সকল নিয়ম বা শর্ত দ্বারা আয়নিক বন্ধনের মধ্যে সমযােজী বন্ধনের উপস্থিতি সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় সে সকল নিয়ম বা শর্তগুলােকে ফাজানের নিয়ম বলে। ফাজানের নিয়মকে বিভিন্ন ধাপে আলােচনা করা হলাে।
১। ক্যাটায়নের ক্ষুদ্র আকার : ক্যাটায়নের আকার ছােট হলে ক্যাটায়নের নিউক্লিয়াস থেকে অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের দুরত্ব কমে যায়; ফলে আকর্ষণও বাড়ে। এ কারণে পর্যায় সারণির একই গ্রুপে যতই নিচ থেকে উপরের দিকে যাওয়া যায় একই চার্জ সম্পন্ন ক্যাটায়নসমূহের আকার কমে যাওয়ায় পােলারায়ন ক্ষমতা বদ্ধি পায়। ফলে এ সব ক্যাটায়নের যৌগসমূহের সমযােজী বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধি পায়। যেমন LiCI, NaCl, KCI আয়নিক যৌগ হওয়া সত্ত্বেও Li+ এর আকার ছােট হওয়ার কারণে Li+ দ্বারা গঠিত যৌগসমূহ সাধারণত সমযােজী যৌগের ধর্ম প্রদর্শন করে।
২। ঋণাত্মক আয়ন বা অ্যানায়নের বড় আকার : অ্যানায়নের আকার বড় হলে অ্যানায়নের নিউক্লিয়াস থেকে অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের দুরত্ব বেড়ে যায়। এর ফলে ইলেকট্রন মেঘের উপর নিউক্লিয়াসের আকর্ষণও কমে যায়। ফলে ক্যাটায়ন সহজেই তাদের আকৃষ্ট করতে পারে। এ কারণে পর্যায় সারণির একই শ্রেণীতে যতই নিচে যাওয়া যায় অ্যানায়নের পােলারায়িত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। যেমন- KI, KBr, KCl, KF যৌগসমূহ আয়নিক হলেও I– এর আকার বড় হওয়ায় I– দ্বারা উৎপন্ন যৌগসমূহ সমযােজী যৌগের ধর্ম প্রকাশ করে।
৩। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের উচ্চতর চার্জ : ক্যাটায়নের ধনাত্নক চার্জ বৃদ্ধির সাথে সাথে এটির অ্যানায়নের ইলেকট্রনকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পর্যায় সারণির যে কোন পর্যায়ে যতই ডানদিকে যাওয়া যায়, ক্যাটায়নসমূহের পােলারায়ন ক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পায়। যেমন: তৃতীয় পর্যায়ে Mg2+ আয়নের পােলারায়ন ক্ষমতা Na+ আয়নের চেয়ে বেশি Mg2+ আয়ন অপেক্ষা Al3+ আয়নের পােলারায়ন ক্ষমতা বেশি। অ্যানায়নের চার্জের পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এদের পােলারায়িত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের মধ্যে বন্ধনের সমযােজী বৈশিষ্ট্য অধিক হবে।
৪। ক্যাটায়নের ইলেকট্রন বিন্যাস : ক্যাটায়নের d ও f অরবিটালে ইলেকট্রন থাকলে পােলারায়নের মাত্রা বেশি হয়। ফলে বন্ধনের সমযােজী বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধি পায়।