আয়নিক যৌগ কাকে বলে? আয়নিক যৌগ ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য কি?
আয়নিক যৌগ কি বা কাকে বলে? (What is an Ionic compound in Bengali/Bangla?)
ইলেকট্রন বর্জন ও গ্রহণ করে বিপরীত চার্জযুক্ত আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণের ফলে দুটি পরমানুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে যে যৌগের সৃষ্টি হয় তাকে আয়নিক যৌগ বলে।
অন্যভাবে বলা যায় যে, আয়নিক বন্ধনের মাধ্যমে যে যৌগ গঠিত হয় তাকে আয়নিক যৌগ বলে।
আয়নিক যৌগের সাধারণ ধর্মাবলি (Properties of Ionic compound)
আয়নিক যৌগের কতগুলো সাধারণ ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলো হচ্ছেঃ
১. সকল আয়নিক যৌগ কঠিন অবস্থায় কেলাস বা স্ফটিক আকারে থাকে।
২. বিভিন্ন আয়নিক যৌগের ইলেকট্রনিক গঠন অভিন্ন হলে কঠিন অবস্থায় এদের স্ফটিক গঠন একই রূপ হয়।
৩. আয়নিক যৌগসমূহের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি হয়। এরা অনুদ্বায়ী হয়।
৪. আয়নিক যৌগসমূহ সাধারণত পোলার দ্রাবকে যেমন পানিতে দ্রবণীয় এবং অপোলার দ্রাবক যেমন বেনজিনে অদ্রবণীয় হয়।
৫. কঠিন অবস্থায় আয়নিক যৌগসমূহ বিদুৎ অপরিবাহী; কিন্তু গলিত অবস্থায় ও দ্রবণে আয়নিক যৌগসমূহ বিদ্যুৎ পরিবহন করে। এ সময় তড়িৎ বিশ্লেষণ সংঘটিত হয়।
৬. আয়নিক কেলাস বা স্ফটিকসমূহ ভঙ্গুর হয়।
৭. আয়নিক যৌগসমূহের মধ্যে বিক্রিয়ার গতি অত্যাধিক দ্রুত হয়।
৮. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় আয়নিক যৌগের আয়নসমূহ তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখে।
আয়নিক যৌগ ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য কি? (What is the differences between Ionic compound and Covalent compound?)
আয়নিক ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরুপঃ
- ধাতু ও অধাতুর মধ্যে আয়নিক যৌগ গঠিত হয়। অপরদিকে, অধাতু-অধাতু সমযোজী যৌগ গঠন করে।
- আয়নিক যৌগ গঠনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রন আদান-প্রদান ঘটে। কিন্তু, সমযোজী যৌগ গঠনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রন শেয়ার ঘটে।
- আয়নিক যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি। কিন্তু, সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক কম হয়।
- আয়নিক যৌগসমূহ পানিতে দ্রবণীয়। কিন্তু, সমযোজী যৌগ পানিতে অদ্রবণীয়।
- আয়নিক যৌগ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে। কিন্তু, সমযোজী যৌগসমূহ বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।
- আয়নিক যৌগসমূহ কেলাস গঠন করতে পারে। কিন্তু, সমযোজী যৌগসমূহ সাধারণত তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে।