RAM এবং ROM কি? RAM এবং ROM এর পার্থক্য
র্যাম (RAM) কি?
RAM এর পূর্ণ রূপ হল “Random Access Memory“। RAM হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার একটি অংশ যা মাদারবোর্ডে সংযুক্ত থাকে। র্যাম প্রাথমিক মেমোরি বা প্রধান মেমোরি বা অভ্যন্তরীণ মেমোরি নামেও পরিচিত।
RAM উদ্বায়ী প্রকৃতির মেমোরি, যার মানে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে এর ডেটাগুলো মুছে যায়। তাই এটিকে অস্থায়ী মেমরি বলা হয়। আমরা যখন কম্পিউটার সিস্টেম চালু করি, তখন RAM হার্ডডিস্ক থেকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও নির্দেশনা নিয়ে আসে এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে। র্যাম দ্বারা ডেটা আনয়ন করে CPU নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে।
RAM কম্পিউটারের সমস্ত প্রোগ্রাম এবং ডেটা সঞ্চয় করতে সাহায্য করে এবং সেগুলো রিয়েল-টাইমে CPU দ্বারা ব্যবহার করা হয়। RAM রিড এবং রাইট উভয় ধরনের অপারেশন করার ক্ষমতা রয়েছে।
RAM এর ব্যবহার
RAM কম্পিউটারের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন-
- RAM সমস্ত ডেটা, ফাইল, প্রোগ্রাম বা অপারেটিং সিস্টেমগুলো সংরক্ষণ করে যা রিয়েল-টাইমে CPU-এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
- এটি দ্রুততম অপারেটিং গতি প্রদান করে।
- এটি কম শক্তি অপচয় করে।
- এটি একটি কম্পিউটার সিস্টেমে বাফার পুল এবং প্রধান মেমোরি হিসাবে কাজ করে।
- এটি বারংবার সমস্ত তথ্য লিখতে, পড়তে এবং মুছতে সক্ষম।
RAM এর প্রকারভেদ
দুই ধরনের র্যাম রয়েছে যেমন- Static RAM এবং Dynamic RAM।
১. স্ট্যাটিক র্যাম: SRAM এর ভিতরে ডেটা ধরে রাখার জন্য ক্রমাগত শক্তির প্রবাহ প্রয়োজন হয়। SRAM কম্পিউটারের ক্যাশ মেমরি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
২. ডাইনামিক র্যাম: এটি ধারণ করা সমস্ত ডেটা ধরে রাখতে রিফ্রেশ করা প্রয়োজন এবং এর গতি ধীর।
রম (ROM) কি?
ROM এর পূর্ণ রূপ হল (Read Only Memory)। এই মেমরি স্থায়ীভাবে ডেটা সঞ্চয় করতে সক্ষম, এবং এটি একটি অ-উদ্বায়ী বা ননভোলাটাইল মেমোরি যার অর্থ পাওয়ার বন্ধ হয়ে গেলেও এর ডেটা কখনই ধ্বংস বা মুছে যায় না। ROM একটি প্রোগ্রামেবল চিপ কারণ এতে কম্পিউটার চালু করার সময় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী সংরক্ষণ করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ‘‘বুটস্ট্র্যাপ’’ নামে পরিচিত।
ROM এর প্রকারভেদ
রম চার প্রকার। যেমন:
১. মাস্কড রিড অনলি মেমোরি (MROM)
২. প্রোগ্রামেবল রিড-অনলি মেমোরি (PROM)
৩. ইরেজেবল এবং প্রোগ্রামেবল রিড-অনলি মেমোরি (EPROM)
৪. ইলেক্ট্রিক্যালি ইরেজেবল এবং প্রোগ্রামেবল রিড-অনলি মেমোরি (EEPROM)
ROM এর ব্যবহার
ROM স্থায়ী ডেটা স্টোরেজ প্রকৃতির মেমোরির কারণে এটি বিভিন্ন ধরণের এমবেডেড সিস্টেমে ব্যবহৃত হয় কারণ এমবেডেড সিস্টেমে ডেটা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না।
টিভি, মাইক্রোওয়েভ, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদিতে রম ব্যবহার করা যেতে পারে।
এটি অটোমোবাইলে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে সর্বদা ডেটার প্রয়োজন হয় যাতে ডেটা চিপে সংরক্ষণ করা হয়।
এটি ক্যালকুলেটর, প্রিন্টার, প্লটার, ফ্যাক্স মেশিন ইত্যাদি ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।
ফিচার ফোন, Small Handy Games, VCR, DVD, এবং ডিজিটাল ঘড়িতেও ROM ব্যবহার করা হয়।
RAM এবং ROM পার্থক্য
RAM এবং ROM উভয়ই কম্পিউটার সিস্টেমে অভ্যন্তরীণ মেমেরি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। উভয়টি কম্পিউটারের প্রাথমিক মেমোরি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তথাপি, র্যাম ও রমের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যেমন,
- RAM এর পূর্ণ রূপ হল “Random Access Memory“। বিপরীতে, ROM এর পূর্ণ রূপ হল (Read Only Memory)।
- RAM Read/write উভয় ক্রিয়াকলাপ করতে সক্ষম, বিপরীতে, রম শুধুমাত্র রিডিং অপারেশন করতে সক্ষম।
- RAM এর সাময়িকভাবে ডেটা সংরক্ষণ করার ক্ষমতা রয়েছে কারণ পাওয়ার বন্ধ হলে এর সম্পূর্ণ ডেটা মুছে যায়, যেখানে রম সারাজীবন ডেটা সংরক্ষণ করতে পারে। পাওয়ার বন্ধ হলেও এর ডেটা মুছে যায় না।
- RAM হল একটি উদ্বায়ী বা ভোলাটাইল প্রকৃতির মেমোরি, যেখানে রম হল একটি অ-উদ্বায়ী বা ননভোলাটাইল মেমোরি ।
- রমের তুলনায় র্যামের গতি বেশি।
- RAM কে প্রাথমিক মেমোরি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেখানে ROM কে একটি সেকেন্ডারি মেমরি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
- র্যাম এর ডেটা যেকোন সময় সহজেই আপডেট করা যায়, যেখানে রমের ডেটা কখনই আপডেট হয় না।
- ROM এর তুলনায় RAM ব্যয়বহুল।
- RAM কে স্ট্যাটিক এবং ডাইনামিক দুই প্রকারে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে রমকে MROM, PROM, EPROM এবং EEPROM-এ ভাগ করা হয়েছে।