Technology

পিপিআই কি? | PPI | পিক্সেলস পার ইঞ্চি | বিস্তারিত

পিপিআই কি? | পিক্সেলস পার ইঞ্চি

বন্ধুরা যখনই আমরা কোন দুটি স্মার্টফোনের স্ক্রীনের মধ্যে পার্থক্য করতে যায় তখনই একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্ম আমাদের সামনে আসে। আর সেটি হচ্ছে পিপিআই। আজকের পোস্টে আলোচনা করতে চলেছি পিপিআই কি, এটি কত কম বা বেশি হওয়া উচিৎ এবং সাথে জানাবো আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তো কথা না বাড়িয়ে আলোচনায় ঝাঁপিয়ে পড়া যাক।

আরো কিছু পোস্ট

  • ৩ডি টাচ কি? | থ্রীডি টাচ | এই প্রযুক্তি কতটা সুবিধা জনক?
  • ক্যামেরা, সেন্সর, অ্যাপারচার, লেন্স, ওআইএস, ফোকাস | ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত
  • টাচস্ক্রীন প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন, অতিত বর্তমান ভবিষ্যৎ

পিক্সেল

পিপিআই এর পূর্ণ নাম হলো পিক্সেলস পার ইঞ্চি। আমরা জানবো পিক্সেলস পার ইঞ্চি কি, কিন্তু তার আগে জানা প্রয়োজন পিক্সেল কি তা নিয়ে। দেখুন বন্ধু যেকোনো ডিভাইজের স্ক্রীন সেটা হোক আপনার ফোন কিংবা ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট তৈরি করা হয় বহুত ছোট ছোট আলাদা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে। এবং এই ছোট যন্ত্রাংশ গুলোকে বলা হয় পিক্সেল। আপনার ফোনের স্ক্রীনে লম্বা লম্বি এবং সমতল ভাবে লক্ষ লক্ষ পিক্সেলস লাগানো থাকে। এবং একটি পিক্সেল সবচাইতে ছোট একটি যন্ত্রাংশ হয়ে থাকে যা নিজে থেকেই যেকোনো রঙ ডিসপ্লে করতে সক্ষম। একটি পিক্সেলে আবার তিনটি ছোট পিক্সেলস থাকে যাকে আমরা সাব পিক্সেলস বলে থাকি। এই তিনটি ছোট পিক্সেলস হয়ে থাকে লাল, সবুজ এবং নীল এই তিন কালারের লাইট। যদিও আপনার পিক্সেলে তিনটি কালারের ইউনিট লাগানো থাকে কিন্তু এই তিন কালার ইউনিটের মাধ্যমেই যেকোনো রঙ তৈরি করা সম্ভব। মনে করুন আপনার শুধু নীল রঙ দেখানোর প্রয়োজন তবে লাল ও সবুজ রঙ জিরো করে দিন তবে শুধু নীল দেখা যাবে। আর এই ইউনিট গুলো এতোটাই ছোট হয়ে থাকে যে আপনি বুঝতেই পারবেন না যে কোন লাইট বন্ধ আছে কিনা।

তো বেসিক ভাবে কালার মিক্সিং টেকনিক ব্যবহার করে আপনার স্ক্রীনে বিভিন্ন কালার প্রদর্শিত করা হয়ে থাকে। এখন কোন স্ক্রীনে যতো বেশি পিক্সেলস থাকবে এবং পিক্সেলস গুলো একে অপরের থেকে যতো কাছে অবস্থান করবে সেই স্ক্রীনে ইমেজ ততোবেশি শার্প হবে এবং বেশি তথ্য প্রদর্শিত হবে। আগের পুরাতন নোকিয়া ফোন গুলোর কথা কি মনে আছে আপনাদের? ঐ ফোন গুলোর স্ক্রীনে কোন টেক্সট লেখা থাকলে সেটা দেখা যেতো যে ছোট ছোট চারকোনা ডট দিয়ে লেখা থাকতো। কিন্তু আজকের দিনে যে আধুনিক স্মার্টফোন গুলো রয়েছে যা দ্বারা আমরা ফুল মাল্টিমিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করি তাতে এতো কম পিক্সেলস দিয়ে কাজ চলতে পারে না। যদি কম পিক্সেল থাকে তবে দেখতে পাওয়া যাবে ভিডিও এবং ফটো গুলো চারকোনা ডট ডট এর মধ্যে প্রদর্শিত হচ্ছে। এজন্যই আজকের দিনে কোন স্ক্রীনে যতো বেশি পিক্সেলস থাকবে ততো বেশি ভালো কোয়ালিটি দেখতে পাওয়া যাবে।

কিন্তু শুধু পিক্সেলস হলেই হবে না আপনার ফোনের স্ক্রীন সাইজের উপরও নির্ভর করতে পারে অনেক কিছু ব্যাপার। এখন মনে করুন আপনার ফোনের স্ক্রীন সাইজ মাত্র ৪ ইঞ্চি। এখন এই ৪ ইঞ্চি স্ক্রীন সাইজে যদি ৪কে ডিসপ্লে লাগানো হয় তবে সেটা খুব ভালো বিষয় হবে না। এতে উল্টা আপনার ফোনের ব্যাটারিতে পার্থক্য ঘটতে পারে। কেনোনা ৪ ইঞ্চি স্ক্রীন এতোটাও বড় নয় যে এতে এতো বেশি পিক্সেলস ঠেসে দেবেন যে আপনার ইমেজ কোয়ালিটি উন্নত হয়ে যাবে। মানুষের চোখ একটি নির্দিষ্ট কোয়ালিটির পরে আর কোন কোয়ালিটি তদন্ত করার ক্ষমতা রাখে না। আপনার চোখ থেকে স্বাভাবিক দূরত্বে যদি একটি কিউএইচডি ফোন এবং একটি ৪কে ডিসপ্লে ফোন রাখা হয় তবে আপনি কোয়ালিটির পার্থক্য বুঝতেই পারবেন না। পিক্সেল ডেনসিটি নির্ভর করে আপনার ফোনের স্ক্রীন সাইজের উপর এবং আপনি কতদূর থেকে স্ক্রীন দেখছেন তার উপর।

আরো কিছু পোস্ট

  • ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি এবং অগমেনটেড রিয়্যালিটি কি? বিস্তারিত জানুন
  • ডিসপ্লে প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন – আইপিএস, এমোলেড, রেটিনা
  • আইরিস স্ক্যানিং প্রযুক্তি সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানুন

পিপিআই কি? | পিক্সেলস পার ইঞ্চি

বন্ধুরা পিক্সেল নিয়ে তো জানলেন চলুন এবার আলোচনা করি পিপিআই মানে পিক্সেলস পার ইঞ্চি কি সে বিষয়ে। এবং চলুন সাথে জেনে নেওয়া যাক পিক্সেলস পার ইঞ্চি মাপা হয় কীভাবে তার সম্পর্কে। মনে করুন আপনার ফোনের স্ক্রীনের রেজুলেসন হলো ফুল এইচডি অর্থাৎ ১০৮০পি। ফুল এইচডি বা ১০৮০পি মানে হচ্ছে ১৯২০x১০৮০ পিক্সেলস। অর্থাৎ আপনার ফোনের স্ক্রীনে লম্বালম্বি ভাবে রয়েছে ১৯২০ পিক্সেলস এবং সমতল ভাবে রয়েছে ১০৮০ পিক্সেলস। এখন সব পিক্সেলস গুলোকে এক সাথে গুনলে পাওয়া যাবে ১৯২০x১০৮০= ২ মিলিয়ন পিক্সেলস প্রায়।

এখন চলুন দেখি পিক্সেলস ডেনসিটি নিয়ে। এখন মনে করুন আপনার ফোনের স্ক্রীন সাইজ ৫.৫ ইঞ্চি। আপনি নিশ্চয় জানেন যে ইঞ্চি সবসময় কোনাকোনি ভাবে মাপা হয়ে থাকে। তাহলে আপনার ফোনের স্ক্রীন উপরের ডান কোনা থেকে নিচের বাম কোনা পর্যন্ত অথবা উপরের বাম কোনা থেকে নিচের ডান কোনা পর্যন্ত ৫.৫ ইঞ্চি হবে।

এখন আপনার স্ক্রীনের কোনাকোনি বরাবর একটি রেখা কল্পনা করুন। তাহলে তৈরি হবে দুটি ত্রিভুজ। এখন আপনি স্কুলে তো নিশ্চয় প্যাথাগরাস সূত্র পড়েছেন যে কোন ত্রিভুজের যদি দুইটি দিকের পরিমাপ আপনার জানা থাকে তবে আরেকটি দিকের পরিমাপ সহজেই বেড় করা সম্ভব। এখন যদি অঙ্ক করা হয় (১০৮০x১০৮০)+(১৯২০x১৯২০) স্কয়ার রুট তবে ফলাফল হবে ২২০২.৯০৭। এখন এই ফলাফলকে যদি ভাগ করা হয় ৫.৫ দিয়ে তবে ফলাফল আসবে ৪০০.৫২। এবং এটিই হলো আপনার ফোনের স্ক্রীনের পিক্সেলস পার ইঞ্চি।

তো এটা আমরা সবসময়ই শুনে থাকি যে ৫.৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি স্ক্রীনে ৪০১ পিক্সেলস পার ইঞ্চি বা পিপিআই থাকে। আপনার ফোনে ৩৫০ থেকে ৪০০ এর উপর যদি পিপিআই থাকে তবে তা অনেক ভালো।

শেষ কথা

বন্ধুরা আশা করছি আজকের পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। এবং পরবর্তীতে যখন আপনি ফোন কিনতে যাবেন তখন অবশ্যই এই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। সেসব রিভিউয়ারদের কথায় একদমই পড়বেন না যারা বলে কিউএইচডি ডিসপ্লের নিচে তো সব ডিসপ্লে বেকার, আবার ৪কে ডিসপ্লের তো ব্যাপারটাই আলাদা। কিন্তু আপনি জানেন যে একটি লিমিটের পরে সেটা শুধু মাত্র একটি স্পেসিফিকেশনই হয়ে থাকবে কিন্তু আপনার চোখের কাছে কোন পার্থক্য মনে হবে না। অমুক ফোনে ৪কে ডিসপ্লে রয়েছে এই শুনেই পাগল হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই বন্ধুরা। শুধু লেটেস্ট হলেই এটা কিন্তু জরুরী নয় যে সেটা আপনার কাজের হবে। একটি সাধারন ৪.৫ ইঞ্চি এইচডি স্ক্রীনও আপনার কাছে অনেক ভালো মনে হবে। যাই হোক, পোস্টটি বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং আপনার যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত জানাতে আমাকে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ 🙂

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button