Uncategorized

ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো?

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবো ?

একটা ক্রেডিট কার্ড থাকার মানে হল নগদবিহীনভাবে যেকোনো খরচের জন্য তাৎক্ষণিক অর্থপ্রদান করার একটা সহজতর উপায়।

অর্থাৎ, আপনি ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে নগদ অর্থ না থাকলেও, আপনি আপনার চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।

শুধু একটা কার্ড সোয়াইপ করলেই আপনি এয়ারলাইনের টিকিট কাটা থেকে শুরু করে মুদির দোকানের জিনিস কেনা, সবকিছুই নিমেষের মধ্যে সেরে নিতে পারবেন।

তাই, এখনও যদি আপনার ক্রেডিট কার্ড না থাকে, তাহলে চট করেই বানিয়ে নিতে পারেন আপনার নিজের একটা credit কার্ড।

 

চলুন, তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি, যে আমরা ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো ? বা, একটি Credit Card কিভাবে বানাতে পারবো ? – এই বিষয়টার সম্পর্কে।

একটি ক্রেডিট কার্ডের জন্য কে আবেদন করতে পারেন ?

ক্রেডিট হিস্ট্রি, আয়ের উৎস, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বরের ভিত্তিতে আর আপনার বয়স ১৮/২১ বছরের উপরে হলে; তবেই আপনি ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যেকোনো ব্যাংক মূলত আপনার ক্রেডিট ইতিহাস ও ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনার যোগ্যতা নির্ধারণ করে।

এছাড়াও, এই কার্ড প্রদানের আগে ব্যাঙ্ক সাধারণত নিম্নলিখিত তথ্যগুলো যাচাই করে থাকে –

  • বৈধ নাগরিকতা রয়েছে কিনা 
  • ন্যূনতম বয়স ১৮/২১ বছর হতে হবে
  • আবেদনকারীর বৈধ আবাসিক প্রমাণপত্র দিতে হবে 
  • সর্বনিম্ন প্রায় ২০,০০০ (ব্যাঙ্ক এবং জায়গা বিশেষে আলাদা আলাদা হতে পারে) টাকা মাসিক আয় হতে হবে
  • ক্রেডিট স্কোর কমপক্ষে ৭০০-৭৫০ হতে হবে 
  • কমপক্ষে ছয় মাসের নিয়মিত ক্রেডিট হিস্ট্রি থাকতে হবে 
  • আপনার বর্তমান আয় ও ক্রেডিট ব্যবহারের ধরণ দেখতে হবে

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবো ?

একটা ক্রেডিট কার্ড বানানোর প্রক্রিয়াটা অনেকটাই সহজ আর ক্রেডিট কার্ডের জন্যে অ্যাপ্লাই করার নানান রকমের বিকল্পও রয়েছে।

এখানে আপনি ধাপে ধাপে ক্রেডিট কার্ড বানানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন –

১. আপনার ক্রেডিট কার্ড বেছে নিন:

বিভিন্ন ব্যাঙ্কই অনেক ধরণের ক্রেডিট কার্ড বানানোর অপশন দেয়।

আপনার বাছা কার্ডটি আপনার প্রত্যাশিত ব্যবহার, প্রয়োজনীয়তা ও আপনার চাওয়া সুবিধাগুলোর উপর নির্ভর করে।

যেমন – কিছু ক্রেডিট কার্ড ভ্রমণকারীদের জন্য ভালো, কিছু কার্ড আবার বিনোদনের জন্য তৈরী করা হয় কিংবা কিছু কার্ড আবার ব্যবসার জন্য সেরা কাজ করে।

আপনার পছন্দমতো কার্ড বেছে নেওয়ার পর আপনার যোগ্যতা ও ক্রেডিট কার্ডের আবেদনের সঙ্গে আপনাকে যেসব নথিগুলো দিতে হবে, সেইসব সম্পর্কে আপনার ব্যাঙ্কের সাথে কথা বলুন।

২. ক্রেডিট স্কোর পরীক্ষা করুন:

ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করার পূর্বে আপনার ক্রেডিট স্কোর চেক করাটা জরুরি।

এতে, আপনি আপনার কার্ডের থেকে কী ধরনের সুদের হার পেতে পারেন ও আপনি কোনো ধরণের পুরস্কারের যোগ্য কিনা; সে সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানতে পারবেন।

বর্তমানে, ৭৫০ বা তার উপর ক্রেডিট স্কোর থাকাটা আবশ্যক বলে মনে করা হয়।

অল্প সময়ের মধ্যে বেশি পরিমাণে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার অর্থ হল, একাধিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদন তৈরী করা; যা আপনার ক্রেডিট স্কোরকে কমিয়ে দিতে পারে।

৩. আপনার নথিগুলো প্রস্তুত করুন:

ক্রেডিট কার্ড বানানোর জন্যে যেকোনো ব্যাঙ্ক সাধারণত আপনার পরিচয়, ঠিকানা ও আয়ের প্রমাণ চাইবে৷

আপনার যদি আপনার ব্যাংকে ইতিমধ্যেই একটা অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে এইসব প্রমাণপত্র নাও লাগতে পারে।

আপনি অনলাইনে কিংবা কোনো এটিএম-এ এই কার্ডের জন্যে আবেদন করতে পারেন।

নাহলে, আপনার প্রয়োজনীয় নথিগুলো নিয়ে আপনার নিকটস্থ ব্যাংকের শাখায় যেতেও পারেন।

একটি ক্রেডিট কার্ড আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিগুলো হল –

  • ফর্ম ১৬
  • পূরণ করা আবেদনপত্র
  • পরিচয়ের প্রমাণপত্র (আধার, পাসপোর্ট, প্যান, ইত্যাদির কপি)
  • বাসস্থানের প্রমাণ (প্যান, আধার, ইউটিলিটি বিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইত্যাদির কপি)
  • ব্যাংক বিবরনী
  • সর্বশেষ বেতন স্লিপ
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • আপনার যদি নিজের ব্যবসা থাকে বা আপনি যদি স্বনির্ভর হন, তবে আপনাকে জমা দিতে হবে-
  • ব্যবসার প্রমাণ
  • আয়ের প্রমাণ
  • হিসাব বিবরণী

(Note:- দেশ এবং জায়গা বিশেষে প্রয়োজনীয় নথিগুলো আলাদা আলাদা হতে পারে).

৪. ক্রেডিট কার্ডটিকে সক্রিয় করুন:

আপনার ক্রেডিট কার্ডের আবেদন মকুব হয়ে গেলে ব্যাংকের তরফ থেকে এটি আপনার যোগাযোগের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়।

সাধারণত, আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পর, যেকোনো ব্যাংক ৭ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় নেয়, আপনার সমস্ত নথিগুলো যাচাই করার জন্যে।

যাচাইকরণ সফলভাবে পূরণ করার পর, ব্যাংক আপনার ক্রেডিট কার্ড তৈরী করে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

এই ক্রেডিট কার্ডটি নিতে গেলে আপনাকে একটি স্বাক্ষর করতে হবে ও আপনার পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।

এই কার্ড ব্যবহার করার জন্যে চিঠির মাধ্যমেই আপনাকে একটি পিন (PIN/ব্যক্তিগত পরিচয় নম্বর) পাঠানো হয়। 

যেখানে গ্রীন পিনটি ব্যাংকে আপনার রেজিস্টার করা মোবাইল নম্বরে পাঠানো হয়।

এই গ্রীন পিনটি আপনার ক্রেডিট কার্ডে করা যেকোনো লেনদেন প্রমাণীকরণের জন্য দরকার লাগে।

আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ড ও পিন পাওয়ার পর, এই পিনটি পরিবর্তন করতে আপনার নিকটতম এটিএম-এ যেতে পারেন।

আপনার ক্রেডিট কার্ডের আবেদন অনুমোদিত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে,অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে।

বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বা কার্ডের নানান ধরণের পলিসি থাকতে পারে।

আপনি যদি ব্যাঙ্কের দ্বারা নির্ধারিত প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হন, তখন ব্যাংক আপনার আবেদনটিকে বাতিল করে দিতে পারে।

উপরিউক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে, আপনি কোনোরকম সমস্যা ছাড়াই খুব সহজে নিজে থেকেই ক্রেডিট কার্ড বানাতে পারবেন।

আমাদের শেষ কথা,,

আমাদের আজকের ক্রেডিট কার্ড তৈরী করার পদ্ধতি নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।

লেখাটি পছন্দ হলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, সেটাও কমেন্ট করে জানাতে পারবেন।

শেষে, আর্টিকেলটি যদি সত্যি আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া পেজ গুলোতে শেয়ার করতে ভুলবেননা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button