আর্টিকেল

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ । আদর্শ প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

প্রতিবেদন লেখার  প্রয়োজনীয়তা

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম এবং উদাহরণ নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল। তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা সম্পূর্ণ স্পষ্ট ভাবে জানতে পারবেন যে কিভাবে প্রতিবেদন লিখতে হয় এবং প্রতিবেদন লেখার আগে কোন কোন বিষয় গুলো আপনার জানা দরকার।

দেখুন প্রতিবেদন লেখা সকলেরই জানা উচিত। কিভাবে সহজ সরল ভাবে প্রতিবেদন লেখা যায় ? তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েন।

তবে আর চিন্তা করার দরকার নেই, কয়েকটি ধাপ অনুসরন করে আপনিও যেকোনো প্রতিবেদন লিখে ফেলতে পারেন।

তবে তার আগে জানতে হবে প্রতিবেদন কী, এর উদ্দেশ্য, বৈশিষ্ট্য, প্রয়োজনীয়তা গুলোর বিষয়ে।

প্রতিবেদন মানে কি ?

প্রতিবেদন কথাটি প্রতি এবং বেদন এই দুই শব্দ দিয়ে গঠিত, প্রতি + বেদন।

এখন বলা যেতে পারে যে প্রতি উপসর্গ যোগে বেদন হল প্রতিবেদন। বেদন কথার আক্ষরিক অর্থ জ্ঞাপন।

তাহলে প্রতিবেদনের অর্থ হল কারোর প্রতি (পাঠকের প্রতি) কিছু জ্ঞাপন।

তবে এর প্রকৃত সংজ্ঞা কিছুটা আলাদা। সেটা কি রকম, দেখে নেওয়া যাক —-

“প্রতিবেদন হলো এক বিশেষ প্রকার নথি, যা একটি নির্দিষ্ট পাঠকের জন্য একটি সংগঠিত বিন্যাসে তথ্য উপস্থাপন করে।”

যদিও অনেকক্ষেত্রে মৌখিক ভাবেও প্রতিবেদন প্রদান করা যেতে পারে, তবে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন বেশিরভাগই লিখিত  আকারে হয়ে থাকে।

প্রতিবেদনের প্রকারভেদ

মূলয প্রতিবেদন দুই প্রকারের। যথা –

১. সংবাদ প্রতিবেদন

২. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন

৩. সম্পাদকীয় প্রতিবেদন

সংবাদ প্রতিবেদন –

সংবাদপত্রে প্রকাশের উদ্দেশ্যে যে প্রতিবেদনগুলি লিখিত হয়, সেই গুলিকে  সংবাদ প্রতিবেদন বলে।

এক্ষেত্রে  নিজস্ব সংবাদদাতা ও প্রতিবেদক থাকে এবং বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী সংবাদ সংস্থার মাধ্যম, ওয়েবসাইট, বিভিন্ন গ্রন্থ  এসব থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন –

আবার যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক কার্যাবলি, ঘটনা বা অবস্থা, মিটিং এর সিদ্ধান্ত ইত্যাদি যাচাই করে সেই সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয়, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে।

এই ধরনের প্রতিবেদন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়।

উদাহরণস্বরূপ, কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক মিটিং অথবা গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন, কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে গোলযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর ষান্মাসিক, বার্ষিক কিংবা দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন ইত্যাদি।

তবে চলতি ভাষায় এই জাতীয় প্রতিবেদনকে নোটিশ বলা হয়ে থাকে।

নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সিদ্ধান্ত এতে লিপিবদ্ধ থাকে এবং উপস্থিত সকলে রেভোলিউশন খাতায় সই করে সিদ্ধান্তে সহমত জ্ঞাপন করে।

সম্পাদকীয় প্রতিবেদন –

যখন কোনো সংবাদ পত্র, প্রকাশনা, সংগঠন, ক্লাব, প্রভৃতির সম্পাদক নিজের ব্যক্তিগত মতামত, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি প্রতিবেদনের আকারে প্রকাশ করেন তখন তাকে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন বলে।

এছাড়াও আরো বিভিন্ন প্রকার প্রতিবেদন হয়ে থাকে। 

  • বার্ষিক প্রতিবেদন
  • বইয়ের প্রতিবেদন
  • হিসাবের প্রতিবেদন
  • দোকানের প্রতিবেদন
  • ঋণের প্রতিবেদন
  • পরিদর্শনের প্রতিবেদন
  • সামরিক প্রতিবেদন
  • পুলিশি প্রতিবেদন
  • আইনি প্রতিবেদন
  • তদন্ত প্রতিবেদন
  • মূল্যায়ন প্রতিবেদন
  • কর্ম সংস্থানের প্রতিবেদন
  • শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন
  • খেলাধুলা সংক্রান্ত প্রতিবেদন
  • আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন
  • বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন
  • জন সংখ্যার প্রতিবেদন

একটি আদর্শ প্রতিবেদনের  বৈশিষ্ট্যসমূহ

যেকোনো প্রতিবেদন আদর্শ প্রতিবেদন নয়। কয়েকটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট থাকলে তবেই তাকে আদর্শ প্রতিবেদন বলা চলে।

নিম্নে তেমনি কয়েকটি প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল,

ক) পরিকল্পিত রূপরেখা:-

গঠনকাঠামোর দিক থেকে প্রতিবেদনের নিজস্ব কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

একটি আদর্শ প্রতিবেদন তৈরির সময় একটি রূপরেখা, চালচিত্র তৈরি করে নেওয়া হয়, না হলে উক্ত প্রতিবেদনের সৌন্দর্য ও পরিবেশনে ঘাটতি দেখা যায়। যেমন, প্রতিবেদনটি কোন প্রকারের হবে তা ভেবে নেওয়া, কয়টি অংশে তা লেখা হবে, কি কি শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে, তারিখ এবং সময় ঠিকঠাক দেওয়া হয়েছে কিনা। মূল কাঠামোটি কেমন হবে ইত্যাদি ভেবে নিয়ে তবেই প্রতিবেদন লেখা উচিত।

প্রতিটি ভাগ যথাযথ ভাবে লিখতে পারলে তবেই প্রতিবেদনটি সর্বাঙ্গিক ভাবে সুন্দর হবে।

খ) যথাযথ ও সংহত ভাষা:-

প্রতিবেদন লেখার সময় খেয়াল রাখতে হবে ভাষা যেন সহজ, সরল এবং বৈজ্ঞানিক হয়।

প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তুটিকে সুন্দর  অথচ সহজ ভাবে প্রকাশ করতে পারাটাই সবথেকে কঠিন।

প্রতিবেদনের বিষয়ের বাইরে যেন  বাড়তি, অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য যোগ করা না থাকে।

গ) বস্তুনিষ্ঠ:-

আদর্শ প্রতিবেদনকে বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। অর্থাৎ মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছাড়া কার্যকর প্রতিবেদনে  অভিরঞ্জন বা অতিশয়োক্তি শব্দ, তথ্য থাকতে পারবে না, আবার প্রতিবেদনটি কোনোভাবেই পক্ষপাতমূলক হওয়া যাবে না।

প্রতিবেদনের লক্ষ্য হবে শুধুমাত্র প্রকৃত ঘটনা, ও  সঠিক তথ্য যথাসম্ভব নিরাবেগ, সহজ, ভাষায় স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা।

ঘ) সহজবোধ্যতা:-

একটি সধারণত প্রতিবেদন এমন হবে যেন তা সব শ্রেণীর মানুষ পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে।

তাই প্রতিবেদনের ভাষা সহজ, সরল ও স্পষ্ট হবে।

প্রতিবেদনে প্রতিটি অনুচ্ছেদ প্রাসঙ্গিক বাক্য দ্বারা আরম্ভ করা হতে হবে এবং প্রতিটি অনুচ্ছেদে আলাদা আলাদা বিষয় সুসংহভাবে পরিবেশিত করতে হবে।

বিভিন্ন তথ্য বিভিন্ন শিরোনাম প্রয়োগের মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে।

ঙ) সংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য:-

প্রত্যেকটি প্রতিবেদনের একটি সুনির্দিষ্ট  উদ্দেশ্য থাকে, তাই প্রতিবেদনগুলোকে এমনভাবে লিখতে হয়, যাতে তার মূল বা সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থেকে তা  বিচ্যুত না হয়।

প্রতিবেদন লেখার  প্রয়োজনীয়তা:

১| প্রশাসনিককার্য, ব্যবসা -বানিজ্য, আইন আদালত এবং অন্যান ক্ষেত্রে প্রতিবেদনের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

২| মানুষের দৈনিক জীবনে ও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিবেদনের চাহিদা।

প্রতিবেদনের মাধ্যমে কোন বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহন, সংগঠনের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত, বিভিন্ন নির্দেশনা, বিভিন্ন ফলাফল নিরূপণ, সমন্বয় সাধন ইত্যাদি কাজে প্রতিবেদন ব্যবহৃত হচ্ছে।

৩| বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গবেষনা মূলক লেখা প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।

৪| খেলাধুলার খবরাখবর, আইনি জটিলতা, ইত্যাদি ও আজকাল প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।

প্রতিবেদনের বিভিন্ন অংশ

প্রতিবেদনের তিনটি অংশ হল :

  1. প্রারম্ভিক অংশ
  2. প্রধানঅংশ
  3. পরিশিষ্ট

চলুন, প্রত্যেকটি অংশের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনেনেই।

১. প্রারম্ভিক অংশ:

প্রতিবেদনের প্রারম্ভিক অংশে থাকে প্রতিবেদনের মুল শিরনাম, প্রাপকের নাম, ঠিকানা, সূত্র বিষয়ের সংক্ষিপ্ত সার কথা।

২.  প্রতিবেদনের প্রধান অংশ:

প্রতিবেদনের প্রধান অংশে থাকে মূল বিষয় সম্পর্কে ভূমিকা, মূলপ্রতিবেদন, উপসংহার ও সুপারিশ।

 ৩. পরিশিষ্ট অংশ:

প্রতিবেদনের পরিশিষ্টে থাকে তথ্য নির্দেশ, গ্রন্থ বিবরণী, কমিটির তালিকা ও আনুসঙ্গিক বিষয়াদি।

প্রতিবেদন রচনার পদ্ধতি  সম্পর্কে অবহিত থাকলে উত্তম প্রতিবেদন প্রণয়ন করা সম্ভব।

এসব পদ্ধতির মধ্যে আছে প্রতিবেদনের আকার, শ্রেণী, বৈশিষ্ট্য, রীতিনীতি ও বিন্যাস।

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম । প্রতিবেদন রচনার নিয়ম

বাংলা খবরের কাগজের মধ্যে আমরা যে প্রতিবেদন গুলি দেখে থাকি তার মধ্যে প্রথম সারির পত্রিকার প্রতিবেদন গুলিকে আদর্শ সংবাদ-প্রতিবেদন বলা যায়। পত্রিকার মূখ্য খবরগুলি খুঁটিয়ে পড়লেই  বুঝতে পারা যাবে প্রতিবেদন লেখার পদ্ধতি।

তবে প্রতিবেদন রচনার জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে।

এই নিয়মগুলি কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নয়, কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করে আমরা প্রতিবেদনটি কে সুন্দর করে তুলতে পারি।

এখানে এমন কয়েকটি নিয়ম দেখানো হল যেগুলি অনুসরণ করলে সহজেই একটি ভালো প্রতিবেদন লেখা সম্ভব হবে।

নামকরণ বা হেডলাইন

প্রতিবেদনের অবশ্য‌ই একটি নামকরণ থাকবে। নামকরণটি হতে হবে আকর্ষণীয় যা সহজে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

নামকরণটি আকর্ষণীয় হলে তবেই পাঠক প্রতিবেদন পুরোটা পড়তে আগ্রহ বোধ করবেন।

তবে, সাধারন নামকরণের প্রতিবেদন সেইভাবে সমাদর লাভ করবে না।

নামকরণের মধ্যে বিষয়ের মূল প্রতিপাদ্যটি যেন সরাসরি বোঝা যায়।

কয়েকটি আদর্শ নামকরণের উদাহরণ হল, “শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে স্কুলেই রক্তদান শিবির”, “বন্যা কবলিতদের পাশে সহায়তায় এগিয়ে এল ক্লাব”, “কেদারনাথ থেকে ফেরার পথে বাস-দুর্ঘটনা: আহত দশ” ইত্যাদি।

নামকরণের শেষে পূর্ণচ্ছেদের প্রয়োগ চলবে না তবে প্রয়োজনে শেষে প্রশ্ন চিহ্ন বা বিস্ময়চিহ্ন দেওয়া যেতে পারে।

নামকরণের মাঝে কমা চিহ্ন দরকার পড়লে দেওয়া  যায়।

প্রতিবেদক-পরিচিতি, স্থান ও কাল

সংবাদ-প্রতিবেদনের হেডলাইনের পর মূল লেখার প্রথমেই প্রতিবেদকের নাম, পরিচয়, তারিখ ও প্রতিবেদন রচনার স্থান  লিখতে হয়‌।

এই অংশগুলি কমা চিহ্ন দ্বারা পৃথক করা থাকে। যেমন: “নিজস্ব সংবাদদাতা, ১২ই জানুয়ারি, ২০২২, বাঁকুড়া:”

প্রতিবেদকের পরিচিতির শেষে একটি কোলন চিহ্ন(:) দিতে হবে। ‘

সূচনা

প্রতিবেদনের সূচনা খুব‌ই সংক্ষিপ্ত হবে। সূচনার প্রথম দুটি বাক্যের মধ্যেই বিষয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়ে দিল ভাল হয় এবং সূচনার দৈর্ঘ্য ওই দুই একটি বাক্যেই সীমাবদ্ধ হবে।

সূচনা অংশটি আলাদা অনুচ্ছেদ হবে না, মূল প্রতিবেদনের সাথেই লিখতে হবে।

প্রতিবেদনে আলাদা করে অনুচ্ছেদের প্রয়োজন হয় না।

মূল প্রতিবেদন

সংবাদ প্রতিবেদনের সূচনার ছোট্ট অংশটি লেখা হয়ে গেলে মূল ঘটনার বিবরণ দিতে হবে সহজ সরল ও সর্বজন-বোধ্য ভাষায়।

প্রতিবেদনে ভাষার মারপ্যাঁচ ব্যবহার করা অনুচিত, কারণ এই ধরনের প্রতিবেদন লেখা হয় খবরের কাগজের সাধারণ পাঠকদের জন্য;

ঘটনার বিবরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি লিখতে হবে তা হল:

ঘটনাটির স্থান, কাল, কোথায়, কবে কখন এই ঘটনাটি ঘটল তা লিখতে হবে।

ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে আর আশেপাশে বিখ্যাত স্থান থাকলে তা লিখতে হবে।

ঘটনাটির সম্পূর্ণ কার্য-কারণ অর্থাৎ একটি ঘটনা কেন ঘটল, ঘটনার কারণ জানা থাকলে তা সরাসরি লিখতে হবে।

ঘটনার পিছনে একাধিক সম্ভাব্য কারণ থাকলে প্রতিটি কারণের উল্লেখ করতে হবে।

ঘটনার ফলাফল

ঘটনার ফল ভালো বা মন্দ, দুইই হতে পারে। দুই প্রকার ফল‌ই বিস্তারিত জানাতে হবে।

এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য কিছু তথ্য দিতে হবে। তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের সামঞ্জস্য থাকা খুবই জরুরি।

ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় মানুষের মতামত বা প্রত্যক্ষদর্শীর মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

প্রতিবেদনকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য স্থানীয় মানুষ অথবা প্রত্যক্ষদর্শীর মন্তব্য কোটেশন হিসাবে দেওয়া যায়।

এক্ষেত্রে বক্তার প্রকাশ করা যেতে পারে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই বক্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলে বা বক্তার নাম প্রকাশ পেলে তার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে   ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী/ব্যবসায়ী/প্রত্যক্ষদর্শী/শিক্ষক/ছাত্র বা জনৈক কর্মচারী, ব্যবসায়ী, ছাত্র, শিক্ষক’ ইত্যাদি শব্দ লিখে প্রতিবেদন লিখতে হবে।

বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি যেমন স্থানীয় নেতা, উচ্চ আধিকারিক, পুলিশ, আইনজীবী ইত্যাদি মানুষের বক্তব্য, স্থানীয় মানুষের বক্তব্যের পর সংগ্রহ করা যেতে পারে।

মানুষের প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করা যেতে পারে।  ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে কমপক্ষে দুই বা তিনজনের বক্তব্য গ্রহন করা যেতে পারে।

ঘটনা অনুসারে কর্তাব্যক্তিরা  হতে পারেন পঞ্চায়েত প্রধান, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অফিসার(O.C.), পুলিশ সুপার, বিধায়ক, মন্ত্রী,  জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, জেলা বনাধ্যক্ষ, হাসপাতাল সুপার, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, বিশিষ্ট আইনজীবী, বিচারপতি প্রভৃতি‌।

প্রতিবেদক নিজের মূল্যায়ন

মূল প্রতিবেদনের শেষ অংশে সংক্ষেপে তা যোগ করতে পারেন, কিন্তু এই মূল্যায়ন বিস্তারিত যেন না হয় দুই বা তিন লাইন যথেষ্ঠ।

প্রতিবেদকের  মতামত যেন কখনোই পাঠকের উপর চাপিয়ে দেওয়া না হয় বরং প্রতিবেশনের মধ্যে দিয়ে পাঠককে নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং মতামত গড়ে তুলতে সাহায্য করাই হবে এই মূল্যায়নের উদ্দেশ্য।

 

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে, “প্রতিবেদন লেখার নিয়ম” বা “কিভাবে প্রতিবেদন লিখতে হয়” এবং একটি আদর্শ প্রতিবেদনের  বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি, সবটা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করছি, আমাদের আর্টিকেল থেকে জ্ঞান নিয়ে আপনারা একটি সেরা প্রতিবেদন রচনা করতে সক্ষম হতে পারবেন।

যদি আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button