স্মার্টফোনে অ্যান্টিভাইরাস সত্যিই কি প্রয়োজনীয়?
ভাইরাস থেকে বাঁচতে অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া নিজের কিছু সতর্ক থাকার টিপস
আজকের দিনে কম্পিউটারের জন্য অ্যান্টিভাইরাস সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, বলতে পারেন যে অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু স্মার্টফোনে অ্যান্টিভাইরাস এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? এই প্রশ্নের রহস্য ভেদ করতেই আজ আমার এই পোস্ট লেখা। আমরা বিষয়টি নিয়ে তো বিস্তারিত আলোচনা করবোই এবং পাশাপাশি জেনে নেব কীভাবে আপনার স্মার্টফোনকে সকল অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় হতে অধিক সুরক্ষা প্রদান করা যায়। তো চলুন সকল সমস্যা গুলো ঠিক করে নেওয়া যাক।
স্মার্টফোনে অ্যান্টিভাইরাস
ভাইরাস নির্মাতাদের একটি কমন ফ্যাক্টর হলো এরা সবসময় এমন অপারেটিং সিস্টেমকে লখ্য করে ভাইরাস তৈরি করে যা বহুল প্রচলিত। কারন এতে ভাইরাস নির্মাতাদের ইনভেস্টমেন্ট ফেরত আসতে সহজ হয়, এবং একসাথে অনেক মুনাফা কামাতে সক্ষম হয়। আর এই কারনেই ম্যাকে অনেক কম ভাইরাস হয়, কেনোনা কেবল কতিপয় মানুষ ম্যাক ব্যবহার করে। তাই ভাইরাস নির্মাতাগন বেশির ভাগ সময় উইন্ডোজ কম্পিউটারকে লখ্য করে ভাইরাস তৈরি করে। কারন এতে এদের সময় এবং ইনভেস্টমেন্ট এর সঠিক কদর পায়। আর এই কারনেই উইন্ডোজ পিসিতে আপনারা সবচেয়ে বেশি ভাইরাস দেখতে পান। যদিও ম্যাকেও ভাইরাস থাকে কিন্তু তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। আর খুব বেশি হলে ০.৫% মানুষ লিনাক্স ব্যবহার করে তাই এই অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ভাইরাস বানিয়ে অবশ্যই তারা সময় নষ্ট করতে চাইবে না।
কিন্তু এই বিষয়টি যখন স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে আসে, তখন বিষয়টা সামান্য একটু আলাদা হয়ে দাঁড়ায়। কারন আজকের দিনে প্রায় প্রত্যেকের কাছে একটি করে স্মার্টফোন আছে। কিন্তু একটি কম্পিউটার যেভাবে ভাইরাস দ্বারা করা হয় সেভাবে মোবাইলকে আক্রান্ত করা যায় না। দেখুন যদি কম্পিউটারের কথা বলা হয় তবে কম্পিউটার সফটওয়্যার ডাউনলোড করার জন্য কোন নির্দিষ্ট সোর্স নেই। আমরা শুধু মাত্র কোন সফটওয়্যার খুঁজতে গুগল করি আর গুগল আমাদের যে সাইটে নিয়ে যায় সেখান থেকেই সফটওয়্যার ডাউনলোড করি। আমরা বেশির ভাগ সময় পিসির জন্য পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। তো এমন অবস্থায় ভাইরাস মেকাররা অতি সহজেই এই সকল সফটওয়্যারের সাথে ভাইরাস যুক্ত করে দিতে পারে। এবং আপনি হয়তো বুঝতেই পারেন না যে কীভাবে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করলো। কিন্তু স্মার্টফোনে অ্যাপস ডাউনলোড করা হয় নির্দিষ্ট কোন অ্যাপ স্টোর থেকে। যদি সবচাইতে বড় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড এর কথা বলি তো শুধু এখানেই অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য অলটারনেটিভ পদ্ধতি থাকে। কিন্তু আইওএস অথবা উইন্ডোজ ফোনে এদের নিজস্ব স্টোর ব্যবহার করা ছাড়া কোন অপশন থাকে না। অ্যান্ড্রয়েড এর সবচাইতে বড় মার্কেটপ্লেস হলো গুগল প্লে এবং আরেকটি অ্যামাজন অ্যাপ স্টোর।
কখনো যদি কোন কারণে এই সকল মার্কেটপ্লেসে ভাইরাস আক্রান্ত কোন অ্যাপস পাওয়া যায় তবে সাথে সাথে তা অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। যাতে কেউ তা ডাউনলোড করতে না পারে। হয়তো কেউ চালাকি করে ইমেইল এর মাধ্যমে আপনার অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস কে আকান্ত করাবার চেষ্টা করতে পারে। অনেক সময় খারাপ ব্যাক্তিরা কোন সুনামধন্য পেইড অ্যাপ এর ইমেইল স্পুফ করে আপনার কাছে মেইল পাঠাতে পারে যে, “অমুক অ্যাপ আপনার জন্য ফ্রি, এক্ষুনি ডাউনলোড করতে এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন” ইত্যাদি। কিন্তু আপনি যদি এই ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে পারেন, যেমন ধরুন তৃতীয়পক্ষ কোন লিঙ্ক বা সাইট থেকে যদি কোন অ্যাপ ইন্সটল না করেন তবে আপনাকে ভাইরাস আক্রান্ত করানো এতটাও সহজ হবে না।
সুতরাং মোবাইলে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সত্যিই অনেক নিম্ন। কিন্তু তারপরেও আক্রান্ত হতে পারে। তাহলে কি এখনো স্মার্টফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করার মূল্য রাখে? এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর পাবার আগে চলুন আরো কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক। অ্যামেরিকাতে করা একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে যে, মাত্র ১% অ্যামেরিকান স্মার্টফোন গুলো ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পরিসংখ্যানটি বিভিন্ন। যেমন পূর্ব ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশ গুলোতে ভাইরাস আক্রান্ত স্মার্টফোনের সংখ্যা বেশি। আমি সত্যিই জানিনা যে আমাদের মহাদেশে মোবাইল ভাইরাস এর প্রকোপ কেন এতো বেশি।
তাছাড়া আপনারা হয়তো লখ্য করে থাকবেন যে বেশি ভাগ মোবাইল অ্যান্টিভাইরাস গুলোতে এক্সট্রা ফিচার দেওয়া থাকে। কারন অ্যান্টিভাইরাস নির্মাণকারিরা এই বিষয়টি ভালো করে জানেন যে শুধু অ্যান্টিভাইরাস ফিচারটি টাকা দিয়ে কেনার তেমন বিশেষ মূল্য রাখে না। কেনোনা আমি আগেই বলেছি আপনি যদি সামান্য একটু বিষয়ের উপর লখ্য রাখেন তবে আপনার স্মার্টফোন ভাইরাস আক্রান্ত করানো অনেক মুশকিল হবে। তাই তারা এর ভেতর পাসওয়ার্ড ব্যাকআপ, ফোন থেফট প্রিভেনশন, কল ব্লকিং ইত্যাদির মতো কিছু এক্সট্রা ফিচার ঢুকিয়ে একে টাকা দিয়ে কেনার উপযোগী করে তোলে। কেনোনা আমার মতে স্মার্টফোনে অ্যান্টিভাইরাস এতটাও গুরুত্বপূর্ণ নয় যতটা গুরুত্ব রাখে পিসি বা ম্যাক এর ক্ষেত্রে।
কিন্তু ২০১৩ সালের একটি রিপোর্টে জানা গেছে যে, সকল মোবাইল ওএস এর মধ্যে প্রায় ৯৭% ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আক্রান্ত করে। তাই আপনি যদি আইওএস বা উইন্ডোজ মোবাইল ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য চিন্তার কোন কারন নেই। এবং আপনাকে অবশ্যই কোন এন্টিভাইরাস ডাউনলোড বা কেনার কোন প্রয়োজন নেই। আমার মতে আইটিউনস মার্কেটপ্লেসটি এই ব্যাপারে অনেক সজাগ যে, তারা কোন অ্যাপকে তাদের মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ অধিকার দিচ্ছে। কিন্তু গুগল প্লে স্টোর অনেক সময় অনেক সদয়ের মতো আচরন করে, ফলে অনেক সময় ভাইরাস আক্রান্ত অ্যাপ গুলোকে সনাক্ত করতে পারে না। পরে সেগুলোকে সনাক্ত করে স্টোর থেকে মুছে ফেলে হয়তো কিন্তু সে অ্যাপ গুলো আগেই অনেক ক্ষতি সাধন করে ফেলে। আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই খেয়াল করেছেন যে প্লে স্টোরে কাজের চাইতে অকাজের অ্যাপসই বেশি দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে অ্যাপেল তাদের অ্যাপ স্টোর থেকে অনেক অ্যাপ শুধু এই কারণে রিজেক্ট করে থাকে কারন সেগুলো তেমন কাজের না।
আমি গুগল প্লে স্টোরের নিন্দা করছি না অবশ্যই। তারা অবশ্যই তাদের প্রত্যেকটি অ্যাপকে স্ক্যান করে নিশ্চিত করে যে সেগুলো কোন পরিচিত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত নয়। তাই টেকনিকালি প্লে স্টোর ব্যবহার করলে আপনি অবশ্যই নিরাপদ থাকবেন। কেনোনা গুগল তাদের সিস্টেমকে প্রতিনিয়ত আপডেট করার মাধ্যমে আরো নিরাপদ করার চেষ্টা করেই চলেছে। আবার যদি আপনি অ্যামাজন স্টোর ব্যবহার করে থাকেন তবেও আপনি নিরাপদ। কেনোনা তারাও একই ভাবে প্রত্যেকটি অ্যাপ এর সুরক্ষা চেক করে এবং মার্কেটপ্লেসে সুরক্ষা প্রদান করার জন্য তাদের বিস্তর আকারের সুরক্ষা বাবস্থা আছে।
তবে নন গুগল প্লে স্টোর বা নন অ্যামাজন অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করা অ্যাপ বা যেকোনো তৃতীয়পক্ষ অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করা অ্যাপ আপনাকে সুরক্ষা ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই শুধু মাত্র গুগল প্লে স্টোর, অ্যামাজন স্টোর এর মতো বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস থেকে অ্যাপ ইন্সটল করা প্রয়োজন। তৃতীয়পক্ষ অ্যাপ স্টোর থেকে বা কারো কাছ থেকে কপি করে কোন অ্যাপ ব্যবহার করা একদমই উচিৎ নয়। হতে পারে সেগুলো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। আর যারা আইওএস ব্যবহার করেন তাদের তো কোন চয়েজ থাকেনা। তাদের অবশ্যই আইটিউন্স থেকে অ্যাপ ইন্সটল করতে হয়। ফলে আইফোন ব্যবহারকারীগন সত্যিই অনেক কম ঝুঁকির সম্মুখীন হন।
এখন আসা যাক, আজকের মূল আলোচ্য বিষয়ের উপরে। সত্যি কি আপনার ফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যাবহারের প্রয়োজন আছে? আমার মতে উত্তরতি হচ্ছে, না! আপনার ফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা নেই। শুধু মাত্র একটি সংকল্প করুন যে, নন গুগল প্লে বা নন অ্যামাজন স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না। কোন তৃতীয়পক্ষ সোর্স থেকে বা পেইড অ্যাপ ফ্রিতে ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন। তবে আপনার স্মার্টফোন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার সুযোগ অবিশ্বাস্য ভাবে কমে যাবে।
শুধু যে ভাইরাস আপনার স্মার্টফোনের সুরক্ষা নষ্ট করতে পারে তা কিন্তু নয়। আপনার চারপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন খারাপ ব্যাক্তির জন্যও আপনার ফোনের সুরক্ষা ভঙ্গ হতে পারে। এবং এতে আপনার স্মার্টফোনটির খারাপ হওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি আপনার ব্যক্তিগত জীবনেরও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই স্মার্টফোনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কিছু ব্যাপার লখ্য রাখা উচিৎ। তো চলুন সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ভাইরাস থেকে বাঁচতে অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া নিজের কিছু সতর্ক থাকার টিপস
আমি আগেই বলেছি নন প্লে স্টোর বা অ্যামাজন স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়া ফেক মেইল থেকেও সাবধান থাকা উচিৎ। মেইলে যদি তারা প্লে স্টোর লিঙ্ক সরবরাহ করে তবেই সেখানে ক্লিক করে সেই অ্যাপটি ইন্সটল করবেন। আর যদি কোন তৃতীয়পক্ষ মিরর লিঙ্ক দেওয়া হয় তবে সেখান থেকে বিরত থাকাই হবে বুদ্ধিমানের পরিচয়। তাছাড়া কপি করে অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
অনেক ভাইরাস আছে যারা শুধু মাত্র রুট করা ফোনে তাদের ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। তাই নিরাপত্তার খাতিরে আপনার ফোনকে রুট করার আগে ভেবে শুনে তারপর রুট করুন। তাছাড়া রুট করার সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো ভালো করে জানার জন্য আমার এই পোস্টটি পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইল।
ব্যাস এই বিষয় গুলোর উপরে একটু লখ্য রাখার মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনকে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেন। এবং আপনার অবশ্যই কোন অ্যান্টিভাইরাস এর প্রয়োজন পড়বে না। তবে আপনি যদি অধিক সুরক্ষা সচেতনকারী এবং নিরাপত্তা বিষয়ে অনেক চিন্তনকারী হয়ে থাকেন তবে আপনি অ্যান্টিভাইরাস ডাউনলোড এবং কেনার মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন। এবং আপনার জন্য অ্যান্টিভাইরাস ব্যাবহারে অবশ্যই মূল্য রাখে। তবে আমার মতামত অনুসারে অবশ্যই একটি পেইড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। আমাকে বিশ্বাস করুন ফ্রী অ্যান্টিভাইরাসে আপনি বিন্দু মাত্র উপকৃত হতে পারবেন না। আবার অনেকে অনেক তৃতীয় পক্ষ সোর্স থেকে পেইড প্রোডাক্ট ফ্রীতে ডাউনলোড করে থাকে। আমার কথা শুনুন, এরকম টা কখনোয় করা উচিৎ নয়। কেনোনা অনেক সময় এই সকল অ্যান্টিভাইরাস নিজেই একপ্রকারের ট্রোজান ভাইরাস হতে পারে। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস, ম্যালওয়্যার সম্পর্কে জানতে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
নিরাপত্তার খাতিরে অবশ্যই ইনক্রিপশন ব্যবহার করুন
ইনক্রিপশন এখনকার দিনে সবচাইতে জনপ্রিয় একটি নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা। আমার মতে এটি অপশনাল কোন বিষয় নয় আপনার ফোনকে অবশ্যই ইনক্রিপশন করানো উচিৎ। কেনোনা আজকাল কার প্রায় সকল ফোনে এই অপশনটি থাকে। আইফোনে পিন লাগানোর পরে ডিফল্ট ভাবে সব কিছু ইনক্রিপটেড হয়ে যায়। এবং আমার জানা মতে অ্যান্ড্রয়েড এ মেনুয়ালি ইনক্রিপশন করাতে হয়। এবং প্রত্যেকটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ইনক্রিপশন সমর্থন করে। আবার অনেক মানুষ হয়তো এটা চিন্তা করে যে, “আমার ফোনে তো আমি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকেই না, তবে আমি কেন আমার ফোনকে ইনক্রিপশন করাবো”? আমি আপনাকে কারন গুলো বিস্তারিত বলে দেবো, যে কেন আপনার নিরাপত্তার খাতিরে আপনার ফোনটিকে ইনক্রিপশন করানো প্রয়োজনীয়।
দেখুন আপনার ফোন থেকে দুই ভাবে তথ্য চুরি করা সম্ভব। একটি হলো আপনার ফোনে ভাইরাস আক্রান্ত করিয়ে সকল ডাটা হাতিয়ে নেওয়া, এবং আপনার ফোনটি চুরি করে সেখান থেকে সকল ডাটা বের করে নেওয়া। ফোনটি যাতে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কেও না করাতে পারে তার সম্পর্কে এতক্ষণ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু আপনার ফোনটি যদি কেও চুরি করে করে নিয়ে যায় তবে সে অনেক সহজেই আপনার ফোন থেকে আপনার ম্যাসেজ, ফটোস, ইমেইলস, গুরুত্বপূর্ণ ফাইলস ইত্যাদি চুরি করতে পারবে। আপনি যদি পিন বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেও থাকেন তবে সেটিও তেমন নিরাপদ বাবস্থা নয়। কেনোনা আপনারা জানেন যে খারাপ ব্যাক্তিরা কোন না কোন উপায়ে পিন বা পাসওয়ার্ড সর্বদা বাইপাস করে ফেলতে পারে। তারা হয়তো আলাদা কোন বুটলোডার ইন্সটল করে সকল ডাটা হাতিয়ে নিতে পারে। তারপর আপনার সকল ডাটার সাথে কি কি হতে পারে তা আপনি হয়তো ভালো করেই জানেন। তারা আপনার সকল অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড চুরি করে নেবে যেখানে আপনি আগে থেকেই লগইন করে ছিলেন। আপনার ব্যাক্তিগত ফাইলস বা ডাটার সাথে অপব্যবহার করা হতে পারে। আর যদি আপনার ফোনকে ইনক্রিপশন করা থাকে তবে তারা ডাটা গুলো চুরি করলেও সেগুলো পড়তে পারবে না। এবং এক প্রকার ভাবে আপনার সকল ডাটা গুলো নিরাপদ থাকবে।
পিন বা পাসওয়ার্ড কখনোয় সুরক্ষিত নয়। বিশেষ করে ৪ অক্ষরের পিন। যেটাতে কেবল মাত্র ১০,০০০ পসিবল কম্বিনেশন থাকে। একটি সাধারন কম্পিউটার ব্যবহার করে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই পিন বাইপাস করা সম্ভব। তাছাড়া শুধু ফোন ইনক্রিপশন করালেই চলবে না। তার পাশাপাশি এসডি কার্ডও ইনক্রিপশন করানো প্রয়োজনীয়। তা না হলে আপনার আপনার ফোনকে কেও না নিয়ে শুধু এসডি কার্ড খুলে নিয়ে তার ফোনে প্রবেশ করিয়ে সকল ডাটা হাতিয়ে নিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি আপনার ফোন এবং এসডি কার্ডকে ইনক্রিপটেড করে রাখেন এবং কিছু সময় ভুল চেষ্টা করলে সব ডাটা মুছে যাওয়ার সিস্টেম সেট করে রাখেন তবে আপনাকে নিরাপত্তা নিয়ে আর কোন দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
আরো জানুনঃ ইনক্রিপশন কি? কীভাবে কাজ করে? কেন করা উচিৎ?
শেষ কথা
আশা করি আজকের আলোচ্য বিষয়ের উপর সহজ এবং সঠিক যুক্তি দিয়ে আলোচনা সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছি। হাঁ, সামান্য কয়েকটি বিষয়ের উপর বিশেষ খেয়াল রাখলেই ফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যাবহারের কোন প্রয়োজন পড়বে না। আপনি যদি এখনো অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে চান তবে নিচে কমেন্ট করে জানান কেন? তাছাড়া আপনার সকল ডাটার সুরক্ষার জন্য অবশ্যই ইনক্রিপশন ব্যবহার করুন। কেনোনা ইনক্রিপশন ব্যবহার না করার কোন কারন নেই। মনে করুন আপনার ফোনটি কোন ভাবে হারিয়ে গেলো, তো সেই অবস্থায় অন্তত আপনি আপনার ডাটা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। আমার কথা বিশ্বাস করুন বন্ধুরা, ইনক্রিপশন করানোর ফলে আপনার বিশাল মাথা বাথ্যা থেকে বেঁচে যেতে পারেন আপনি। তাই আপনারা যারা এখনো আপনাদের ফোনকে ইনক্রিপটেড করেননি তারা কমেন্টে মতামত জানান যে কেন? আর এসকল বিষয়ে আপনার যদি কোন আলাদা প্রশ্ন থাকে তবে তো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে হবে। অবশ্যই নিচের শেয়ার বাটন থেকে পোস্টটি শেয়ার করুন।