আমরা প্রত্যেকেই ফাস্ট ইন্টারনেট স্পীড পেতে পছন্দ করি, আর আজকের দিনের ট্যাস্ক গুলো ধীরেধীরে এতোবেশি হাইএন্ড হয়ে উঠছে যে, ফাস্ট ইন্টারনেট অনেকটা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্টিকেলের শুরুতেই বলে রাখছি, আপনার ইন্টারনেট প্রভাইডার থেকে আপনি টাকা দিয়ে যে স্পীড প্যাকেজ কিনেছেন, সেটার চেয়ে বেশি স্পীড পাওয়ার কোন পদ্ধতি এই আর্টিকেলে শেয়ার করা হয় নি। ধরুন আপনি আপনার প্রভাইডারকে প্রতি মাসে ২ মেগাবিট/সেকেন্ড কানেকশন স্পীডের জন্য টাকা দেন, এখন আপনি কোন ভাবেই সেটা ৫ মেগাবিট/সেকেন্ড বাড়াতে পারবেন না। —কিন্তু আপনি যদি আশানুরূপ স্পীড না পান, ধরুন আপনি ১০ মেগাবিট/সেকেন্ড প্ল্যানের জন্য টাকা খরচ করছেন, কিন্তু আপনি সেই স্পীড পাচ্ছেন না, তাহলে আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণই আপনার জন্য। সম্পূর্ণ আর্টিকেলে আমরা ইন্টারনেট স্পীড কম পাওয়ার সম্ভাব্য কারণ গুলো খুজে বেড় করার চেষ্টা করবো এবং ফিক্স করবো। তো চলুন শুরু করা যাক…
ন্টারনেট স্পীড টেস্ট
তো কিভাবে বুঝবেন, আপনি আপনার কানেকশন স্পীড কতোটুকু? অনেকে হয়তো ফাইল ডাউনলোড লাগিয়ে দিয়ে পরিক্ষা করার চেষ্টা করে, কিন্তু কোন ফাইল ডাউনলোড লাগিয়ে কখনোই আপনার আসল স্পীড নির্ণয় করা সম্ভব নয়। দেখুন, ফাইল ডাউনলোড স্পীড শুধু আপনার ইন্টারনেট কানেকশন স্পীডের উপর নির্ভর করে না, আপনি যে ইন্টারনেট সার্ভার থেকে ফাইলটি ডাউনলোড করছেন, তার স্পীডও গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনার ইন্টারনেট কানেকশনের আসল স্পীড ১০ মেগাবিট/সেকেন্ড, কিন্তু আপনি যে সার্ভার থেকে ফাইল ডাউনলোড করছেন তার মাক্স ট্র্যান্সফার স্পীড ৫ মেগাবিট/সেকেন্ড, এক্ষেত্রে আপনার ডাউনলোডিং স্পীড ৫ মেগাবিট/সেকেন্ড পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে। তাহলে আসল ইন্টারনেট স্পীড মাপার পদ্ধতি কি?
অনেকেই স্পীড টেস্ট ডট নেট সাইটটির সাথে পরিচিত থাকবেন হয়তো, এটি মুলত আপনার আসল স্পীড পরিমাপ করতে আপনাকে সাহায্য করবে। কিন্তু এখানেও কিছু ব্যাপার রয়েছে, যেগুলো আপনাকে নজরে রাখা প্রয়োজনীয়। স্পীড টেস্ট ডট নেট কিন্তু আপনার স্পীড নিজের সার্ভারের সাথে কানেক্ট করে টেস্ট করিয়ে দেয় না। এটি বিভিন্ন সার্ভারের সাথে আপনার কানেকশনকে কানেক্ট করে স্পীড পরিমাপ করে। যখন আপনি স্পীড টেস্ট শুরু করেন, ওয়েবসাইটটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি বেস্ট সার্ভার সিলেক্ট করে এবং স্পীড পরিমাপ করে। এখন হতে পারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিলেক্ট করা সার্ভারটি বিডিআইএক্স (বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ; এই অবস্থায় আপনার আইএসপি এবং টেস্ট সার্ভার বিশেষ লোকাল কানেকশনে কানেক্টেড থেকে হাই স্পীড ব্যান্ডউইথ ট্র্যান্সফার রেট প্রদান করে) কানেক্টেড, এতে আপনি কখনোই আসল স্পীড দেখতে পাবেন না। তাই স্পীড টেস্ট করার সময় বিভিন্ন সার্ভার সিলেক্ট করে আলাদা আলাদা টেস্ট রান করাতে হবে। এখন স্পীড টেস্ট করার পরে যদি দেখা যায়, আপনার স্পীড একেবারেই আশানুরূপ, মানে ১০ মেগাবিট/সেকেন্ডের জন্য টাকা দিচ্ছেন, আর সব টেস্টেই একই স্পীড এসেছে, তো চিন্তার কোনই কারণ নেই, বরং আপনাকে অভিনন্দন! আপনি চাইলে এই আর্টিকেল এখান থেকেই অনুসরণ করা বন্ধ করতে পারেন (আর আরো কুল আর্টিকেল গুলো পড়া শুরু করতে পারেন)।
কিন্তু আপনি যদি আশানুরূপ স্পীড না পান, তাহলেই সমস্যার শুরু। তবে আরো গভীর চিন্তা শুরু করার আগে, আমি বলবো দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সার্ভার ব্যবহার করে স্পীড টেস্ট করা। আপনার ইন্টারনেট প্রভাইডারের কাছে যখন কোন সময় বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তখন প্রভাইডারের স্পীডের অবস্থা ঢিল হয়ে যায়। ডেইলি বিভিন্ন সময়ের টেস্টে যদি দেখা যায়, কোন এক সময় আশানুরূপ স্পীড এবং কোন এক সময় কম স্পীড তাহলে এটা আপনার আইএসপির সমস্যা, তারা ঠিকঠাক ব্যান্ডউইথ স্পীড ম্যানেজ করতে পাড়ছে না। এবার মোবাইলটা হাতে নিন আর আইএসপি’কে ডায়াল করুন, আপনার সমস্যার কথা জানিয়ে ফিক্স করতে বলুন।
কিন্তু যদি দিনের বিভিন্ন সময় টেস্ট করার পরে দেখা যায়, স্পীড সবসময়ই কম সেক্ষেত্রে অনেক বিষয় ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। সবসময় স্পীড কম পাওয়ার পেছনে আপনার আইএসপি’র ও সমস্যা থাকতে পারে। তবে আইএসপি’র সমস্যা ডিটেক্ট করার আগে আপনাকে দেখতে হবে, আপনার হোম নেটওয়ার্কিং সিস্টেমে কোন সমস্যা নেই তো? আপনার ডিভাইজে যেমন- মোবাইল, ট্যাবলেট, পিসি, ল্যাপটপ তেও সমস্যা থাকতে পারে, আবার রাউটার থেকে কানেকশন সমস্যার কারনেও আপনার স্পীড স্লো হয়ে পড়তে পারে। চলুন একে একে সব টেস্ট করা যাক এবং সমাধান খোঁজা যাক।
ডিভাইজ
আপনার হোম নেটওয়ার্কে কানেক্টেড থাকা সকল ডিভাইজ গুলো থেকে স্পীড টেস্ট করুন এবং ফলাফল লক্ষ্য করুন। যদি দেখেন, কিছু ডিভাইজে ভালো স্পীড পাচ্ছে আবার কিছু ডিভাইজ খারাপ স্পীড পাচ্ছে, তাহলে এখানে আপনার আইএসপি’র কোন সমস্যা নেই। সমস্যা ঐ ডিভাইজ গুলোতে অথবা রাউটার থেকে ডিভাইজ কানেকশনের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। আবার যদি স্পীড টেস্ট করে দেখা যায় যে, সকল ডিভাইজ গুলোই স্লো স্পীড পাচ্ছে, তবে আপনার রাউটার এবং কানেকশন প্রবলেম হতে পারে। যদি আপনার হোম নেটওয়ার্কে থাকা মোবাইল ভালো স্পীড পায়, কিন্তু কম্পিউটার যদি ভালো স্পীড না পায় তবে আপনাকে কম্পিউটারের স্পীড ফিক্স করতে হবে। এখানে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার নির্ভর উভয় ধরনের সলিউসনের কথা আপনাকে ভাবতে হবে।
কম্পিউটারের ইন্টারনেট স্পীড ফিক্স
সফটওয়্যার
চলুন প্রথমে আপনার কম্পিউটারের সফটওয়্যার জনিত কারনে কিভাবে ইন্টারনেট স্পীড স্লো হতে পারে, সেই বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। আপনার কম্পিউটারটি যদি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চলে, তবে হতে পারে কোন উইন্ডোজ ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস, কিংবা উইন্ডোজ আপডেট আপনার ব্যান্ডউইথ স্পীড কমিয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনি উইন্ডোজের ডিফল্ট রিসোর্স মনিটর থেকে দেখতে পারেন, কোন প্রসেস গুলো অঝথা নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইথ স্লো করছে। আবার আপনি নেট ব্যাল্যান্সার নামক টুলটি ইন্সটল করেন, সেখানে সহজেই মনিটর করতে পারবেন, কোন প্রসেস কিভাবে কতোটুকু ব্যান্ডউইথ স্পীড কনজিউম করছে। আপনি চাইলে সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ব্রাউজার এবং ডাউনলোড ম্যানেজারকে অধিক প্রাধান্য দিয়ে রাখতে পারেন এবং উইন্ডোজ আপডেট প্রসেসের স্পীড লিমিট করে রাখতে পারেন (কখনোই উইন্ডোজ আপডেট ডিসেবল করবেন না, এতে আপনার কম্পিউটার সিকিউরিটি হুমকিতে পড়ে যেতে পারে)।
যদি নেট মনিটরে দেখেন, কোন আলাদা প্রসেস ব্যান্ডউইথ স্পীড নষ্ট করছে না, সেক্ষেত্রে আপনার ব্রাউজার পরিবর্তন করে দেখা প্রয়োজনীয়। আপনি যদি এখনো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করেন, তবে হলফ করে বলতে পারি ঐ বেটার কারণেই আপনার কম্পিউটারে স্লো স্পীড পাচ্ছেন। আপনি মোজিলা ফায়ারফক্স ব্যবহার করতে পারেন, স্পীডের মামলায় এটি অনেক ফাস্ট ব্রাউজার। অথবা গুগল ক্রোমও ব্যবহার করতে পারেন, তবে আপনার পিসি’র কনফিগারেশন যদি খুব একটা ভালো নয় বা র্যামের পরিমান যদি কম থাকে তবে ক্রোম ব্যবহার না করায় ভালো। আবার আপনি যদি অলরেডি ক্রোম বা ফায়ারফক্স ব্যবহার করেন এবং তারপরেও স্লো স্পীড অনুভব করেন, সেক্ষেত্রে ব্রাউজার এক্সটেনশন এবং প্ল্যাগইনস গুলোকে আনইন্সটল করে দেখুন আপনার ইন্টারনেট স্পীড বুস্ট করছে কিনা।
আবার অনেক সময় আপনার ডিএনএস সার্ভার স্লো হওয়ার কারণেও আপনার পেজ লোড হতে দেরি হতে পারে। আপনি যখন ব্রাউজারে কোন অ্যাড্রেস লিখে সেখানে প্রবেশ করতে চান, আপনার আপনার ব্রাউজার প্রথমে সেই ডোমেইন নেমটির পেছনের আইপি অ্যাড্রেস টিকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে। আর ডিএনএস সার্ভারে সকল ডোমেইনের পেছনের আইপি অ্যাড্রেস ডাটা থাকে। যদি ডিএনএস সার্ভার স্লো হয়, তবে ব্রাউজার ডোমেইন নেম আইপি খুঁজে পেতে দেরি করবে ফলে ব্রাউজিং স্পীডের উপর এর প্রভাব দেখতে পাওয়া যাবে। আপনি যদি নিজে থেকে ডিএনএস সার্ভার পরিবর্তন না করেন, তবে সেটা ডিফল্টভাবে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের ডিএনএস এ সেট হয়ে থাকবে। ফাস্ট পারফর্মেন্স পাওয়ার জন্য গুগল পাবলিক ডিএনএস ব্যবহার করতে পারেন। আপনার উইন্ডোজ কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক অ্যাডাপটার সেটিং থেকে খুব সহজেই কাস্টম ডিএনএস সেট করে নিতে পারবেন (যদি সেট করতে না পারেন, আমাকে নিচে কমেন্ট করুন, অথবা গুগল করেও অনেক টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন)।
হার্ডওয়্যার
তো আপনি উপরের সবকিছু করে দেখলেন, কিন্তু এখনো আপনার ইন্টারনেট স্পীড ফিক্স হলো না, তাহলে নিশ্চয় হার্ডওয়্যার জনিত ব্যাপার রয়েছে। আপনি যদি রাউটার থেকে ইথারনেট ক্যাবল ব্যবহার করে পিসিতে ইন্টারনেট সংযোগ করে থাকেন, তবে দেখুন ক্যাবলটি কোন ক্যাটাগরির। যদি ক্যাবলের গায়ে ক্যাট ৫ই (CAT5e) বা ক্যাট ৬ (CAT6) বা ক্যাট ৬ এর পরে যেকোনো কিছু লেখা থাকে তবে আপনি সঠিক ক্যাবলটি ব্যবহার করছেন। যদি আপনার ক্যাবলটিতে শুধু ক্যাট ৫ লেখা থাকে, তবে অবশ্যই আপনি ভুল ক্যাবলটি ব্যবহার করছেন। তাই এক্ষুনি ক্যাবলটি পরিবর্তন করে দেখুন।
আবার আপনার কম্পিউটারটি যদি অনেক পুরাতন হয়ে থাকে, তবে হতে পারে আপনার কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কার্ড ভালো স্পীড সমর্থন করে না। উইন্ডোজ কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক অ্যাডাপটার সেটিং এ গিয়ে দেখুন; যদি দেখতে পান ১ গিগাবিট স্পীড সমর্থন করে লেখা আছে, তবে স্বাগতম, আপনার নেটওয়ার্ক কার্ডটি গিগাবিট স্পীড সমর্থন করে, যদি ১০০ মেগাবিট প্রদর্শন করে তবে আপনার নেটওয়ার্ক কার্ডটি পুরাতন। তবে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন স্পীড যদি ১০০ মেগাবিট/সেকেন্ডের কম হয়, সেখানে নেটওয়ার্ক কার্ডের জন্য কোন সমস্যা হবে না।
যদি আপনার কম্পিউটারটি ওয়াইফাই’এর সাথে কানেক্টেড থাকে, তবে নিচের দিকে সম্ভাব্য সমস্যা গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আবার এমনও হতে পারে আপনার পিসিতে ইন্টারনেট স্পীড ঠিক রয়েছে কিন্তু আপনার ব্রাউজার ওয়েবপেজ লোড করতে দেরি করছে অথবা আপনার মনে হচ্ছে ব্রাউজার দুর্বল হয়ে গেছে, সেই মুহূর্তে নিশ্চয় আপনার কম্পিউটারের রিসোর্স ঘাটতি রয়েছে। আপনার কম্পিউটার যদি নতুন হয় কিন্তু তারপরেও এই সমস্যা দেখতে পান, তবে অবশ্যই বিশেষ করে বেশি পরিমানে র্যাম লাগানো প্রয়োজনীয় (র্যাম আপগ্রেড করার টিপস গুলো অনুসরণ করুন)। কারণ ব্রাউজারে যতোবেশি ট্যাব ওপেন করবেন ততোবেশি পরিমানে র্যাম প্রয়োজনীয় হবে। র্যাম কম হলে ওপেন থাকা ট্যাব গুলো আচানক ক্র্যাশ করতে পারে অথবা পেজ বারবার রিফ্রেশ নিতে পারে। আপনার কম্পিউটার যদি সত্যিই অনেক পুরাতন হয়, তবে এবার সিরিয়াস আপগ্রেড করা প্রয়োজনীয় (পিসি স্লো হয়ে গেছে? | ঠিক কোন আপগ্রেড পিসি পারফর্মেন্স সর্ব উত্তম করতে পারে?)।
রাউটার সমস্যা
আপনার কম্পিউটারের সফটওয়্যার এবং ফিজিক্যাল সমস্যা গুলো টেস্ট করার পরেও যদি ইন্টারনেট স্পীডে কোন পার্থক্য না আসে তবে এবার রাউটারের দিকে নজর দিতে হবে। প্রথমত, আপনার কানেকশন স্পীড যদি অনেক ফাস্ট হয়, মানে আপনি যদি ফাস্ট স্পীডের জন্য টাকা প্রদান করেন আর আপনার রাউটার যদি পুরাতন হয়, তাহলে অবশ্যই রাউটারটি আপগ্রেড করুন। যদি আপনি ওয়াইফাই ব্যবহার করে ডিভাইজ গুলোকে কানেক্ট করেন, তবে অবশ্যই লক্ষ্য করুন, ডিভাইজ গুলো ঠিকঠাক মতো রেডিও সিগন্যাল পাচ্ছে কিনা। যদি কোন কারনে সিগন্যাল বাঁধা পায়, সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট স্পীড কমে যাবে এটাই স্বাভাবিক। ডিভাইজ গুলোকে রাউটারের কাছাকাছি নিয়ে আসেন, এবং স্পীড টেস্ট করে দেখেন। যদি স্পীড বেড়ে যায়, তাহলে অবশ্যই সিগন্যাল প্রবলেম রয়েছে। এক্ষেত্রে পুরাতন রাউটার হলে একটি ভালো রাউটার কিনুন, বিশেষ করে একটু ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার কিনুন এবং ৫ গিগাহার্জ ব্যান্ডে আপনার ডিভাইজ গুলোকে কানেক্ট করার চেষ্টা করুন, এতে সিগন্যাল বাঁধা পাওয়া কমে যাবে, পাশাপাশি ভালো ব্যান্ডউইথ স্পীডও পাবেন।
আর অবশ্যই রাউটার ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেটেড রাখুন। সিগন্যাল আরো বিস্তার করার জন্য সিগন্যাল এক্সটেন্ডার কিনতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে আমি বলবো সিগন্যাল এক্সটেন্ডারটিকে তারের সাথে কানেক্ট করতে, এতে আরেকটি নতুন আক্সেস পয়েন্ট তৈরি হবে আর বেটার কোয়ালিটি সিগন্যাল পাবেন। যদি আপনার ওয়াইফাই সিগন্যালকেই রিপিট করেন, সেক্ষেত্রে সিগন্যাল রিপিটারটি সেই উইক সিগন্যালকেই রিপিট করবে, এতে খুব বেশি সুবিধা পাবেন না।
আর যদি আপনার ডিভাইজটি রাউটারের কাছে আমার পরেও স্পীড ঠিক না হয় তবে আপনার আইএসপি’র সমস্যা হতে পারে কিংবা আপনার রাউটারটি পুরাতন হতে পারে। আবার আরেকটি বিষয়ও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, আপনার রাউটার হাইজ্যাক করে অন্য কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না তো? এক্ষেত্রে অবশ্যই রাউটারে লেটেস্ট এনক্রিপশন সিস্টেম ব্যবহার করুন, সাথে রাউটার সেটিংস থেকে আপনার ডিভাইজ গুলো বাদে সকল ডিভাইজ গুলোকে ব্ল্যাকলিস্ট করে দিন, যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারে।
সকল স্টেপ অনুসরণ করার পরেও যদি কোন স্পীডে উন্নতি না লক্ষ্য করতে পারেন, অবশ্যই আইএসপিকে ফোন করুন এবং আপনার কানেকশন স্পীডের সমস্যার কথা জানান, কেনোনা এতে আপনার হোম নেটওয়ার্কের কোনই সমস্যা নেই। আর যদি উপরের যেকোনো একটি পদ্ধতি অবলম্বন করার সময় আপনার স্পীড ঠিক হয়ে যায়, তো অভিনন্দন আপনাকে! —আপনি স্পীড বৃদ্ধি করিয়ে দেখালেন!
শেষ কথা
নিচে আমাদের কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন, ঠিক কোন স্টেপটি অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনার ইন্টারনেট স্পীড বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া আপনি কতো স্পীডের লাইনের জন্য টাকা প্রদান করেন এবং আপনি কতোটা স্পীড পাচ্ছেন সেখান থেকে, সবকিছু নিচে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।