আর্টিকেলইনফরমেশন টেকনোলজি

হ্যাকিং শিখতে চান? হ্যাকিং শেখার সকল মূলমন্ত্র ও গোপন রহস্য!

হ্যাকিং শিখতে চান?

সবাই হ্যাকিং শিখতে চায়। আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না, মানুষ আমাকে ই-মেইল করে পর্যন্ত জিজ্ঞাস করে, “কিভাবে হ্যাকার হবো ভাই? হ্যাকিং শিখতে চাই, কোথা থেকে শুরু করবো? কোন কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখলে হ্যাকার হতে পারবো? কোন হ্যাকিং কোর্সটি করলে বেস্ট হবে?” — প্রথমত, আমি কিন্তু কোন হ্যাকার নই। তাহলে মানুষ কেন এমন প্রশ্ন করে? আসলে আমি এই ব্লগে অনেক অনেক সিকিউরিটি বিষয়ক আর্টিকেল কভার করেছি এবং পূর্বে এথিক্যাল হ্যাকিং নামে এক জনপ্রিয় সিরিজ আর্টিকেল পাবলিশ করতাম ব্লগে। সবাই গুগলে “এথিক্যাল হ্যাকিং” লিখে সার্চ করেই হয়তো এই ব্লগ খুঁজে পান আর ব্লগ থেকে সহজেই আমাকে।

এই আর্টিকেলের টাইটেল রেখেছি, “হ্যাকিং শেখার সকল গোপন রহস্য”। ব্যাপারটা আগেই খোলাসা করে নিতে চাই, আসলে হ্যাকিং শেখার কোন গোপন সূত্র হয় না। এমন কোন গোপন জ্ঞান কোন বই বা কোন আর্টিকেলে নেই যেটা আপনাকে রাতারাতি হ্যাকার বানিয়ে দেবে। তো কি দাঁড়ালো? হ্যাঁ, এই টাইটেলটি সম্পূর্ণ ক্লিক বেট, আবার ক্লিক বেট নয়, দুটোই। চলুন নিচে ব্যাখ্যা করছি।

এখন অনেকে প্রশ্ন করবেন, তাহলে কি এই আর্টিকেল থেকে আমরা কিভাবে এথিক্যাল হ্যাকার হতে পারবো তা জানতে পারবো না? হ্যাঁ, জানতে তো পারবেনই, কিন্তু এক আলাদা রুপে আর এই সত্য কথা গুলো আপনাকে কেউ বলে না। হ্যাকার হওয়া নিয়ে অনলাইন বা অফলাইন জগতে অনেক ভুল ধারণা ছড়িয়ে রয়েছে আমি সেগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা করতে চাই, আর আর্টিকেল শেষে আপনি নিজে থেকেই হয়তো সবকিছু বুঝে যাবেন।

আমি কে?

যখন কারো কাছ থেকে কোন ক্যারিয়ার তৈরি করার পরামর্শ চাইবেন, অবশ্যই আপনার জানা প্রয়োজন জ্ঞান দাতা ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানটি নিজে আসলে কে বা কি। নিশ্চয় আপনি মুচির কাছে চা নাস্তা খেতে যান না, অবশ্যই কোন খাবারের হোটেলেই যান, রাইট? — এবার ফিরে আসি আমার নিজের প্রসঙ্গে। দেখুন, উপর থেকে হয়তো অনেকে ভাবেন আমি মস্তবড় এক সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট বা আপনার টেক গাই, ব্যাপারটা মোটেও এমন না। দুই চারটা গুগলের সাহায্য নিয়ে টেক আর্টিকেল লেখা এমন বিরাট কোন কেরামতি নয়। বিশ্বাস করুন, হয়তো ৬ মাসে আপনি এই সেক্টরে আমার থেকে বেশি ভালো লিখতে পারবেন।

কিন্তু যখন কথা বলবেন একজন সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট হওয়া নিয়ে, একজন প্রো হ্যাকার হ্যাকার হওয়া নিয়ে, এই জিনিস আপনার পরীক্ষা নেবে। মনে রাখবেন, এতে কোন শর্টকাট বা এক বোতল সিরাপ গিলে খাওয়ার মতো পদ্ধতি খুঁজে পাবেন না। এমন কি কোন কোর্স করেও আপনি একজন হ্যাকার হতে পারবেন না। প্রয়োজন পড়বে আপনার অভিজ্ঞতা, কম্পিউটার এবং আইটির উপরে সকল বেসিক নলেজ, প্রোগ্রামিং, এবং আলাদা চিন্তা ভাবনা।

আপনি আমাকে এই প্রশ্ন সরাসরি করলে, “ভাই, কিভাবে হ্যাকার হবো?” উত্তর দেবো, “আমি জানি না”। কি কি শিখতে হবে একজন হ্যাকার হতে চাইলে, আমি জানি না। আপনি এই সেক্টর থেকে কিভাবে উপার্জন করবেন বা আদৌ এতে কোন ক্যারিয়ার তৈরি হবে কিনা, আমি জানি না। — আমি হয়তো, সঠিক উত্তরের মতো দেখতে উত্তর লিখতে পারি, কিন্তু সেগুলো আমার এক্সপেরিয়েন্স থেকে লেখা হবে না, গুগলের সাহায্য নিয়ে লিখতে হবে। আমি একজন হ্যাকার নই, সুতরাং আমি আপনার এই সকল প্রশ্নের ১০০% সঠিক উত্তর জানি না।

তাহলে আমি জানি? — ওয়েল, আমি প্রতিনিয়ত কম্পিউটার এবং আইটি বিষয়ে পড়াশুনা করি। কম্পিউটার, সাইবার সিকিউরিটি, অপারেটিং সিস্টেম, কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, ওয়েব সার্ভার, লিনাক্স ইত্যাদির উপরে মোটামুটি বেসিক নলেজ রয়েছে। মূলত আমি একজন লেখক বা ব্লগার বলতে পারেন, ফলে আমি যেকোনো টপিকের উপরে রচনা লিখতে পারি। আর এই আর্টিকেলে হ্যাকিং শেখা নিয়ে আমাদের মদ্ধে যে ভুল ধারণা গুলো কাজ করে সেই বিষয়ের উপরেই লিখতে বসেছি।

কিভাবে একজন হ্যাকার হবেন?

আমাদের মদ্ধে সবচাইতে বড় ভুল ধারণাটি হচ্ছে, আমরা মনে করি কোন অভিজ্ঞ ব্যাক্তিকে যদি জিজ্ঞাস করা হয় তবে সে তার অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শর্টকাট দেখিয়ে দেবে যে কিভাবে সহজেই একজন সফল হ্যাকার হওয়া যাবে। এই ধারণা তো আমার নিজের মদ্ধেই ছিল এক সময়, আপনাকে আর কি একা দোষ দেই বলুন। ২০১০/১১ এর দিকে মনে করতাম আমি বিরাট এক কম্পিউটার গাই হয়ে গেছি। আমি এখন চাইলেই হ্যাকিং শিখতে পারি বা প্রোগ্রামার হয়ে যেতে পারি কিংবা নিজের কাস্টম ওয়েবসাইট তৈরি করা শুরু করতে পারি। আমার জাস্ট দরকার এক্কেবারে চকচকা একটা দিক নির্দেশনা।

আর আমি মাত্র কয়েকদিনের মদ্ধে হতাশ হয়ে পরি। কেনোনা বেসিক অনেক জায়গা থেকে জোগাড় করতে পারলেও ক্লিয়ার কাট কোন রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শুধু এক সাব্জেক্ট থেকে আরেক সাব্জেক্ট এ লাফালাফি করে বেরচ্ছিলাম। কোথাও যেন স্থির হয়ে ঠিকতে পারছিলাম না। সমস্যাটা ছিল আমি তখনো সত্য উপলব্ধি করতে শুরু করি নি। আর সত্যটা হচ্ছে, আমি যে পরিস্কার দেখানো পথের খোঁজ করছিলাম মানে যে শর্টকাট মারার ধান্দায় ছিলাম সেটার আসল কোন অস্তিত্বই নেই। সত্যটা হচ্ছে আমি যেখানে পৌছাতে চাইছিলাম বা আমি যে ই হতে চাইছিলাম সেখানে পৌছাতে দরকার একত্র করা জ্ঞান আর বছরের পর বছরের অভিজ্ঞতা।

আপনি হাজার ডলার খরচ করে কোর্স গ্রহন করতে পারেন, কিন্তু বিশ্বাস করুন শুধু ঐ কোর্স আপনাকে কোথাও নিয়ে যাবে না। আগেই বলেছি, কোন বই, কোন আর্টিকেল বা কোন কোর্সের মদ্ধে একজন হ্যাকার হওয়ার রহস্য লুকানো নেই বরং আপনার দরকার কিছু সমন্বিত জ্ঞান। যেগুলো নানান ভাবে নানান উদ্দেশ্যে নানান প্রজেক্ট থেকে অর্জন করা। এর এই জন্য চাই সময়।

এখন অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন, “ভাই আপনার তো টেকনিক্যাল জ্ঞান অনেক বেশি ভালো তো আমাদের সেভাবেই গাইড করুন তাহলেই তো আমরা আপনার মতো হতে পারবো, রাইট”? — আসলে আপনি আরেকজনের পথে এগিয়ে এক্ষেত্রে বেশি দূরে যেতে পারবেন না। আগেই বলেছি এখানে ধাপে ধাপে কোন পদ্ধতি নেই যে আমি আপনাকে দেখিয়ে দিলাম আপনি এখান থেকে ঐখানে যান তারপরে এটা শিখুন তারপরে এটা করুন ইত্যাদি। বরং সিকিউরিটি এক্সপার্ট বা একজন হ্যাকার হওয়ার রাস্তাটা অনেকটা মাকড়শার জালের মতো। এখানে একটা সোজা কোন লাইন নেই, বরং শতশত ছোট ছোট লাইনের মাদ্ধমে আপনার নিজস্ব জ্ঞান ভান্ডার তৈরি হবে।

আমি ছোট বেলায় এইচটিএমএল দিয়ে আমার যাত্রা শুরু করেছিলাম। বেসিক এইচটিএমএল শেখার পরে দেখলাম আমি এখনো ওয়েবপেজ বানাতে পারছি না। মানে ততোটা সুন্দর হচ্ছে না যতোটা ইন্টারনেট ওয়েবসাইট গুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। আমি তখন জানতাম না সাইট কিভাবে হোস্ট করতে হয়, সিএমএস কি জিনিস, পিএইচপি কি জিনিস। ফলে আমি সহজেই হাল ছেড়ে দেই। এরপরে অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে শুরু করি, ইচ্ছা ছিল নিজের অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করবো। চিন্তা করে দেখুন, যে বাচ্চা এখনো এইচটিএমএল ভালো করে জানে না, সে বানাবে অপারেটিং সিস্টেম।

তারপরে আমি ব্লগার আর ওয়্যাপকা এর মতো অনলাইন টুলস খুঁজে পাই যেখানে আসল কোড না লিখেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যাচ্ছিলো। এরপরে আমি ওয়ার্ডপ্রেসের সন্ধান পাই আর ওয়ার্ডপ্রেস ট্রায় করতে শুরু করি। মাঝখানে আমি ওয়ার্ডপ্রেস সাইত আর সার্ভার জনিত অনেক সমস্যায় আটকে যাই ফলে সার্ভার ম্যানেজ করা শিখতে শুরু করি। তারপরে সার্ভার ম্যানেজ করতে গিয়ে নেটওয়ার্কিং, লিনাক্স, নানান ক্লাউড সফটওয়্যার এর প্রেমে পরি। আর লেখার হাতটা তো ছিলই আগে থেকেই সেই খাতিরে নতুন নতুন টেক টার্ম গুলো জানতে শুরু করি আর সেগুলকে গুছিয়ে লিখতে শুরু করি। এভাবে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে অনেক কিছুই আয়ত্তে চলে আসে।

এখন আপনি যদি আমার মতো পথ অনুসরন করতে চান তাহলে কি আগে আমার মতো এইচটিএমএল শিখবেন, তারপরে বাদ দিয়ে ব্লগারে ওয়েবসাইট বানাবেন, তারপরে ওয়ার্ডপ্রেসে আসবেন, তারপরে পিএইচপি শিখবেন, তারপরে সার্ভার অ্যাডমিন হবেন। এখন আপনি স্বপ্ন দেখছেন বড় বড় ব্যাংক এর গেটওয়ে হ্যাক করার, বিশ্বাস করুন আমার পথে হেটে আপনি বরং কুয়াশাচ্ছন্ন বনের মদ্ধে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাবেন না।

সত্যটা হচ্ছে, আপনাকে শিখতে থাকতে হবে। আপনি হয়তো আজকে জাভাক্রিপ্ট শিখতে শিখতে বাদ দিয়েছেন, আলাদা কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বা নতুন কোন প্রজেক্টে মুভ করেছেন। ভাব্বেন না, আগের শেখা আপনার জন্য সময়ের অপচয় ছিল। আপনি যখনই কোন কিছু শিখবেন বা শিখতে শিখতে আলাদা রাস্তায় চলে যাবেন, আপনি বলতেও পারবেন না কখন কিভাবে সেই জ্ঞান আপনাকে সাহায্য করবে। আমি স্পেসিফিক ভাবে কখনোই HTML, CSS দিয়ে কোন কাজ করিনি। কিন্তু নানান প্রজেক্টে আমাকে এরা মারাত্তকভাবে সাহায্য করেছে। তাই বলতে পারেন কোন অর্জিত জ্ঞানই বৃথা না, সঠিক সময়ে আপনার লাইফ সেভার হিসেবে কাজ করতে পারে।

তো হ্যাকিং আসলে কি জিনিস?

এখানেই তো ধারনার বড় অভাব আমাদের মদ্ধে। মুভিতে হ্যাকিং বলতে যা দেখেন বা আপনি মনে মনে যা করতে চান হ্যাকিং হয়তো মোটেও সেই রকম কিছু ব্যাপার নয়। এটা নির্দিষ্ট কোন জিনিসও নয় বা নির্দিষ্ট কোন জ্ঞান দিয়ে হ্যাকিং সম্ভবও নয়। হ্যাকিং শেখা কোন মন্ত্র নয় বরং একসাথে অনেক গুলো আইটি স্টাফের উপরে ভালো জ্ঞান অর্জন করা। দেখুন, একজন প্রোগ্রামার এবং একজন হ্যাকার কিন্তু জ্ঞানের দিক থেকে একই পারসন হতে পারে। কিন্তু একজন প্রোগ্রামার এবং একজন হ্যাকারের চিন্তা ধারা দুইজনকে আলাদা বানায়।

প্রোগ্রামাররা নানান প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রপ্ত করে, অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে, লিনাক্স নিয়ে খেলা করে, হার্ডওয়্যারের উপরে জ্ঞান রাখে বা নেটওয়ার্ক এবং সার্ভারের সিকিউরিটি নিশ্চিত করে। হ্যাকারদেরও এই একই জ্ঞান গুলো একত্র করতে হয়। কিন্তু প্রোগ্রামার ভাবে কিভাবে অমুক সফটওয়্যার অমুক ভাবে কাজ করানো যায় আর অপরদিকে হ্যাকার রা ভাবে ঐ প্রোগ্রামিং কোডে কি কি ত্রুটি থাকতে পারে, প্রোগ্রামার রা কোড লেখার সময় কি কি ভুল করতে পারে। এগুলো ভুল খুঁজে বের করে তারা সিস্টেম বাইপাস করার চেষ্টা করে। তো দেখলেন, একই টাইপের জ্ঞান উভয়ের রয়েছে, শুধু চিন্তা ভাবনা আর গোলটা আলাদা।

আসল ব্যাপারটা হচ্ছে কোন জিনিস কিভাবে কাজ করছে সেটার উপরে আপনার পরিস্কার জ্ঞান থাকতে হবে। আর যখন আপনি অনেক বেশি পরিস্কার জ্ঞান অর্জন করে ফেলবেন আপনি ভাবতে শুরু করবেন ঐ সিস্টেম কিভাবে ক্র্যাক করা যেতে পারে। এর অবশ্যই এর কোন নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই, আপনাকে সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে হবে।

হ্যাকিং শেখার গোপন রহস্য?

তো এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পাড়ছেন আমি কেন বললাম যে হ্যাকিং শেখার কোন গোপন রহস্য নেই। সবকিছুই ওপেন, শুধু আপনার ইন্টারেস্ট অনুসারে আপনাকে সামনে এগোতে হবে। আপনি আলাদা আলাদা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখা শুরু করতে পারেন।

একটা ভালো না লাগলে আরেকটায় মুভ করতে পারেন। লিনাক্স সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারেন, নেটওয়ার্কিং নিয়ে বিস্তারিত জানা শুরু করতে পারেন, রাসবেরি পাই বা আর্ডুইনো শিখে ছোট ছোট প্রোজেক্ট শুরু করতে পারেন, ওয়েব সিকিউরিটি কিভাবে কাজ করে জানতে পারেন, ওয়েবসাইট তৈরি শুরু করতে পারেন, ওয়েব অ্যাপ বানাতে পারেন, সার্ভার নিয়ে ওস্তাদি শুরু করতে পারেন, ক্রিপটোগ্রাফি করতে পারেন, নানান ফ্রেমওয়ার্ক শিখতে পারেন, ডাটাবেজ প্রোগ্রামিং শিখতে পারেন, নানান অপারেটিং সিস্টেম এবং কার্নেল নিয়ে স্ট্যাডি শুরু করতে পারেন, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শুরু করতে পারেন। — দেখছেন তো, এই শেখার লিস্ট ইনস্ট্যান্টলি কতো বড় সাইজের হয়ে গেলো? এভাবে হাজারো শব্দ ফুরিয়ে যাবে কিন্তু লিস্ট শেষ হবে না।

এখন অনেকেই বলবেন, আমি তো হ্যাকার হয়ে ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়ে হ্যাক করতে চাই বা কোন ওয়েবসাইটের ত্রুটি খুঁজে সেখানে আক্সেস নিতে চাই, কিন্তু আপনার শেখার লিস্টে তো কিছু মেনশন করা নেই। আরে ভাই উপরের লিস্টে তো “হ্যাকিং” শব্দটায় মেনশন করা নেই। কিন্তু আপনি যখন আসল হ্যাকিং করতে নামবেন, এই নানান নলেজ গুলো আপনার হ্যাকিং টুলস হিসেবে কাজে দেবে।

তো কি বুঝলেন? এখানে কোনই ম্যাজিক বা হ্যাকিং শেখার গোপন রহস্য বলে কিছু নেই। এগুলা জ্ঞান প্রত্যেকটা প্রোগ্রামদেরই আয়ত্ত করতে হয় হ্যাকাররা জাস্ট আলাদা ভাবে সেগুলোকে অ্যাপ্লাই করে। মানে হ্যাকার আর প্রোগ্রামাররা একই জ্ঞান ব্যবহার করে আলাদা টাইপের প্রবলেম গুলোর সলিউশন করে। প্রোগ্রামার চিন্তা করে তার সফটওয়্যার কিভাবে আরো সুরক্ষিত করা যাবে, কিভাবে নির্দিষ্ট ঐ ফিচার যুক্ত করা যাবে, কিভাবে সেটা ইউজ করা ইউজাদের জন্য আরো বেশি ইজি হবে। অপরদিকে হ্যাকাররা চিন্তা করে কিভাবে ঐ অ্যাপের পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করা যাবে, সিকিউরিটি বাইপাস করা যাবে, ত্রুটি গুলো খুঁজে বের করা যাবে।

হ্যাকিং কোন স্পেশাল জিনিস নয়

মুভিতে হ্যাকার বলতে যে ক্যারেক্টার দেখানো হয় সে এতোবেশি পাওয়ারফুল যে নিমিষের মদ্ধে যেকোনো সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে, সিস্টেম ক্র্যাক করতে পারে, যেকোনো ডিভাইজের আক্সেস গেইন করতে পারে বা নিমিষেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি ডলারস উধাও করতে পারে। কিন্তু ব্যাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা। একজন হ্যাকার হ্যাকার হওয়া শর্তেও তার অনেক কিছুর উপরে আইডিয়া নাও থাকতে পারে। একজন নেটওয়ার্ক স্পেশালিষ্ট নেটওয়ার্কিং নিয়ে ভালো বুঝবে কিন্তু স্পেশাল কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে তার জ্ঞান শূন্যও হতে পারে।

কোন হ্যাক অ্যাটাক পারফর্ম করতে অনেক সময় হ্যাকারের বছরও সময় লেগে যেতে পারে। কেনোনা তাকে হ্যাক অ্যাটাক পারফর্ম করার জন্য ডাটা কালেক্ট করতে হয়, ফুট প্রিন্টিং খুজতে হয়, ভালনেরাবিলিটি খুজতে হয়, আর এগুলো ইনস্ট্যান্ট কোন কাজ নয়। অনেকটা বড়শী গেথে বসে থাকার মতো, কখন মাছ এসে ঠোকর দেবে আপনি নিজেও জানেন না।

ইয়েস, হ্যাকিং কোন স্পেশাল জিনিস নয়। হ্যাকার হতে চাই অনেক অনেক অনেক আইটি নলেজ, আর এটা কোন স্পেসিফিক নলেজ নয়। যেকোনো আইটি রিলেটেড নলেজ, হতে পারে আপনি স্ক্রীনশট নিতে পারেন, হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে সেটাও কাজে লাগবে। আপনাকে অনেক গুলো আলাদা আলাদা জিনিস জানতে হবে আর এতে সময়ের দরকার পড়বে।

তাহলে আসল কথা কি দাঁড়ালো?

হ্যাকিং শেখার আসল ব্যাপারটায় হচ্ছে শিখতে থাকা, আলাদা আলাদা জিনিস শিখতে থাকা, নানান টাইপের আইটি জ্ঞান অর্জন করা। আর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হচ্ছে আপনি যেটাই শিখতে যান না কেন অবশ্যই সেটা মজার সাথে শিখতে হবে। আপনি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট করুন আর ওয়েবসাইট বানান, সেটা তৈরি করে আপনাকে মজা পেতে হবে। আর শেখার এই মজা থেকেই কেবল আপনি বছরের পর বছর এই শেখার যাত্রা অবশেষে একটা পর্যায়ে রুপ দিতে পারবেন।

কিভাবে শুরু করবেন? না, একদমই না, আমাকে হ্যাকিং শেখার জন্য শুরুতেই প্রোগ্রামিং শিখতে হবে না। তারচেয়ে আপনি ফোকাস করুন কোন জিনিস আপনার এখন শিখতে মজা লাগে। ধরুন আপনি ওয়েবসাইটের ত্রুটি খুঁজতে চান। যেহেতু আপনি ওয়েবসাইট হ্যাকিং নিয়ে চিন্তা করছেন সেক্ষেত্রে যতো ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানানো যেতে পারে সেগুলো আয়ত্ত করতে শুরু করতে হবে। তো ওয়েবসাইট তৈরি করা শুরু করুন, নানান ফ্রেমওয়ার্ক আর সিএমএস নিয়ে ঘাটাঘাটি করুন, খুঁজে বের করুন পিএইচপি কিভাবে কাজ করে, কিভাবে জাভাস্ক্রিপ্ট কাজ করে, কিভাবে সার্ভার কাজ করে। এরপরে শিখতে থাকুন, কিভাবে কোন ল্যাঙ্গুয়েজের সাথে ত্রুটি খুঁজে বের করা যেতে পারে, কিভাবে সার্ভারে ত্রুটি থাকতে পারে, কিভাবে ডাটাবেজ কাজ করে বা কিভাবে এতে ত্রুটি খোঁজা যেতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।

তো দেখলেন, ওয়েবসাইট হ্যাকিং এর কথা আসতেই এর পেছনে এরকম অনেক জ্ঞান অর্জনের ব্যাপার চলে আসলো। আর একত্রে সবকিছু জানার পরেই আপনি কোন সাইটের উপরে হ্যাক অ্যাটাক চালাতে পারবেন। তো সহজেই বোঝা যাচ্ছে একটা জ্ঞান আরেকটা জ্ঞানের সাথে কতোটা নিবিড়ভাবে যুক্ত। সিঙ্গেল এক টপিকের উপরে শতশত সাব ক্যাটাগরি চলে আসবে আর সেগুলো আয়ত্ত করতে বছর সময় লেগে যেতে পারে। তো বুঝতে পাড়ছেন তো, এটা তো সোজা সরল রাস্তা নয়, বরং অনেক রাস্তার একটি বড় কালেকশন।

এখন আপনি সিমপ্লি গুগল সার্চ করে বা অমুক বড় ভাইয়ের কাছে কোর্স করে এই জিনিস গুলো খুঁজে পাবেন না। আপনাকে গোল সেট করতে হবে তারপরে জানতে হবে সেই গোলে পৌঁছানোর জন্য আপনার কি কি জানা প্রয়োজনীয়, তারপরে আপনাকে সেগুলো শিখতে শুরু করতে হবে। এটা এমন জিনিস নয় যে, ৫টা কোর্সের ডিভিডি গিলে ফেল্লেই আপনি প্রো হ্যাকার হয়ে গেলেন। কোন কোর্স বা হ্যাকিং টিউটোরিয়াল থেকে আপনি ব্যাসিক এর বেশি কিছুই শিখতে পারবেন না।


তো সব কথার এক কথা কি দাঁড়ালো? ইয়েস, হ্যাকিং শেখার কোন মূলমন্ত্র বা স্টেপ বাই স্টেপ গাইড নেই। এর কোন স্টেপ বাই স্টেপ গাইড হয়ও না। হ্যাকিং শিখতে আপনাকে কারো উপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। আপনাকে গোল সেট করতে হবে তারপরে নানান জ্ঞান অর্জন করা শুরু করতে হবে, একটা না ভালো লাগলে আরেকটার পেছনে ছুটতে হবে। আর হ্যাঁ, গুগল সার্চ করার উপরে ভালো পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে, আপনি যদি খুঁজতেই না জানেন, শিখবেন কিভাবে? একবার যদি আপনি যেনে যান আপনার গোল পুরন করার জন্য আপনার কি কি শিখতে হবে তো আপনার কোন কোর্সের দরকার নেই, আপনি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবেন সবকিছু। সব তথ্য ইন্টারনেটে খোলা ভাবেই রয়েছে।

তো, না এর কোন পরিস্কার বা সহজ শর্টকাট নেই, এটা একেবারে মস্তিকে প্রিন্ট করে নিন। হ্যাকিং শেখার কোন ওয়ান অ্যান্ড অনলি বুক, কোর্স, ওয়েবসাইট, ব্লগ নেই। আপনার শুধু দরকার কম্পিউটার আর আইটি স্টাফের উপরে অত্যাধিক জ্ঞান আর কিভাবে হ্যাকিং পারফর্ম করবেন তার ইউনিক আইডিয়া। সাথে আপনাকে প্রোগ্রামিং শিখতেই হবে, হার্ডওয়্যারের উপরেও পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে। আর সর্বশেষে, আপনি যা-ই শিখছেন না কেন সেটা মজার হতে হতে আপনার জন্য। তবেই আপনি সামনে এগোতে পারবেন!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button