Technology

রেডিও কিভাবে কাজ করে? অ্যানালগ রেডিও Vs ডিজিটাল রেডিও

এএম (AM) এবং এফএম (FM) এর মধ্যে পার্থক্য

খবর, ফ্রী মিউজিক, আর অডিও চ্যাট—যেখানেই থাকুন আর যেভাবেই থাকুন! ইন্টারনেট আসার আগে পর্যন্ত কেউ দখল করতে পারেনি রেডিও এর স্থান—এমনকি টেলিভিশনও পারেনি। রেডিও হলো নানান প্রকারের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতিতে ভর্তি একটি বাক্স, যা বাতাসে থাকা রেডিও-তরঙ্গকে ধরে ফেলে এবং তা শব্দে রূপান্তরিত করে এবং আমাদের কান তা শুনতে পায়।

সর্বপ্রথম ১৯-শতাব্দীর পরে “রেডিও” উন্নতিকরন করা হয় এবং পরের কিছু দশকে তা জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যায়। পেছনের কয়েক বছর ধরে “রেডিও” নতুন প্রযুক্তি গুলোর জন্য (যেমন ওয়্যারলেস ইন্টারনেট, সেলফোন হৃদপিণ্ডের মতো হয়ে উঠেছে। আর ইতিমধ্যে “রেডিও” অর্জন করে নিয়েছে এক আরেক প্রজন্ম জয়কারী উত্তম কোয়ালিটি ওয়ালা “ডিজিটাল রেডিও সেট”। তো চলুন বন্ধুরা, এই প্রযুক্তির একদম শুরু থেকে সমস্ত কিছু সহজ বাংলা ভাষায় জেনে নেওয়া যাক।

এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

রেডিও কি?

আপনি নিশ্চয় মনে করেন যে “রেডিও” শুধুমাত্র একটি গ্যাজেট যা দ্বারা আপনি মিউজিক উপভোগ করেন, কিন্তু ব্যাস্তবে এটি আরো বেশি কিছু। রেডিও মানে হলো তরঙ্গের সাহায্যে এনার্জিকে পাঠিয়ে দেওয়া। এক কথায় বলতে, এটি এমন একটি পদ্ধতি যা ব্যবহার করে কোন প্রকার তার ছাড়ায় ইলেকট্রিকাল এনার্জিকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে প্রেরন করা হয়—আর এই জন্যই একে বলা হয়ে থাকে ওয়্যারলেস (তার বিহীন)। যে উপকরণ দ্বারা এই তরঙ্গ প্রেরন করা হয়ে থাকে তা ট্রান্সমিটার নামে পরিচিত। বেতার তরঙ্গ এই ট্রান্সমিটার দ্বারা বাতাসে প্রেরন করা হয়ে থাকে। আর এই তরঙ্গ ছড়িয়ে পরে পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত—আর এই তরঙ্গের অভিযান তখন সমাপ্ত হয়ে থাকে যখন একটি ছোট্ট বাক্স এই তরঙ্গ গ্রহন করে—যা রিসিভার নামে পরিচিত।

যখন আপনি রিসিভারের অ্যান্টেনাকে টেনে লম্বা করে দেন তখন তা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এনার্জিকে টেনে গ্রহন করতে থাকে। আর যখন আপনি কোন চ্যানেল টিউন করেন তখন এর ভেতরে থাকা একটি ইলেক্ট্রনিক সার্কিট শুধু সেই প্রোগ্রামটি শোনাতে থাকে যা ঠিক আপনি শুনতে চান। কিন্তু এটি কীভাবে ঘটে থাকে? চলুন আরো গভীরে প্রবেশ করি।

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এনার্জি—ইলেক্ট্রিসিটি এবং ম্যাগ্নেটিজমে মিশ্রিত একটি এনার্জি যা আমাদের চারপাশে সমুদ্রের মতো বিরাজমান। আর একেই বলা হয়ে থাকে বেতার তরঙ্গ। সমুদ্রের ঢেউ এর মতোই বেতার তরঙ্গেরও রয়েছে একটি নির্দিষ্ট গতি, দৈর্ঘ্য, এবং ফ্রিকোয়েন্সি (কম্পাঙ্ক)। তরঙ্গ গতি নির্দেশ করে যে এটি একটি স্থান থেকে আরেকটি স্থানে কোন দ্রুত যেতে পারবে।

আর একটি তরঙ্গ শিখর থেকে আরেকটি তরঙ্গ শিখরের দূরত্ব নির্দেশ করে তরঙ্গদৈর্ঘ্য, যেখানে ফ্রিকোয়েন্সি মানে হলো প্রত্যেক সেকেন্ডে কতোগুলো তরঙ্গ পৌঁছাতে পারে তার নাম্বার। ফ্রিকোয়েন্সি পরিমাপ করার এককের নাম হলো হার্জ (hertz)। অর্থাৎ এক সেকেন্ডে যদি ৭টি তরঙ্গ এসে পৌঁছায় তবে আমরা একে বলবো ৭ হার্জ (7 Hz)। এবার আবার ভাবুন সমুদ্র ঢেউ এর কথা—সমুদ্র ঢেউ কয়েক সেকেন্ড পরপর সমুদ্র কিনারায় গিয়ে আছড়ে পড়ে। একই ঢেউ শুধু কিছু সময়ের ব্যাবধানে বারবার আসে। ঠিক একই ভাবে এখানে ফ্রিকোয়েন্সি মানে হলো একই তরঙ্গ প্রত্যেক সেকেন্ডে ফিরে আসা।

তো আপনার বেতার যন্ত্রটি যখন টেবিলের উপর রাখা থাকে তখন সেটি আপনার ঘরে আসা বেতার তরঙ্গকে ধরার চেষ্টা করে। বেতার তরঙ্গ সমুদ্র ঢেউ এর তুলনায় অনেক বেশি দ্রুতগামী, প্রশস্ত, এবং বেশি ফ্রিকোয়েন্সি ওয়ালা। যাই হোক, বেতার তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সাধারনত কয়েকশত মিটার হয়ে থাকে—সুতরাং এটিই হলো একটি তরঙ্গ শিখর থেকে আরেকটি তরঙ্গ শিখরের দূরত্ব। কিন্তু বেতার তরঙ্গের ফ্রিকোয়েন্সি কয়েক মিলিয়ন হার্জ হতে পারে—সুতরাং এক সেকেন্ডে বহুত মিলিয়ন রেডিও তরঙ্গ পৌঁছানো যেতে পারে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি বেতার তরঙ্গ মাত্র কয়েকশত মিটার লম্বা হতে পারে তবে এতো মিলিয়ন রেডিও তরঙ্গ প্রতি সেকেন্ডে কীভাবে পৌঁছানো সম্ভব? উত্তরটা কিন্তু খুবই সহজ, কেনোনা বেতার তরঙ্গ অনেক দ্রুতগামী হয়ে থাকে। এর গতি প্রায় আলোর গতির সমান হয়ে থাকে (৩০০,০০০ কিলোমিটার বা ১৮৬,০০০ মাইল প্রতি সেকেন্ড)।

অ্যানালগ রেডিও

সমুদ্র তার ঢেউ গুলোকে উপর নিচ করিয়ে এনার্জি বহন করে এবং ঢেউকে অসম্ভব শক্তির সাথে তীরে আছড়ে ফেলে। আর অনেকটা একই উপায়ে বেতার তরঙ্গও ইলেক্ট্রিসিটি এবং ম্যাগ্নেটিজমের একটি অদৃশ্য উপর নিচ ঢেউ খেলিয়ে এনার্জি বহন করে। বেতার স্টেশনের সাথে সংযুক্ত থাকা একটি বিশাল আকারের অ্যান্টেনার সাহায্যে বেতার তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে কোন নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম সাথে নিয়ে। এবং আপনার বেতার যন্ত্রটিতে একই প্রকারের কিন্তু ছোট আকারের একটি অ্যান্টেনা লাগানো থাকে, যা এই তরঙ্গকে ধরে ফেলে।

বেতার তরঙ্গের সাথে একটি অনুষ্ঠানকে যুক্ত করার মাধ্যমে কোন অনুষ্ঠান প্রেরন করা হয়ে থাকে—একে কারিয়ার (carrier) বলা হয়ে থাকে। আর এই সম্পূর্ণ প্রসেসটিকে বলা হয় মডুলেশন (modulation)। মাঝেমাঝে একটি বেতার অনুষ্ঠানকে কারিয়ারের সাথে এমনভাবে যুক্ত করা হয়ে থাকে যাতে সেই অনুষ্ঠানটির সিগন্যাল কারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সিতে তরঙ্গ উঠানামা করাতে পারে। আর এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন (এফএম) [frequency modulation (FM)]।

বেতার সিগন্যাল প্রেরন করার আরেকটি পদ্ধতি হলো কারিয়ার তরঙ্গ শিখরকে বৃহত্তর অথবা ক্ষুদ্রতর বানিয়ে। যেখানে এই তরঙ্গ সাইজকে বলা হয়ে থাকে ঐ তরঙ্গের প্রশস্ততা বা অ্যামপ্লিটিউড (amplitude)। আর এই উপায়ে কাজ করার প্রসেসটিকে বলা হয়ে থাকে অ্যামপ্লিটিউড মডুলেশন (এএম) [amplitude modulation (AM)]।

এএম (AM) এবং এফএম (FM) এর মধ্যে পার্থক্য

চলুন এই বিষয়টি কোন টেকনিক্যাল ভাবে না বুঝিয়ে সহজ করার জন্য একটি ব্যাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। মনে করুন আমি সমুদ্রের মধ্যে একটি বড় নৌকায় অবস্থান করছি এবং এখানে আমাকে একটি বেতার ট্রান্সমিটার হিসেবে ধরুন—এবং মনে করুন আপনি সমুদ্রের তীরে অবস্থান করছেন এবং আপনি একটি বেতার রিসিভার। এখন মনে করুন আমি আপনার কাছে বড় বড় ঢেউ পাঠাতে চাচ্ছি, তাহলে আমাকে আমার নৌকাটি যতোবেশি সম্ভব পানিতে দোলাতে হবে—যাতে বড় আকারের ঢেউ আপনার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারি।

এখন যদি সমুদ্রে আগে থেকেই ঢেউ থাকে এবং সেগুলো যদি তীরে অর্থাৎ আপনার কাছে ধেয়ে যেতে থাকে তবে আমার নৌকা দুলিয়ে ঢেউ তৈরি করার মাধ্যমে সমুদ্রে আগে থেকেই থাকা ঢেউকে আরো বড় এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। এই অবস্থায়, আমি সিগন্যাল পাঠাতে তরঙ্গ বৃদ্ধি করে কারিয়ারের মতো কাজ করছি, কেনোনা আমি তরঙ্গের উচ্চতা পরিবর্তন করে দিচ্ছি। এবং এই অবস্থায় আমি আমার সিগন্যালকে প্রেরন করার জন্য তা প্রশস্ত করছি ফলে এই প্রক্রিয়াটি হবে অ্যামপ্লিটিউড মডুলেশন (এএম)।

অন্যদিকে, এবার ধরুন আমি আমার নৌকাকে উপর নিচে না দুলিয়ে আমি আমার হাত পানিতে দিলাম এবং খুব জোরে জোরে আগে পিছে নাড়াতে থাকলাম। এর ফলে আমি এখন ঢেউ এর ভ্রমন আরো বাড়িয়ে ফেলবো এবং একাধিক ঢেউ তৈরি করতে পারবো (কেনোনা হাত নাড়ানতে অনেক ঢেউ সৃষ্টি হবে)। এখানে আমি ঢেউ এর ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করছি। এবং এই ক্ষেত্রে আমার প্রেরন করা সিগন্যাল ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন (এফএম) পদ্ধতিতে ভ্রমন করবে। কোন তরঙ্গের আকার পরিবর্তন করে তথ্য পাঠানো হলো অ্যানালগ প্রযুক্তির উদাহরণ। এর মানে হলো আপনি যে তথ্যটি পাঠাতে চাচ্ছেন তা রূপান্তরিত করার জন্য কোন কিছুর সরাসরি ফিজিক্যাল পরিবর্তন করছেন।

এএম এবং এফএম নিয়ে সবচাইতে বড় সমস্যা হলো প্রোগ্রাম সিগন্যালটি ঐ তরঙ্গের একটি অংশে পরিণত হয় যে তরঙ্গে সিগন্যালটি বহন হচ্ছে। সুতরাং, যদি ঐ তরঙ্গের প্রবাহে কিছু ঘটে তবে প্রোগ্রাম সিগন্যাল সহজেই হারিয়ে যেতে পারে। আর এই সিগন্যালকে ফেরত পাওয়ার আর কোন অপশন থাকে না। আচ্ছা চলুন, ব্যাপারটি আরেকটি উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি।

মনে করুন আমি নৌকা থেকে তীরের দিকে ঢেউ তৈরি করে পাঠাচ্ছি—এই অবস্থায় আমার নৌকা এবং তীরের মধ্যে দিয়ে যদি কোন স্পীড বোট পার হয়ে যায় তবে আমার তৈরি করা ঢেউ স্পীড বোটের সাথে ধাক্কা লেগে বিলীন হয়ে যাবে। আর এই জন্যই কোন সিগন্যাল সমস্যা হলে অ্যানালগ রেডিও গুলোতে শব্দ আটকে আটকে যায় (বিশেষ করে গাড়ীতে বেতার সোনার সময়)। ডিজিটাল রেডিও এই সমস্যাকে সমাধান করার জন্য বেতার সম্প্রচারকে একটি কোডে পরিণত করে প্রেরন করে—আলাদা নাম্বারিক কোডে সিগন্যাল প্রেরন করার জন্য তা বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে হারিয়ে যায় না। চলুন এবার এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

ডিজিটাল রেডিও

আপনি গাড়ি চালাচ্ছেন আর বেতারে আপনার প্রিয় মিউজিক উপভোগ করছেন। গাড়ি চালাতে চালাতে একসময় ব্রীজের নিচের রাস্তায় প্রবেশ করলেন কিংবা কোন ট্যানেলে প্রবেশ করলেন—এবার দেখবেন আটকা আটকা শব্দ, সো সো পো পো শব্দ আপনার পছন্দের গানকে একদম জগাখিচুড়ী বানিয়ে ফেলেছে।

মানুষ যখনই বর্তমান প্রযুক্তি নিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হয় ঠিক তখনই নতুন আর আগের থেকে উন্নত কোন প্রযুক্তির আবিষ্কার করে বসে। আর এভাবেই আবিষ্কৃত হয়েছিলো ডিজিটাল রেডিও। ডিজিটাল বেতার—শব্দ এবং গান গুলোকে নাম্বারে জড়িত করে বাতাসে প্রেরন করে।

তাই কোন যায় আসে না, আপনার বেতার রিসিভার আর ট্রান্সমিটারের মাঝখানে কি আসলো। আপনি সবসময় সম্পূর্ণ পরিষ্কার অডিও উপভোগ করতে পারবেন। আর ডিজিটাল প্রযুক্তির রয়েছে অনেক বেশি ফাইদা। তাই ডিজিটাল বেতারে থাকে স্ক্রীন আর সেখানে গানের গায়কের নাম, অনুষ্ঠানের নাম, পরবর্তী অনুষ্ঠানের নাম ইত্যাদি প্রদর্শিত করানো যায়।

কীভাবে ডিজিটাল রেডিও অ্যানালগ থেকে আলাদা?

চলুন আবার ফিরে যাওয়া যাক পূর্বের সেই নৌকা আর তীরের উদাহরণে—কীভাবে এবার একটু ডিজিটাল ভাবে উদাহরণ দেবো! মনে করুন আমি নৌকাতে শতাধিক প্ল্যাস্টিকের বোলত বহন করছি। এখন মনে করুন আমি কোন সমস্যায় পড়ে গেলাম, তাই তীরে থাকা আপনাকে কোন ম্যাসেজ পাঠাতে চাই। মনে করুন আমি আপনাকে “১২৩৪” এই ম্যাসেজটি পাঠাতে চাই।

তাহলে ৪টি বোতলের গায়ে যথাক্রমে “১২৩৪” লিখে সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে দিলেই আপনার কাছে চলে যাবে। এখন মনে করুন আমি ১০,২০টি বোতলে একই সংখ্যা গুলো বারবার লিখে পাঠালাম যাতে আপনার কাছে কোন হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছাড়ায় ম্যাসেজ পৌঁছাতে পারে। এখন যদি কোন স্পীড বোট আপনার আর আমার মাঝে চলেও আসে তবে হয়তো কিছু বোতল যেতে বাঁধা পাবে, কিন্তু যেহেতু আমি একই নাম্বার লিখে আরো অনেক বোতল ছেড়েছি তাই কোন না কোন একটি বোতল তো আপনার কাছে অবশ্যই পৌঁছাবে। এবং পরিশেষে আপনি আমার সম্পূর্ণ ম্যাসেজটি পেয়ে যাবেন।

আর এভাবেই ডিজিটাল রেডিও কাজ করে থাকে

  • ট্রান্সমিটার বেতার প্রোগ্রাম সিগন্যালকে ভেঙ্গে টুকরা করে প্রত্যেকটি টুকরা নাম্বারিক কোডে প্রেরন করে।
  • ট্রান্সমিটার একেকটি টুকরাকে বহুবার প্রেরন করে—যাতে কোন টুকরা হারিয়ে গেলেও, আরেকটি এসে তা পূরণ করে দেয়।

সিগন্যাল বাঁধা পাওয়া ঠেকাতে ডিজিটাল বেতার সিগন্যাল, বেতার ফ্রিকোয়েন্সির অনেক বেশি ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করে—এবং এর ফ্রিকোয়েন্সি অ্যানালগ বেতারের তুলনায় প্রায় ১৫০০ গুন বেশি প্রশস্ত হয়ে থাকে। আবার নৌকার উদাহরণে ফিরে আসলাম—যদি সমুদ্রের ঢেউকে ১৫০০ গুন বেশি প্রশস্ত করা যায় তবে এমনিতেই যেকোনো স্পীড বোট কে এড়িয়ে কোন জিনিষ তীরে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই চৌরা ফ্রিকোয়েন্সিতে একসাথে অনেক তথ্য পাঠানো যায়। আর সকল তথ্যকে একত্রিত করার পদ্ধতিকে মাল্টিপ্লেক্সিং বলা হয়ে থাকে। সিগন্যালের সাথে একত্রিত করে গান, গানের নাম, চ্যানেলের নাম, ডিজের নাম ইত্যাদি পাঠানো হয়।

কেন রেডিও তরঙ্গ গুলো সব একসাথে মিশ্রিত হয়ে যায় না?

টিভি থেকে শুরু করে জিপিএস স্যাটালাইট পর্যন্ত সবই প্রায় তাদের তথ্য বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে বাতাসে ছুড়ে মারে। তাই আপনার আশ্চর্য হওয়া একদমই স্বাভাবিক যে কেন এই আলাদা সিগন্যাল গুলো একসাথে মিশ্রিত হয়ে যায় না? বর্তমানে আমাদের কাছে রয়েছে ডিজিটাল সম্প্রচার করার সিস্টেম। আর এই পদ্ধতিতে কঠিন গাণিতিক কোড ব্যবহার করে একটি সিগন্যালকে আরেকটি সিগন্যাল থেকে খুব সহজেই আলাদা রাখা সম্ভব।

আর এই জন্যই একই শহরে এবং একই এলাকায় অবস্থিত হাজার হাজার সেলফোন থেকে একসাথে কথা বলা যায় এবং কেউ কারো কথা শুনতে পায় না। কিন্তু যদি ফিরে যাওয়া হয় আগের যুগে—যখন বেতার সম্প্রচার করা হতো অ্যানালগ পদ্ধতিতে, তখন কীভাবে সিগন্যাল আলাদা রাখা সম্ভব হতো? আসলে বিভিন্ন বেতার সিগন্যালের জন্য বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হতো।


তো এই ছিল আজকের এই পোস্ট। আশা করছি অনেক ভালো লেগেছে আপনাদের। আমার যথাসাধ্য চেষ্টা দ্বারা আমি সম্পূর্ণ বিষয়টিকে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আপনার যেকোনো প্রকারের প্রশ্নে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করুন। আর পোস্ট যতো বেশি শেয়ার করবেন ততো তাড়াতাড়ি কমিউনিটি সাইট চলে আসবে 🙂 ধন্যবাদ 🙂

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button