বর্তমানে ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রসারের ফলে এটিএম এর ব্যবহার পর্যন্ত কমে আসছে। তবে এখনো দেশের প্রচুর মানুষ এটিএম মেশিন থেকে টাকা তুলে থাকেন প্রয়োজনে। হাতের নাগালে ব্যাংকের এটিএম বুথ থাকায় এটিএম থেকে টাকা তোলার বেশ সুবিধা রয়েছে।
অনেকে এটিএম মেশিনের বিভিন্ন সমস্যার কারণে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে অধিক নিরাপদ বলে মনে করেন। এটিএম মেশিনের মধ্যে টাকা আটকে যাওয়ার এমন সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এটিএম মেশিনে টাকা আটকে গেলে কি করবেন? সে প্রশ্নের যথাযথ উত্তর জানবেন এই পোস্টে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এটিএম মেশিনে টাকা আটকে গেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত।
লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ করুন
এটিএম উইথড্রয়াল এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেও টাকা না পেলে ও একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিলে সেক্ষেত্রে হতভম্ব না হয়ে প্রথমে ট্রানজেকশন স্লিপটি আপনার কাছে সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।এই স্লিপে আপনি কোনো এটিএম থেকে কত টাকা তুলেছেন তার প্রমাণ থাকে। তবে ট্রানজেকশন স্লিপ হাতে না পেলে সেক্ষেত্রেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ব্যাংক স্টেটমেন্ট থেকেও ট্রানজেকশন এর তথ্য বের করার সুযোগ রয়েছে।
ট্রানজেকশন স্লিপে লেনদেনের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ থাকে, যার ফলে অভিযোগ করার আগে অবশ্যই ট্রানজেকশন তথ্য সংগ্রহ করুন। এটিএম থেকে ট্রানজেকশন স্লিপ পেতে ব্যর্থ হলে সেক্ষেত্রে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট চেক করে সেখান থেকে উক্ত লেনদেনের তথ্য বের করতে পারবেন। এছাড়া মোবাইলে এসএমএস ও পাবেন, যদি একাউন্ট থেকে টাকা কেটে থাকে।
এটিএম মেশিনে টাকা আটকে গেলে বা টাকা বের না হলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। হয়ত আপনার একাউন্ট থেকে টাকা ঠিকই কেটে নিয়েছে। কিন্তু এটিএম মেশিন থেকে টাকা বের হয়নি। বুথে থাকা ক্যামেরাতে সার্বক্ষণিক সকল ঘটনার প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বুথে টাকা আটকে যাওয়া মেশিনের সমস্যার কারণে হতে পারে। এটিএম মেশিনে টাকা আটকে গেলে বুথে থাকা গার্ডকে বিষয়টি জানান ও লিপিবদ্ধ করে নিতে বলুন। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে টাকা আটকে যাওয়ার বিষয়টি জানান। কাস্টমার কেয়ার থেকে যদি উপযুক্ত সমাধান না পান, তাহলে উচিত হবে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো।
ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ও নির্দিষ্ট কর্মদিবসের মধ্যে বুথে আটকে যাওয়া অর্থ ব্যাংক থেকে আপনাকে প্রদান করা হবে। সাধারণত উক্ত টাকা আপনার একাউন্টেই আবার ফেরত দেয়া হবে। তবে কোনো কারণে যদি ব্যাংক আপনাকে আপনার পাওনা অর্থ প্রদান করতে না চায়, সেক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করতে পারেন।
লিখিত অভিযোগ জানান
ব্যাংকের কল সেন্টারে সমাধানের আশ্বাস না পেলে আপনার উচিত হবে ব্যাংকের শাখায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা। অভিযোগ এর সাথে অবশ্যই ট্রানজেকশন স্লিপ এটাচ করে দিতে ভুলবেন না। যেহেতু ট্রানজেকশন স্লিপে সময়, স্থান, এটিএম আইডি, রেসপন্স কোড, ইত্যাদি আইডেন্টিফায়িং তথ্য থাকে, তাই আপনার লেনদেন ভেরিফাই করতে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। লিখিত অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই লেনদেনের প্রমাণস্বরুপ ট্রানজেকশন স্লিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংযুক্ত করতে ভুলবেন না। ট্রানজেকশন এর প্রমাণ হলো এই স্লিপ বা স্টেটমেন্ট। তাই অভিযোগ দায়ের করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ট্রানজেকশন স্লিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ সংযুক্ত করুন।