ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন কে ? কখন করেছিলেন এবং সম্পূর্ণ ইতিহাস
ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন কে ?
দেখতে গেলে, ইন্টারনেটের আবিষ্কার বিশ্বের প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার গুলোর মধ্যে সব থেকে সেরা আবিষ্কার এর মধ্যে ধরা হয়।
কেননা, বর্তমান সময়ে পড়াশোনা, কাজ-কর্ম, সরকার (government) এবং সাধারণ লোকেরা প্রত্যেকেই এই ইন্টারনেটের সাথে যেকোনো সময় সংযুক্ত হয়ে রয়েছে।
আজ, যদি ৫ মিনিটের জন্যেও ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে থাকে তাহলে লাখ লাখ কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়ে যাবে। কেননা, বর্তমান সময়ে প্রায় প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আমরা ইন্টারনেটের ওপরেই নির্ভরশীল।
এমনিতে, ইন্টারনেট এর আবিষ্কার এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, এমন একটি টেকনোলজি তৈরি করা যার মাধ্যমে তথ্যের আদান প্রদান করা যেতে পারে।
বা এভাবেও বলা যেতে পারে যে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা প্রায় যেকোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি আবার নিজে জানা তথ্য গুলোকে এর মাধ্যমে অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করতে পারি।
যিহেতু, ইন্টারনেট এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার গুলো পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে রয়েছে তাই এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ লোকেরা পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে থাকতে পারছেন এবং নিজেদের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান করতে পারছেন।
যিহেতু বর্তমান সময়ে প্রায় প্রত্যেক কম্পিউটার ডিভাইস গুলোতে ইন্টারনেট এর সেবা সক্রিয় রয়েছে, তাই বলা যেতে পারে যে আজ প্রত্যেক জন মানুষ এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে রয়েছে।
ইন্টারনেট হলো এমন একটি প্রযুক্তি (technology) যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রায় প্রত্যেক ব্যক্তিকে একে আরেকজনের সাথে পরস্পরে সংযুক্ত করে রাখা হয়।
তাহলে, এমন একটি দারুন, কাজের এবং জনপ্রিয় প্রযুক্তির আবিষ্কার কে করেছেন সেটা জেনে নেওয়ার ইচ্ছে হয়তো আপনারও হয়ে থাকে।চিন্তা করবেননা, নিচে আমরা সম্পূর্ণ স্পষ্ট ভাবে জানেন নিবো যে আসলে ইন্টারনেট কে আবিষ্কার করেন এবং কত সালে ইন্টারনেট আবিষ্কার করা হয়।
ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন কে ?
ইন্টারনেট আবিষ্কার কে এবং কখন করেছিলেন, এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো সোজা উত্তর দেওয়াটা তেমন সোজা কাজ নয়।
কারণ, ইন্টানেট একটি সাধারণ বা ছোট জিনিস না যেটাকে হটাৎ কেও আবিষ্কার করে দিতে পারতেন।
তবে বর্তমানে আমরা যেই Internet communication protocols system টি ব্যবহার করছি যেটাকে আবার Internet বলে বলা হয় সেটা আবিষ্কার করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে Vinton Cerf এবং Bob Kahn নামের এই দুজন ব্যক্তিদের।
ইন্টারনেটের বর্তমান পুনরাবৃত্তির আগে, কম্পিউটারের মধ্যে long-distance networking প্রথম বারের জন্য সম্পন্ন হয়ে থাকে ১৯৬৯ সালে।
এই প্রথম এক্সপেরিমেন্ট (experiment) করা হয়েছিল UCLA এবং Stanford এর দুটো রিসার্চ টীম এর দ্বারা।
তবে, পাশের কম্পিউটারের মধ্যে লগইন করার প্রাথমিক প্রচেষ্টায় সিস্টেম ক্র্যাশ হয়ে যায় এবং তারা অসফল হয়ে দাঁড়ান।
এর পর, লিওনার্ড ক্লেইনরকের (Leonard Kleinrock) নেতৃত্বে গবেষকরা, প্রথম two-node network তৈরি করতে সফলতা অর্জন করে থাকেন।
এই পরীক্ষার (experiment) সাথেই packet switching প্রক্রিয়ার প্রথম টেস্ট করা হয়েছিল।
Packet switching হলো সেই প্রক্রিয়াটি যার মাধ্যমে দুটো কম্পিউটারের মধ্যে ডাটার (data) আদান-প্রদান (transfer) করা সম্ভব হয়ে দাঁড়ালো।
Packet switching এর মাধ্যমে information গুলোকে ছোট ছোট ডাটার (data) প্যাকেট “packets” হিসেবে আলাদা করে নেওয়া হয় এবং যা পরে বিভিন্ন চ্যানেল জুড়ে পরিবহন করা হয় এবং শেষে গন্তব্যে (destination) ইনফরমেশন গুলো পুনরায় একত্রিত হয়ে যায়।
তাই, বর্তমান সময়েও কিন্তু প্যাকেট-স্যুইচিং পদ্ধতি ডেটা ট্রান্সফারের ভিত্তি হয়ে রয়েছে।
Cerf এবং Kahn এর দ্বারা ১৯৮০ সালে প্যাকেট সুইচিং এর মাধ্যমে ডাটা পরিবহন বা প্রেরণ করার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশিকা গুলো বিকশিত করা হলো।
এবং সেই নির্দেশিকা গুলোকেই আমরা TCP/IP, বা Transmission Control Protocol এবং Internet Protocol হিসেবে জানি।
Protocol এর TCP ভাগ এর কাজ হলো, data গুলোকে নেটওয়ার্ক এর মধ্যে দিয়ে প্রেরণ বা পরিবহন হওয়ার আগে packing করা এবং পৌঁছানর সাথে সাথে আবার সেগুলোকে unpacked করে দেওয়া।
এবং, আইপি উপাদান (IP component) টি ভ্রমণ সমন্বয়কারী (trip coordinator) হিসেবে কাজ করে থাকে যার মূল কাজ হলো ইনফরমেশন (information) গুলোকে এর শুরু বিন্দু থেকে তার শেষ বিন্দু পর্যন্ত সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া।
Kleinrock এর experiment এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়ে থাকে যে, দুটি কম্পিউটারের মধ্যে একটি সিঙ্গেল নেটওয়ার্ক (single network) তৈরি হওয়া সম্ভব।
তবে, Cerf এবং Kahn এর TCP/IP প্রদান করে থাকে একটি দক্ষ এবং বড় তবে পরস্পরে সংযুক্ত হয়ে থাকা নেটওয়ার্ক গুলোর (interconnected networks) ওয়েব (web) এর মূল আঁধার। আর এইভাবেই এর নাম হয় “ইন্টারনেট (Internet)“.
ইন্টারনেট এর ইতিহাস – History of Internet in Bangla
ইন্টারনেট শুরু হয়ে থাকে ১৯৬০ সালের মধ্যে তবে কেবল সরকারি গবেষক দের জন্য।
গবেষকরা তাদের মধ্যে তথ্য গুলো (information) শেয়ার করার জন্য এই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন।
তবে, জানুয়ারী 1, 1983 তারিখটি ইন্টারনেটের অফিসিয়াল জন্মদিন হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কেননা, এর আগে যেগুলোইবা computer networks ছিল সেগুলোর মধ্যে পরস্পরে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে কোনো স্ট্যান্ডার্ড উপায় ছিলোনা।
আর ওপরে আমি আগেই বলেছি যে, যখন Transfer Control Protocol/Internetwork Protocol (TCP/IP) নামের একটি নতুন communications protocol প্রতিষ্ঠিত করা হলো তখন এর মাধ্যমে আলাদা আলাদা নেটওয়ার্ক এর মধ্যে থাকা আলাদা আলাদা কম্পিউটার ডিভাইস গুলো পরস্পরে সংযুক্ত হতে পারলো।
1989 সালে, Berners-Lee দ্বারা World Wide Web (WWW) এর খোঁজ করা হলো। এটা সেই প্লাটফর্মটি যেটাকে বর্তমানে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করছি।
World wide web কে সরাসরি web বলেও বলা হয়।
এটা ইন্টারনেটের একটি ইনফরমেশন সিস্টেম (information system) যেটার মাধ্যমে documents এবং অন্যান্য web resources গুলোকে Uniform Resource Locators এর সাহায্যে খুঁজে বের করা হয়।
এই documents বা web resources গুলোকে মূলত hyperlinks এর মাধ্যমে পরস্পরে সংযুক্ত করে রাখা হয় আর যেগুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
Advanced Research Projects Agency Network (ARPANET)
Advanced Research Projects Agency Network (ARPANET), কে ইন্টারনেটের অগ্রদূত বলে বলা যেতে পারে।
এটা, U.S. Department of Defense’s Advanced Research Projects Agency (ARPA) এর একটি ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (wide area network) ছিল যেটাকে ইন্টারনেটের উন্নয়ন এর মূল ভিক্তি হিসেবে ধরা হয়।
ARPANET তৈরি করা হয়েছিল, leased lines এর মাধ্যমে পরস্পর সংযুক্ত কিছু packet-switching computers গুলোর দ্বারা।
1966 সালে এই নেটওয়ার্ক বিকশিত করার প্রচেষ্টা শুরু করা হয়েছিল।
ARPANET এর network এর মাধ্যমে বিভিন্ন Universities এবং research centers গুলোকে সংযুক্ত (link) করা হয়েছিল।
আজকে আমরা যেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছি এর শুরু (beginning) হয়েছিল এখান থেকেই।
ARPANET তৈরি করা হয়েছিল যাতে military জন্য একটি অধিক উন্নত এবং কার্যকর যোগাযোগ পদ্ধতি তৈরি করা যেতে পারে।
আমাদের শেষ কথা,,
তাহলে বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন কে এবং ইন্টারনেট এর ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারলাম।
ইন্টারনেট এমন একটি প্রযুক্তি বা এটা এমন এক মূল্যবান আবিষ্কার যেটার গুরুত্ব বর্তমানে প্রচুর রয়েছে।
আর এই ইন্টারনেট প্রযুক্তি যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বিশ্বজুড়ে নানান ধরণের বিপদ, সমস্যা এবং আর্থিক ক্ষতি সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক।
কেননা, আজ প্রত্যেকটি ব্যবসা, সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তর, প্রযুক্তি ইত্যাদি ইন্টারনেট এর ওপরে ভরসা করেই কাজ করছে।
শেষে, ইন্টারনেটের আবিষ্কারক কে বা ইন্টারনেট কে আবিষ্কার করেছে এই বিষয়ে লিখা আমাদের আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার অবশই করবেন।
এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করে অবশই জানিয়ে দিবেন।