Technology

স্মার্ট স্পীকার কি? কেন আপনার স্মার্ট স্পীকার প্রয়োজনীয় হবে?

কেন আপনার স্মার্ট স্পীকার প্রয়োজনীয় হতে পারে?

আজকের যেকোনো ডিভাজের সামনের দিকে দেখবেন “স্মার্ট” কথাটি জুড়ে গেছে। যখন পরিধান করার জিনিষ গুলোও আজ স্মার্ট হয়ে গেছে, তো স্পীকার কেন স্মার্ট হবে না বলুন, সেটা তো আগে থেকেই ইলেকট্রনিক ডিভাইজ, তাই না? স্মার্ট স্পীকার —হচ্ছে এমন একটি ডিভাইজ, যেটা সাধারণ যেকোনো স্পীকারের মতো দেখতে এবং সাধারণ স্পীকারের সব কাজ গুলো করতে পারে কিন্তু সাথে আরো অনেক ফিচার প্রদান করে যেগুলো সাধারণ স্পীকার থেকে পাওয়া যায় না। স্মার্ট স্পীকারের উদাহরণ স্বরূপ আপনি গুগল, অ্যামাজন, অ্যাপল স্পীকারের কথা বলতে পারেন। এই আর্টিকেল থেকে আপনি স্মার্ট স্পীকার সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন, সাথে আপনার এটি কেন প্রয়োজনীয় হতে পারে সেই ব্যাপার গুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করবো…


স্মার্ট স্পীকার

আগেই বলেছি, স্মার্ট স্পীকার শুধু মিউজিক প্লে নয়, আরো অনেক কিছু করতে পারে, যেটা আপনার সাধারণ স্পীকার করতে পারবে না। স্মার্ট স্পীকারের ভেতর স্মার্ট ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকে (গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, সিরি, আর করটানার মতো), যেটা আপনার প্রশ্ন শুনে আর উত্তর দিতে পারে। নামে আপনি স্পীকার’কে আপনার টু-ডু-লিস্ট, বাহিরের আবহাওয়া, ট্র্যাফিক ইত্যাদির জন্য জিজ্ঞাসা করতে পারবেন। তাছাড়া স্মার্ট স্পীকার ব্যবহার করে আপনি স্মার্ট হোম কন্ট্রোল করতে পারবেন। মানে এসি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন, লাইট অন অফ করতে পারবেন, দরজা লক করতে পারবেন, সিকিউরিটি মনিটর করতে পারবেন এবং সাথে আরো অনেক কিছু।

যাই হোক, যদিও স্মার্ট স্পীকারের কোন অফিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ড নেই, মানে কোন স্পীকার’কে স্মার্ট স্পীকার নামে লেবেলিং করা হয় না, কিন্তু কিছু ফিচার রয়েছে যেগুলো কোন স্পীকারের মধ্যে বিদ্যমান থাকলে সেটাকে স্মার্ট স্পীকার বলে গণ্য করা হয়। প্রথমত স্পীকারের সাইজ ছোট আকারের হয়, যাতে সেটাকে যেখানে সেখানে আরামে বহন করে নিয়ে যাওয়া যায় এবং ঘরের যেকোনো কোনায় সেটাকে সেট করা যায়। স্মার্ট জিনিষ তো অবশ্যই পোর্টেবল হতে হবে তাই না? আলাদা স্পীকার গুলোকে যেমন আপনার টিভি বা স্মার্টফোন বা হোম থিয়েটার সিস্টেমের সাথে কানেক্ট হয়ে কাজ করতে হয়, কিন্তু স্মার্ট স্পীকার নিজেরই মিউজিক জেনারেট করার সিস্টেম থাকে। যদি এই স্পীকার আলাদা স্পীকারের মতোই মিউজিক প্লে করে কিন্তু এই স্পীকার তৈরির ডিজাইন আলাদা হয়ে থাকে।

সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে আপনার স্মার্ট-স্পীকারটি ইন্টারনেট সমর্থন করে। ফলে স্পীকারটি অনলাইন থেকে তথ্য পড়ে আপনার প্রশ্নের উত্তর কিংবা তার নিজের সার্ভারের সাথে যোগাযোগ রেখে আপনাকে আরো বেটার সার্ভিস প্রদান করতে পারে। যদিও সব মডেলের স্পীকারে ইন্টারনেট সেবা থাকে না, কিন্তু গুগল, অ্যাপেল, বা অ্যামাজন স্পীকার গুলোতে ইন্টারনেট পাওয়া যায় সাধারণত। শুধু ইন্টারনেট নয়, সাথে এটিতে ব্লু-টুথ এবং ওয়াইফাই ও থাকে। ব্লুটুথের মাধ্যমে এটি স্মার্টফোন থেকে মিউজিক প্লে করতে পারে এবং ওয়াইফাই স্পীকারটি’তে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে। আবার আপনি চাইলে স্মার্ট স্পীকার থেকে আলাদা ব্লুটুথ সমর্থন করে এমন স্পীকারেও মিউজিক এক্সপোর্ট করতে পারবেন।

এবং সাথে হ্যাঁ, অবশ্যই এই মডার্ন স্পীকারে ডিজিটাল ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সুবিধা পাবেন। যেটাকে ভয়েজ কম্যান্ড দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচারে আপনি অনেক টাইপের কাজ করতে পারবেন। আপনি নিজের জন্য যেকোনো রিমেইন্ডার সেট করে রাখতে পারবেন, স্মার্ট হোম নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন, কোন কিছু সার্চ করতে পারবেন, লাউড স্পীকারে কল করতে পারবেন, সাথে আরো স্মার্ট ডিভাইজ যেমন টিভি’র সাথেও একে কানেক্ট করে কাজ করতে পারবেন।

কেন আপনার স্মার্ট স্পীকার প্রয়োজনীয় হতে পারে?

আজকের পৃথিবী’তে এমনতেই সবকিছু স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে, স্মার্ট বলতে পারেন একটি ট্রেন্ডে পরিনত হয়েছে। যদি কথা বলি, স্মার্ট স্পীকার নিয়ে, তো অবশ্যই এটাতে কিছু স্মার্ট ফিচার রয়েছে আর যার কারণে অবশ্যই আপনার এটি পছন্দ হবে। বলতে পারেন, আমাদের কাছে স্মার্টফোন কেন এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে? —কেনোনা এতে সবকিছু একসাথে কন্ট্রোল করার সুবিধা রয়েছে। স্মার্টফোন আসার পড়ে অ্যালার্ম ঘড়ি, মিউজিক প্লেয়ার, টর্চ লাইট, ইত্যাদি সহ অনেক কিছুরই আর আলাদা প্রয়োজন নেই। ঠিক তেমনিই স্মার্ট স্পীকারে আপনি একসাথে অনেক কিছু করতে পারবেন। আপনার অ্যালার্ম ঘরির দরকার পড়বে না, ঘরের সুইচ ম্যানুয়ালি অন অন অফ করতে হবে না, এমনকি মোবাইল ফোন কানেক্ট না করেই এই স্পীকার নিজে থেকে মিউজিক প্লে করতে পারবে আর আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাজ গুলোর কথা সময় মতো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে।  অথবা হোম অডিও সিস্টেমের সাথে ব্লুটুথ ব্যবহার করে স্পীকার’কে সহজেই কানেক্ট করতে পারবেন।

আপনি সহজেই বাড়ির যেকোনো স্থানে এই স্পীকার’কে প্লেস করতে পারবেন, কেনোনা এটি পোর্টেবল সাথে অবশ্যই ভয়েজ কন্ট্রোল করার সুবিধা তো থাকছেই। আপনাকে ডেইলি নিউজ পেপার পড়ার জন্য কাগজ উল্টাতে হবে না কিংবা স্মার্টফোন বা পিসি দেখেতে হবে, নিউজ গুলো স্মার্ট স্পীকারই আপনাকে পড়ে শুনাবে, সাথে আবহাওয়ার খবর, খেলার খবর, আরো গুরুত্বপূর্ণ নিউজ গুলো তো পাবেনই।  সাথে আপনার বাড়িতে থাকা অনেক স্মার্ট ডিভাইজের সাথে এটি কানেক্ট হয়ে আপনাকে আরো বেটার সার্ভিস প্রদান করতে পারবে। যদি কথা বলি এর সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়ে, তো অ্যাপেল আর গুগল স্পীকার আজকের অনেক ট্র্যাডিশনাল স্পীকারকেও টক্কর দিতে সক্ষম। মিউজিক প্লেব্যাকের ক্ষেত্রে এক অসাধারণ এক্সপেরিএন্স পেতে পারবেন।


তো আপনি যদি একজন স্মার্ট পার্সন সাথে টেক লাভার হয়ে থাকেন, তো অবশ্যই স্মার্ট স্পীকার আপনার অনেক কাজের হতে পারে। যদি আপনি ঘরের পুরাতন অ্যালার্ম ঘড়ি আর মোবাইলে ইন্টারনেট বা ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে খুশি থাকেন, তাহলে স্মার্ট স্পীকার আপনার তেমন একটা প্রয়োজনীয় হবে না। সাথে এটি সিঙ্গেল পার্সনের মিউজিক এক্সপেরিএন্স প্রদান করার জন্য। এই দামে আপনি অনেক ভালো সাধারণ স্পীকার কিনতে পাবেন, যেটা আর লাউড কোয়ালিটি প্রদান করবে। যদি কথা বলি স্মার্ট হোম নিয়ন্ত্রন করার কথা, তো আমাদের দেশে কয়জনের স্মার্ট হোম রয়েছে বলুন? বাহিরের দেশ গুলোকে টার্গেট করে কোম্পানিরা এই ধরণের স্মার্ট প্রোডাক্ট তৈরি করে। কিন্তু যদি কথা বলি টেক লাভার হিসেবে, তো অবশ্যই আপনার ট্রায় করা উচিৎ!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button