Technology

সেভিংস একাউন্ট কি ? সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা গুলো কি

সেভিংস একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে ?

প্রায়শই আমরা অর্থ উপার্জন ও ব্যয়কেই অর্থের দুটি প্রধান কাজ হিসাবে ভেবে থাকি।

কিন্তু, আসল মজা শুরু হয় তখন, যখন আমরা আমাদের কষ্টে উপার্জন করা টাকা সঞ্চয় করতে শিখি।

আর, এই টাকা জমানোর ও বৃদ্ধির সবথেকে সেরা, বিশ্বস্ত ও নিরাপদ রাস্তা কিন্তু হল যেকোনো ব্যাঙ্কে নিজের একাউন্ট খুলে সেখানে টাকা গচ্ছিত রাখা।

আজকে, আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো, সেভিংস একাউন্ট মানে কি, এই একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, এর কাজ ও সুবিধাগুলো সম্পর্কে।

এখান থেকে আপনারা সেভিংস একাউন্ট সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পাবেন। প্রথমে আমরা জানি সেভিংস একাউন্ট কাকে বলে ?

সেভিংস একাউন্ট কি ?

আমাদের অনেকের কাছেই একটি সেভিংস বা সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট হল, আমাদের পছন্দের ব্যাঙ্কে নিজেদের চেকিং অ্যাকাউন্টের বদলে তৈরী করা একটা বিকল্পমাত্র।

কিন্তু, এই সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট গুলো মূলত, আমাদের অর্থ সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়।

যেখানে একটা চেকিং অ্যাকাউন্ট শুধুমাত্র আমরা মাসিক খরচ এবং দৈনন্দিন লেনদেনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করি।

আর, যেকোনো একটা সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট হল আমাদের জরুরী তহবিল সঞ্চয় করার একটা উপযুক্ত মাধ্যম।

এছাড়াও, বেশিরভাগ ব্যক্তিরাই একই ব্যাঙ্কে দুই ধরণের অ্যাকাউন্টই রেখে থাকেন; তাই আপনি আপনার প্রয়োজনে এই দুটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই সহজে অর্থ লেনদেন করতে পারেন।

সেভিংস একাউন্ট-এর সংজ্ঞা:

সঞ্চয় একাউন্ট (savings account) হল সবচেয়ে মৌলিক ধরনের অ্যাকাউন্ট।

যেটি আপনি ভারতের তথা বিশ্বের যেকোনো ব্যাঙ্কে খুলতে পারেন।

সংজ্ঞা অনুসারে, একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট আপনাকে, ব্যাঙ্কে আপনার টাকা নিরাপদে জমা রাখার অনুমতি দেয়।

সেই জমানো টাকা কখনোই আপনাকে অরক্ষিতভাবে বয়ে বেড়াতে হবে না।

কিংবা, আপনার বাড়িতে অসুরক্ষিতভাবে জমিয়ে রাখারও প্রয়োজন পড়বে না।

তবে, আপনি আপনার প্রয়োজনমতো, যখন খুশি, যেভাবে খুশি আপনার জমানো টাকাগুলো এই একাউন্ট থেকে তুলতে পারবেন।

এই সেভিংস অ্যাকাউন্ট হল লিকুইড ইনভেস্টমেন্ট পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।

তাই, যেকোনো ধরণের লেনদেন পরিচালনার জন্য এই ধরণের একাউন্টগুলো খুব সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব৷

অর্থাৎ, নিয়মিত বিনিয়োগের তুলনায় আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে খুব সহজেই যেকোনো জায়গায় ও যেকোনো সময়ে টাকা তোলা যায়।

যদিও, সেভিংস অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ঘনঘন টাকা তোলার ব্যপারে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

তবে, অনেকক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের এই সঞ্চয়ী খাতাগুলো বেশ কিছু ব্যতিক্রমী নমনীয়তাও প্রদান করে থাকে।

যাতে, আপনি সহজেই আপনার জরুরী তহবিল থেকে কোনোরকম কোনো দ্বন্দ্ব ছাড়াই টাকা তুলতে পারেন।

আপনি স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য; যেমন- গাড়ি কেনা, প্রসাধনী কেনা বা ঘুরতে যাওয়ার মতো খরচগুলো এই ধরণের একাউন্ট থেকেই করতে পারবেন।

কিংবা, শুধুমাত্র উদ্বৃত্ত নগদ অর্থ সঞ্চয়ের জন্যেও এটিকে আরামসে ব্যবহার করতে পারেন।

অনলাইন সেভিংস একাউন্ট:

বর্তমানে ইন্টারনেট-নির্ভর ডিজিটাল যুগে আপনি একটি অনলাইন সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে ও ব্যবহার করতে পারেন।

যাতে, আপনি আপনার মোবাইল, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ব্যবহার করে যেকোনো জায়গা থেকেই আপনার অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন।

সাধারণত, এই অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলোতে উচ্চ সুদের হার দেওয়া হয়ে থাকে।

সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা গুলো কি কি ?

যেকোনো ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টরই বেশ কিছু সাধারণ সুবিধা আছে।

আর, প্রতিটি ব্যাঙ্ক এই সঞ্চয় খাতা খোলার জন্যে আমাদের সাহায্য করতে আগ্রহী থাকে।

একজন অ্যাকাউন্ট ধারক হিসেবে, আপনি আপনার সঞ্চয় থেকে সর্বাধিক সুবিধা পেতে নিজের পছন্দসই বিভিন্ন ধরণের সেভিংস অ্যাকাউন্টের মধ্যে, যেটি আপনাকে সেরা বৈশিষ্ট্য প্রদান করতে পারবে, সেটা আপনি বেছে নিতে পারেন।

সেভিংস একাউন্টের সেরা ১০ টি সুবিধা:

চলুন, তাহলে আমার জানি সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুবিধাগুলি সম্পর্কে –

১. আপনার অর্থের সুরক্ষা:

ব্যাঙ্কে সঞ্চয় খাতা থাকা মানে আপনার অর্থের সুরক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ব্যাঙ্কের হাতে।

আপনার সাথে বিশাল পরিমাণ ধনরাশির থাকার অর্থ হল, চুরি যাওয়ার ভয়, প্রাণহানির ঝুঁকি, হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা কিংবা কোনো ভয়ানক দুর্যোগের কারণে টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা।

এইসব বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে এড়াতে একটি সেভিংস একাউন্ট হল আপনার ভরসার জায়গা।

২. সহজ লোনের ব্যবস্থা:

যেকোনো ব্যাঙ্কে আপনার নামে একটা সেভিংস একাউন্ট থাকার অর্থ হল, আপনি ব্যাঙ্কের কাছে বিশ্বাসযোগ্য।

যখন আপনার একাউন্টে প্রতি মাসে ন্যায্য পরিমাণ অর্থ পড়ে, তখন ব্যাঙ্ক আপনাকে ক্রেডিট বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।

যদি, ব্যাঙ্ক দেখে যে, আপনার মাসিক আয়, আপনার নেওয়া ক্রেডিট বা ইএমআই কভার করতে পারবে, তাহলে আপনি সহজেই ব্যাংক বা  ক্রেডিট কার্ড থেকে ঋণ পেতে পারবেন।

৩. ধারাবাহিকভাবে সুদের হার প্রদান:

একটা সেভিংস একাউন্ট আপনার জমানো ধনরাশির উপর নির্দিষ্ট সময়কালের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ প্রদান করে থাকে।

অনেক ব্যাঙ্কই মুদ্রাস্ফীতির হারের চেয়ে সামান্য বেশি সুদের হার অফার করে থাকে।

যদিও, একে আপনার অর্থকে সময়ের সাথে বাড়তে দেওয়ার একটি উপায় হিসাবে দেখা হয়।

তবে, এই ক্ষেত্রে এই সুদ দেওয়ার ব্যাপারটির আসল সুবিধা হল এই যে, আপনার নগদ অর্থের সুরক্ষা সবসময়েই বজায় থাকে।

৪. সহজ অর্থ ব্যবস্থাপনা:

একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট আপনাকে সহজ অর্থ ব্যবস্থাপনাতে সাহায্য করে।

এই ধরণের একাউন্ট থেকে আপনি সরাসরি অর্থ লেনদেন করতে পারেন।

কিংবা, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে তহবিল স্থানান্তরও করতে পারেন।

তাছাড়াও, আপনি এটিএম পরিষেবার মাধ্যমে আপনার অর্থ সহজেই পেয়ে যেতে পারেন।

৫. অবিলম্বে অর্থ প্রদানের পরিষেবা দেওয়া:

ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি অবিলম্বে আপনার ক্রয়ের জন্য অর্থ প্রদান করতে পারেন ৷

আপনার ডেবিট কার্ডটিকে ই-ওয়ালেট বা UPI পরিষেবার সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে আপনি আপনার সঞ্চয় একাউন্ট থেকে যে কারুর একাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করতে পারেন।

তবে, আপনার সঞ্চয় একাউন্ট না থাকলে কিন্তু ডেবিট কার্ডও থাকে না।

আর, ডেবিট কার্ড ছাড়া কোনোভাবেই ইনস্ট্যান্ট অর্থপ্রদান করা যাবে না।

কিছু কিছু ব্যাঙ্কের সেভিংস একাউন্টের আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি বিনামূল্যে যেকোনো দেশের ATM থেকে অর্থ তুলতে পারবেন।

৬. স্বয়ংক্রিয় বিল পরিশোধ করা:

বিলের অর্থ মেটানো প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

প্রতিমাসে বিল পরিশোধের ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ার দায়িত্ব ব্যাঙ্কের হাতে ছেড়ে দিতে পারেন।

আপনি সহজেই আপনার সেভিংস একাউন্টের সাথে যুক্ত ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিল মেটাতে পারেন।

আপনাকে শুধুমাত্র আপনার ব্যাঙ্ককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার বিল পরিশোধের টাকা দিয়ে দিতে নির্দেশ করতে হবে।

৭. টাকা ফেলা-তোলার অবাধ সুবিধা:

সেভিংস একাউন্টের প্রধান উদ্দেশ্যই হল অর্থ সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা।

বিপদকালীন পরিস্থিতিতে, আপনার টাকা সরিয়ে রাখার সুবিধাও আপনি এই সঞ্চয় একাউন্ট থেকে পেয়ে যাবেন।

ফিক্সড ডিপোজিটের পরিবর্তে, এখানে আপনার অর্থ কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধরে রাখা হয় না;

তাই আপনার প্রয়োজনমতো আপনি যখন খুশি টাকা তুলতে পারেন।

৮. অনলাইনে টাকার লেনদেন ট্র্যাক করা:

নেট ব্যাঙ্কিং বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে যেকোনো ব্যক্তি অনলাইনে তার টাকার লেনদেনের হিসাব রাখতে পারেন।

৯. আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা:

হাতের কাছে টাকা থাকলেই মানুষের খরচ করার একটা অহেতুক নেশা তৈরী হয়।

তাই, যদি আপনি সেভিংস একাউন্টে টাকা রাখেন, তাহলে আপনার চোখের সামনে টাকা থাকছেও না, অথচ আপনি আপনার প্রয়োজনের সময় ঠিকই সেই টাকা ব্যবহার করতে পারছেন।

তাহলে, এর ফলে আপনি সহজেই বাজে খরচা কমাতে পারছেন আর ঠিকভাবে টাকা সঞ্চয়ও করতে পারছেন।

১০. আয়কর দিতে সাহায্য করা:

যেহেতু, আপনার আয় সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা হয়, তাই সেখান থেকে আপনার মোট বার্ষিক আয়ের হিসাব রাখা সহজ।

আপনাকে কষ্ট করে সেইসব হিসেবে আর রাখতে হয় না।

তাছাড়া, আপনার আয়কর দাখিল করার সময়, আয়ের প্রমাণের জন্য সহজেই আপনার অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট ডাউনলোড করে নেওয়া যায়।

সেভিংস একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে ?

যেহেতু, সেভিংস একাউন্ট হল একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ ও আপনার ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয়ের সোজা ও সেরা উপায়গুলোর মধ্যে একটি৷

তাই, যেকোনো সঞ্চয় একাউন্টের গ্রাহকরা বার্ষিকভাবে তাদের সঞ্চিত অর্থের উপর অর্জিত সুদ পাওয়ার অধিকার রাখে।

এই সঞ্চয় খাতা খোলার সময় গ্রাহকদের তাদের KYC (Know Your Customer ) নথি, ঠিকানা ও পরিচয় প্রমাণ যাচাইকরণের জন্য ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয়৷

ব্যাঙ্ক এইসব নথিগুলি যাচাই করে নেওয়ার পরই, একজন গ্রাহক তার সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট খুলতে সক্ষম হন।

একটি সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যেসব নথির প্রয়োজন হয় –

১. ব্যক্তির পরিচয়ের প্রমাণপত্র:

নীচে উল্লেখ্য যেকোনো একটি নথি, যা সঠিকভাবে গ্রাহকের পরিচয় বহন করে, তার কপিগুলো যাচাই করার জন্যে ব্যাঙ্কে জমা করতে হবে।

এই সমস্ত নথিগুলো সরকার দ্বারা অনুমোদিত হওয়া বাধ্যতামূলক –

  • আধার কার্ড 
  • পাসপোর্ট 
  • প্যান কার্ড
  • ভোটার আইডি কার্ড 
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • কর্মচারী আইডি
  • ব্যাংক পাসবুক
  • রেশন কার্ড

২. ব্যক্তির ঠিকানার প্রমাণপত্র:

নীচে উল্লেখ্য সরকার অনুমোদিত নথিগুলো ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে, যাতে গ্রাহকের ঠিকানা যাচাই করা যায়৷

এই নথির মধ্যে যেকোনো একটি জমা দেওয়া যাবে –

  • ভোটার আইডি কার্ড 
  • পাসপোর্ট
  • রেশন কার্ড
  • গ্রাহকের বাসস্থানের ঠিকানা যাচাই করা স্বীকৃত সরকারি কর্তৃপক্ষের (গেজেটেড অফিসার) চিঠি
  • ব্যাঙ্ক পাসবুক বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট
  • বিগত ২ মাসের মধ্যেকার ইউটিলিটি বিল (যথা- বিদ্যুৎ, জল, টেলিফোন, ও গ্যাস) 
  • এলআইসি পলিসি/রসিদ

এছাড়াও, ব্যাঙ্কের দেওয়া সেভিংস একাউন্টের ফর্ম ফিলাপ করার সময় গ্রাহককে তার দুটো রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হবে।

এই নথিগুলো জমা দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক সেগুলোকে যাচাই করে, তারপর গ্রাহক তাদের প্রতিষ্ঠানে সেভিংস ব্যাঙ্ক একাউন্ট খোলার উপযোগী কিনা তা নির্ধারণ করবে।

আমাদের শেষ কথা,,

সেভিংস একাউন্ট কি এবং সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা গুলো নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।

আশা করছি, সেভিংস একাউন্ট এর বিষয়ে (About savings account in Bengali) সম্পূর্ণটা আপনারা বুঝতেই পেরেছেন।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি সত্যি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, সেটা কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button