রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২৪)
প্রশ্ন-১। আইসোটোপ ও আইসোবারের মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তরঃ আইসোটোপ হল একই পরমাণুর বিভিন্ন রূপ, যাতে ভর সংখ্যা ভিন্ন। আর আইসোবার হল একই ভরসংখ্যা বিশিষ্ট ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণু। কাজেই আইসোটোপসমূহের মধ্যে মৌলিক বৈশিষ্ট্যে অনেক মিল থাকবে, কিন্তু আইসোবারসমূহের মধ্যে কোন মিল নাও থাকতে পারে।
প্রশ্ন-২। নিউক্লিয়ার ফিউশান কাকে বলে?
উত্তরঃ যে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় উচ্চ তাপমাত্রায় দুটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস একত্রিত হয়ে অপেক্ষাকৃত ভারী নিউক্লিয়াসে পরিণত হয় এবং এর ফলে বিপুল পরিমাণ তাপশক্তির উদ্ভব হয় তাকে নিউক্লিয়ার ফিউশান বিক্রিয়া বলে।
প্রশ্ন-৩। নীলকান্তমণি কাকে বলে?
উত্তরঃ 98% (Al₂O₃) আলুমিনিয়াম অক্সাইড, 1.5% ফেরোসোফেরিক অক্সাইড (Fe₃O₄) এবং 0.5% টাইটানিয়াম অক্সাইড (TiO₂) এর মিশ্রণ নীল বর্ণের হয়, তখন তাকে নীলকান্তমণি বা সেফায়ার স্টোন বলে।
প্রশ্ন-৪। মেন্ডেলিফের সংশোধিত পর্যায় সূত্র কি?
উত্তরঃ ১৯১৩ সালে বিজ্ঞানী হেনরি মোসলে পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কারের পর মেন্ডেলিফ তার পর্যায় সূত্র সংশোধন করেন। সূত্রটি হচ্ছে- “মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক সংখ্যা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়”।
প্রশ্ন-৫। সার হিসেবে ইউরিয়া এর সুবিধা– ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কঠিন সারের মধ্যে একমাত্র ইউরিয়াতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ সর্বাধিক (46%) থাকে। অর্থাৎ, ইউরিয়া একটি ঘন সার। তাছাড়া এর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম। এতে কোনো ক্ষতিকারক বস্তু নেই। ইউরিয়া উদ্ভিদের পাতার গাঢ় সবুজ রং সৃষ্টিতে সহায়তা করে যা সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে বায়ু হতে উদ্ভিদের খাদ্য সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করে। ইউরিয়া সকল প্রকার মাটিতে এবং সকল প্রকার শস্যের জন্যই অতি ফলপ্রসূভাবে ব্যবহার করা যায়। তাই, ইউরিয়া সার হিসেবে অতি সুবিধাজনক।
প্রশ্ন-৬। মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার সংজ্ঞা কি?
উত্তরঃ সমযোজী বন্ধনের শেয়ারকৃত ইলেকট্রন যুগলকে কোন পরমাণু কর্তৃক নিজের দিকে অধিক আকর্ষণ করার ক্ষমতাকে ঐ পরমাণুর তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলা হয়। অধাতুর তড়িৎ ঋণাত্মকতা বেশি এবং তড়িৎ ঋণাত্মকতা কম। ফ্লোরিনের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সবচেয়ে বেশি, তারপর অক্সিজেন, ক্লোরিন, নাইট্রোজেন পরমাণুর স্থান।
প্রশ্ন-৭। ইমালশন কি?
উত্তরঃ ইমালশন হচ্ছে দুই বা ততোধিক তরল পদার্থের মিশ্রণ যেগুলো পরস্পর মিশ্রণীয় নয়। এগুলো দুই দশাবিশিষ্ট কোলয়েড জাতীয় পদার্থ।
প্রশ্ন-৮। জিটেক্স গ্লোভস কি?
উত্তরঃ ল্যাবরেটরিতে ছোটখাটো জলন্ত বস্তু নিয়ে কাজ করার সময় অ্যাসবেস্টস গ্লোভসের বিকল্পরূপে যে ক্যান্সার প্রতিরোধী গ্লোভস ব্যবহৃত হয় তাকে জিটেক্স গ্লোভস বলে।
প্রশ্ন-৯। সবুজ রসায়ন কি?
উত্তরঃ সবুজ রসায়ন হলো রসায়নের একটি বিশেষ শাখা যেখানে কোনো রাসায়নিক দ্রব্যাদির উৎপাদন, ব্যবহার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য টেকসই এবং নিরাপদ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রশ্ন-১০। গ্লাস ক্লিনারের উপাদানগুলো কি?
উত্তরঃ গ্লাস ক্লিনারের উপাদানগুলো হলো লিকার অ্যামোনিয়া, রাবিং অ্যালকোহল (আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল), ভিনেগার, সিলিকন, ওয়েটিং এজেন্ট (Surfactant), রং ও পানি।
প্রশ্ন-১১। ইলেকট্রন আকর্ষী বিকারক কি?
উত্তরঃ বিক্রিয়াকালে যেসব বিকারকের ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কার্বানায়ন বা এর ইলেকট্রনের প্রতি প্রবল আকর্ষণ থাকে এবং বিক্রিয়াকালে ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে ইলেকট্রন আকর্ষী বিকারক বা ইলেকট্রো ফাইল বলে।
প্রশ্ন-১২। বায়ােপলিমার কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল পলিমার সূর্যের আলােতে বিযােজিত হয় এবং পরবর্তীতে প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা বিযােজিত হয়, সে সকল পলিমারকে বায়ােপলিমার বলে।
প্রশ্ন-১৩। আংশিক চাপ কি?
উত্তরঃ একটি গ্যাস মিশ্রণে কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যে আয়তন দখল করে, মিশ্রণের অন্তর্গত একটি গ্যাস যদি ঐ একই তাপমাত্রায় এককভাবে সমান আয়তন দখল করে যে চাপ সৃষ্টি করে তাই হলো আংশিক চাপ।
প্রশ্ন-১৪। ক্ল্যাথরেট যৌগ কি?
উত্তরঃ ক্ল্যাথরেট যৌগ হলো বিশেষ ধরনের জৈব ও অজৈব যৌগ যাদের কেলাস জালির ফাঁকা স্থানের মধ্যে নিস্ক্রিয় গ্যাস মৌল অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে পারে।
প্রশ্ন-১৫। সমআয়তন প্রভাব কাকে বলে?
উত্তরঃ যে প্রভাবের কারণে স্বল্প দ্রবণীয় লবণের সম্পৃক্ত দ্রবণে সম আয়নবিশিষ্ট কোনো তীব্র তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ যোগ করলে স্বল্প দ্রাব্যতা বিশিষ্ট লবণের দ্রাব্যতার হ্রাস ঘটে তাকে সমআয়তন প্রভাব বলে।
প্রশ্ন-১৬। KCl যৌগের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ KCl যৌগের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা হলোঃ
১. উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক।
২. পোলার দ্রাবকে (পানি) দ্রবণীয় কিন্তু অপোলার দ্রাবকে অদ্রবণীয়।
৩. কঠিন অবস্থায় কেলাস আকারে থাকে।
৪. গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবাহী।
প্রশ্ন-১৭। ন্যানো পার্টিক্যাল কি?
উত্তরঃ ন্যানো পার্টিকেল হলো শূন্যমাত্রিক ন্যানো গঠনবিশিষ্ট অনিয়তাকার বা অর্ধস্ফটিকাকার পদার্থ যার মধ্যে অন্ততপক্ষে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতায় মান 1 থেকে 100nm এর মধ্যে।
প্রশ্ন-১৮। ল্যামবার্ট কী?
উত্তরঃ বিস্তৃত আলোক উৎসের আপাত ঔজ্জ্বল্য পরিমাপের একক হলো ল্যামবার্ট (Lambert)। কোনো আলোক উৎসের প্রতিবর্গ সেন্টিমিটার স্থান থেকে এক লুমেন আলোক নির্গত হলে তার ঔজ্জ্বল্য এক ল্যামবার্ট।
প্রশ্ন-১৯। রেডিও অ্যাকটিভ পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ রেডিয়াম নামক তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং তেজস্ক্রিয় আইসােটোপ যেমন – কোবাল্ট-60, ইলিডিয়াম-192 এবং ক্যাডমিয়াম-167 প্রভৃতি হতে পেনিট্রেন্ট রেডিয়েশন তৈরি হয়। এ সকল তেজস্ক্রিয় পদার্থকে রেডিও অ্যাকটিভ পদার্থ (Radio Active materials) বলে।
প্রশ্ন-২০। বিক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামকগুলি কি কি?
উত্তরঃ কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামকগুলি হচ্ছে- ১. বিক্রিয়কের প্রকৃতি, ২. বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা, ৩. চাপ (গ্যাসীয় বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে) ৪. তাপমাত্রা, ৫. আলো, ৬. প্রভাবক।