Basic Technology

ইনভার্টার এসির সুবিধা কি?

এয়ার কন্ডিশনার বা এসি সম্পর্কে জেনে থাকলে আপনি হয়ত ইনভার্টার এসি কথাটিও শুনতে থাকবেন। ইনভার্টার এসি হলো এয়ার কন্ডিশনিং প্রযুক্তির দুনিয়ায় লেটেস্ট ও গ্রেটেস্ট সংযোজন।

সাধারণ এয়ার কন্ডিশনার ১০০% ক্যাপাসিটিতে চলে। অধিকাংশ সময় এভাবে এসি চলতে থাকে, যা কিন্তু একমাত্র অপশন নয়। ব্যবহার ছাড়া ১০০% ক্যাপাসিটিতে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করে প্রচুর বিদ্যুৎ নষ্ট হয়। আর এই বিষয়টিকে সমাধান করতে পারে ইনভার্টার এসি। চলুন জেনে নেওয়া যাক ইনভার্টার এসি সম্পর্কে বিস্তারিত।

ইনভার্টার এসি কি?

ইনভার্টার এয়ার কন্ডিশনার কি – প্রথমে এই প্রশ্নের উত্তর জেনে নেওয়া যাক। ইনভার্টার এসি এর ধারণাটি বেশ সহজ। মূলত ভ্যারিয়েবল বা পরিবর্তনশীল কুলিং স্পিড আছে, এমন এসি কে বলা হচ্ছে ইনভার্টার এসি। আগেকার দিনের প্রযুক্তির এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের মত অধিক বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেই হাই-এফিসিয়েন্ট কুলিং পারফরম্যান্স প্রদান করে ইনভার্টার এসি।

সাধারণ এয়ার কন্ডিশনার হয়ত ০% বা ১০০% ক্যাপাসিটিতে চলে। এর মানে হলো ব্যবহারের সময় এয়ার কন্ডিশনার সবসবয় উচ্চ ক্যাপাসিটিতে থাকে। কিন্তু এই একই সিস্টেম অন্য কোনো মাধ্যমে ভেবে দেখুন। ধরুন আপনার কাছে একটি কার আছে যেটি হয়ত থেমে থাকে বা ১৫০ মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে চলে, বিষয়টি বেশ অদ্ভুত না? এখানে প্রয়োজন পরিবর্তনশীল স্পিড এর। একইভাবে এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম এর ক্ষেত্রেও পরিবর্তনশীল ক্যাপাসিটি প্রয়োজন।

ইনভার্টার এয়ার কন্ডিশনার এর মধ্যে যে কমপ্রেসার ইউনিট থাকে সেটা কুলিং এর ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে। ইনভার্টার এসি এর মাধ্যমে পাওয়া কুলিং মূলত রুম এর তাপমাত্রা ও সাইজের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ পুরো ঘরকে ঠান্ডা বাতাসে ভরিয়ে না দিয়ে বরং প্রয়োজন অনুসারে কুলিং প্রদান করে থাকে ইনভার্টার এসি।

 

ইনভার্টার এসি এর সুবিধা

ইনভার্টার এসি সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে। ইনভার্টার এসি এর ক্ষেত্রে কমপ্রেসার এর স্পিড নির্ভর করে ওয়ার্কিং লোড এর উপর, যার ফলে ইলেকট্রিক্যাল খরচ অনেক কম হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ইনভার্টার এসি এর সুবিধাসমূহ সম্পর্কে।

  • যেকোনো ধরণের ইনভার্টার এসি যেহেতু রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, ফ্লো রেট, ইত্যাদি প্রয়োজন অনুসারে এডজাস্ট করে থাকে, তাই অপেক্ষাকৃত কম কারেন্ট খরচ হয়।
  • কোনো অনুষ্ঠানের কারণে লোডে হঠাৎ পরিবর্তন আসলে এমন অবস্হা ইনভার্টার এসি বেশ ভালোভাবে সামাল দিতে পারে।
  • ইনভার্টার এসি ব্যবহারে বাড়তি খরচ থেকে বেঁচে থাকা যায় ও শুরুতে হওয়া বাড়তি খরচ ও মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে উসুল হয়ে যায়।
  • যেকোনো সাইজের রুমের জন্য ইনভার্টার এসি ব্যবহার করা যায়। ছোট রুম এর চেয়ে বড় স্পেসের ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি বিদ্যুৎ খরচ হলেও ঠিকই অন্য এসি এর তুলনায় অনেক কম খরচ হয়।
  • নির্দিষ্ট ও কাঙ্ক্ষিত রুম তাপমাত্রা মেইনটেইন করা যাবে যদি ইনভার্টার এসি ঠিকভাবে ইউটিলাইজ করা হয়।
  • সোলার পাওয়ার এর মাধ্যমে কুলিং ব্যবহার করতে চাইলে সেক্ষেত্রে ইনভার্টার এসি সবচেয়ে সেরা অপশন।
  • ইনভার্টার এসি বেশ দ্রুত কোনো স্পেস ঠান্ডা করতে পারে কারণ তখন সে তার পুরো স্পিড কাজে লাগাতে পারে।
  • ইনভার্টার এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিট এর ক্ষেত্রে শব্দ ও ভাইব্রেশন অনেক কম।
  • সাধারন এসি এর চেয়ে ইনভার্টার এসি এর কমপ্রেসর অধিক সময় ধরে ঠিকে থাকে। এসি কমপ্রেসর কাজ না করার মত সমস্যায় তেমন একটা পড়তে হয়না ইনভার্টার এসি এর ক্ষেত্রে। এর কারণ হলো স্টার্টআপ এর সময় কমপ্রেসর অধিকাংশ ড্যামেজ গ্রহণ করে ও যেহেতু ইনভার্টার এসি স্লোলি চালু হয়, তাই এটির ক্ষতি কমপ্রেসর এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

ইনভার্টার এসি এর অসুবিধা

ইনভার্টার এসি মানেই সোনায় সোহাগা, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। সবকিছুর মত ইনভার্টার এয়ার কন্ডিশনার এর রয়েছে কিছু অসুবিধা। চলুন ইনভার্টার এসি ব্যবহারের কিছু সমস্যা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • উচ্চ মূল্যঃ অন্যান্য স্প্লিট বা উইন্ডো এসি এর সাথে তুলনা করলে ইনভার্টার এসি এর দাম অনেকটা বেশি মনে হবে। ইনভার্টার এসি এর সাথে পাবেন বাড়তি অনেক ফিচার যার কারণে এর দাম অপেক্ষাকৃত কিছুটা বেশি। তবে এটিকে ইনভেস্টমেন্ট হিসেবেও দেখতে পারেন।
  • অধিক মেরামত খরচঃ ইনভার্টার এসি রিপেয়ার বা মেরামত করতে সাধারণ এসি মেরামতের চেয়ে অধিক খরচ হয়। এর মূল কারণ হলো ইনভার্টার এসি এর জটিল গঠন, যার ফলে এক্সপারট টেকনিশিয়ান ছাড়া এটি মেরামত সম্ভব নয়।

ইনভার্টার এসি vs নন-ইনভার্টার এসি

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক ইনভার্টার এসি ও নন-ইনভার্টার এসি এর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে।

নন-ইনভার্টার এসি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট স্পিডে নির্দিষ্ট আউটপুট দিতে পারে। যার ফলে প্রয়োজনীয় রুম তাপমাত্রা বজায় রাখতে এই ধরণের এসি এর কমপ্রেসর সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে আবার চালু হয়ে থাকে।

অন্যদিকে ইনভার্টার এসি এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় হিট বা কুলিং অনুসারে কমপ্রেসার এর স্পিড কমানো বাড়ানো যায়। অতিরিক্ত পাওয়ার প্রয়োজন হলে কমপ্রেসর এর স্পিড ও রেফ্রিজারেন্ট এর পরিমাণ বাড়বে, আবার একইভাবে কুলিং এর ক্ষেত্রে অধিক হিটিং ক্যাপাসিটি লাগবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button