সিম কার্ড ক্লোনিং থেকে কীভাবে বাঁচবেন জেনে নিন – মুহূর্তে টাকা গায়েব হয়ে যাবে অ্যাকাউন্ট থেকে
প্রযুক্তি যত উন্নয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে, ততই সমাজে বাড়ছে প্রতারণার ঘটনা। যেমন, বিগত বেশ কিছু বছর ধরে, অন্যের সিম কার্ড নিজের নামে পোর্ট করানোর মাধ্যমে লোক ঠকানোর ব্যবসা বেশ ভালোই রমরমিয়ে চলছে। এইরূপ, মোবাইল নম্বর পোর্টিং বা সিম কার্ড অদলবদল করার ঘটনা ‘সিম কার্ড সোয়াপিং’ (Sim Card Swapping) নামে পরিচিত। এই ধরণের স্ক্যাম, এযাবৎ ঘটমান যাবতীয় জালিয়াতি ঘটনার থেকে বহু গুন ভয়ঙ্কর। কেননা, প্রতারকরা সিম-সোয়াপিং টেকনিকের ব্যবহার করে ভিক্টিম ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করার পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস ব্যবহার করে মানি ট্রান্সফার করা বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার মতো বেআইনি কাজকর্মে নিযুক্ত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে, প্রতারকরা মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারীর সহায়তায় একই নম্বরে একটি নতুন সিম কার্ড ইস্যু করে। তারপর সেই মোবাইল নম্বর থেকে OTP সংগ্রহের মাধ্যমে পুরো স্ক্যামটি ঘটিয়ে থাকে। আর, হ্যাকাররা এতটাই নিঃশব্দে তাদের এই জোচ্চুরির কাজটি সম্পন্ন করে যে, ব্যাঙ্কে জমানো পুঞ্জি কখন বেহাতে স্থানান্তর হয়ে যাচ্ছে তা ভুক্তভোগী কাস্মিণকালেও টের পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে, ভুলবশত সিম সোয়াপিং কৌশলের ফাঁদে পরে গেলে কি করণীয় বা এধরণের ঘটনা এড়াতে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা আমাদের প্রতিবেদন থেকে জেনে নিতে পারেন।
সিম কার্ড জালিয়াতি কিভাবে ঘটে
১. প্রতারক প্রথমে – ফিশিং, ভিশিং, স্মিশিং-এর মতো সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজির মাধ্যমে একজন ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ এবং রেজিস্ট্রার্ড মোবাইল নম্বর জোগাড় করে।
২. এরপর, হ্যাকার আসল সিম ব্লক করার জন্য আবেদন করতে নকল আইডি প্রমাণ সহ মোবাইল অপারেটরের রিটেল আউটলেটে যায়।
৩. তারপর, যাচাইকরণ বা ভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, আসল সিম নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। এবার, সেই ভুয়া গ্রাহক বা অসৎ ব্যক্তিটিকে একটি নতুন সিম কার্ড দেওয়া হয়।
৪. পরিশেষে, ফ্রড ফিশিংয়ের মাধ্যমে, ভুক্তভোগী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লেনদেনের জন্য নতুন সিম ব্যবহার করা হয়।
সিম কার্ড সোয়াপিং প্রতারণার হাত থেকে কিভাবে নিরাপদ থাকবেন?
১. যদি আপনার নম্বর নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং যদি সেই নম্বরের সাথে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত থাকে, তাহলে অবিলম্বে আপনার মোবাইল অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করুন৷
২. সিম সোয়াপিংয়ের মতো অযাচিত প্রতারণার ঘটনা এড়াতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড সময়ে সময়ে পরিবর্তন করতে থাকুন।
৩. অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের জন্য, এসএমএস এবং ইমেল -এর ক্ষেত্রে অ্যালার্ট ফিচার এনাবল রাখুন। এই অপশনটি অন থাকলে, আপনার অজান্তে যদি ব্যাঙ্ক থেকে কোনও ট্রানজ্যাকশন করা হয়, তবে আপনি এসএমএস বা ইমেলের মাধ্যমে একটি অ্যালার্ট মেসেজ পেয়ে যাবেন।
৪. এছাড়াও, সর্বদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট চেক করা উচিত।
৫. এপ্রকারের জালিয়াতি যদি আপনার সাথে ঘটে, তবে অবিলম্বে আপনার ব্যাঙ্কের সাথে যোগাযোগ করুন এবং ট্রানজ্যাকশন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দিন।