বর্তমানে এসএমএস ও ফোন কল এর বিকল্পে পরিণত হয়েছে ইন্সট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ। পরিবার, বন্ধু, বা সহকর্মীদের সাথে দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কয়েকটি মেসেজিং অ্যাপ আমরা সবাই ব্যবহার করে থাকি। অসংখ্য মেসেজিং অ্যাপ এর ভীড়ে একটি পরিচিত নাম হলো ভাইবার। চলুন জেনে নেওয়া যাক ভাইবার কি, ভাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম, ও ভাইবার এর ফিচারসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভাইবার কি?
ভাইবার হলো একটি ফ্রি-টু-ডাউনলোড অ্যাপ যা ব্যবহার করে একজন ইউজার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অন্যান্য ভাইবার ইউজারদের মেসেজ পাঠাতে পারেন, ছবি শেয়ার করতে পারেন, অডিও ও ভিডিও কলে যোগাযোগ করতে পারেন। মোবাইল ফোনে ও ওয়েব ব্রাউজারে এই অ্যাপের সেবা ব্যবহার করা যায়। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ৯০০মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে অ্যাপটিকে কিনে নেয় রাকুটেন (Rakuten)।
ভাইবার মেসেঞ্জার একটি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যা জনপ্রিয় যোগাযোগের অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি। Statista এর মার্চ ২০২০ এর রিপোর্ট অনুসারে ১৯৩টি দেশের ১.১৭বিলিয়ন রেজিস্টার্ড ইউজার রয়েছে অ্যাপটিতে। ইউক্রেনে ভাইবার সবচেয়ে অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অ্যাপটির ব্যবহারকারীর তালিকায় আরো বড় অংক যুক্ত হয়েছে রাশিয়া, ভিয়েতনাম ও বেলারুশ থেকে। অ্যাপটিতে প্রতি মিনিটে ৭মিলিয়ন ইন্টারেকশন ঘটে থাকে বলে জানা যায়।
ভাইবার কিভাবে কাজ করে?
ভাইবার একটি মোবাইল নাম্বার ভিত্তিক সেবা, যা ভয়েস ওভার আইপি (VoIP) প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। ভাইবার ব্যবহার করতে ফোনে ভাইবার অ্যাপ ইন্সটল করতে হয়। এছাড়া কম্পিউটারের জন্য ভাইবার এর একটি ওয়েব ভার্সনও রয়েছে। গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল স্টোর থেকে ভাইবার অ্যাপটি ইন্সটল করতে পারবেন খুব সহজে।
একজন ভাইবার ইউজার অন্য ভাইবার ইউজারকে অনলাইনে বিনামূল্যে মেসেজ পাঠাতে পারেন ও কল করা যায়। আবার একটি নির্দিষ্ট ফি পে করার মাধ্যমে নন-ভাইবার ইউজারদেরকেও কল করতে পারেন ভাইবার ইউজারগণ। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারে ওয়েব প্ল্যাটফর্মে ভাইবার অ্যাপটি ব্যবহার করা যায়। তবে পিসি ভার্সনে ভাইবার ব্যবহার করতে হলে প্রথমে স্মার্টফোনে ভাইবার অ্যাপের মাধ্যমে ফোন নাম্বার দ্বারা ভাইবার একাউন্ট খুলতে হবে।
ভাইবার এর ফিচার
ভাইবার বেশ সহজ একটি মেসেজিং অ্যাপ যা দরকারি সব ফিচার অফার করছে। ভাইবার এর ফিচারসমূহ হলোঃ
- সকল ভাইবার ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে মেসেজ পাঠানো যায়
- ফ্রি অডিও ও ভিডিও কল করা যায়
- গ্রুপ তৈরী করে গ্রুপ চ্যাট ও গ্রুপ কল করার সুবিধা রয়েছে
- চ্যাটের মধ্যে ফটো ও ভিডিও শেয়ার করা যায়
- Seen Messages এডিট ও ডিলিট করা যায়
- Disappearing Messages পাঠানো যায়
- কমিউনিটি তৈরী করা যায়
- ভিডিও কলে ডেস্কটপ স্ক্রিন শেয়ার করা যায়
ভাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ভাইবার একাউন্ট খোলা যাবে। আপনার ফোন নাম্বার দ্বারা ভাইবার একাউন্ট খুলতে পারবেন। ভাইবার একাউন্ট খুলতে প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে Viber অ্যাপটি ইন্সটল করুন। অ্যাপ ইন্সটল করা হয়ে গেলে নিচে বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করে ভাইবার একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- আপনার স্মার্টফোনে ইন্সটল থাকা ভাইবার অ্যাপটি ওপেন করুন
- Privacy / Terms & Conditions পড়ুন ও Continue তে ট্যাপ করে এগিয়ে যান
- আপনার মোবাইল নাম্বারের কান্ট্রি কোডসহ মোবাইল নাম্বার প্রদান করুন
- এরপর এসএমএস এর মাধ্যমে একটি একটিভেশন কোড পাবেন
- মেসেজে প্রাপ্ত কোডটি অ্যাপে প্রদান করে ভাইবার প্রোফাইল ভেরিফাই করুন
- এরপর আপনার ভাইবার একাউন্ট তৈরী হয়ে যাবে
উল্লেখিত নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার ভাইবার একাউন্ট খুলে যাবে। একাউন্ট খোলার পর ফোনে থাকা কনটাক্টসমূহ অটোমেটিক ভাইবার একাউন্টের সাথে Sync হয়ে যাবে। উল্লেখ্য যে ভাইবার একাউন্ট খুলতে অবশ্যই মোবাইল নাম্বারের প্রয়োজন হবে। ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে ভাইবার প্রোফাইল একাউন্ট খোলার সুযোগ নেই। তবে একাউন্ট খোলার পর ভাইবার একাউন্টে ইমেইল এড্রেস যুক্ত করে রাকুটেন একাউন্ট মেম্বারশিপ এর মাধ্যমে অনেক নতুন অফার পেয়ে যাবেন।
আপনার ভাইবার একাউন্ট যদি স্পাম হিসেবে গণ্য করা হয় বা টার্মস ও ইউসেজ পলিসি লংঘন করলে সেক্ষেত্রে আপনার ভাইবার একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। ভাইবার একাউন্ট যদি ব্লক হয়ে যায় তবে ভাইবার ব্যবহার করে কোনো ধরনের মেসেজ পাঠাতে পারবেন না, কল ও করতে পারবেন না। আপনি যদি মনে করেন যে ভুলে আপনার ভাইবার একাউন্ট ব্লক করা হয়েছে, তবে সাপোর্ট টিকেট সিস্টেম এর মাধ্যমে একাউন্ট রিকভার এর আপিল করতে পারবেন