কম্পিউটারের ইতিহাস- The History of Computer Part 03
পকেট পিসি। Pocket PC
ইদানীং বিশ্বে পকেট পিসির কদর বেড়েছে। কয়েকটি উন্নত দেশে এই পিসি ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। এক হিসেবে দেখা যায়, শুধু মাইক্রোসফটাই এ ধরনের যন্ত্র বিক্রি করছে। ১.২৫ মিলিয়ন। এ কোম্পানিটি গত বছর মাঝামাঝি সময়ে পকেট পিসি বাজারে আনে। পকেট পিসি কেমন বিক্রি হবে বা এর বাজার কেমন চলবে তা নিয়ে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও জল্পনা-কল্পনা চলছিল। কিন্তু সে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে এর ব্যাপক হারে বিক্রির কারণে। মাইক্রোসফটের পকেট পিসি ছাড়াও আরাে বেশি কয়েকটি কোম্পানির পিসি বাজারে দারুণ সাড়া জাগিয়েছে। এইচপি’র পিডিএ-জরনাডা এবং ক্যাসিও পকেট পিসিও বেশ বিক্রি হচ্ছে। মাইক্রোসফট। সনি, কম্প্যাক ক্যাসিও ও এইচপি’র ইন্টারনেটে সুবিধাসহ ছােট আকারের এই পিসির কাছে পুরনাে কোম্পানিগুলাে মার খেয়ে যায়। কারণ এরকম সুবিধা তারা দিতে পারে নি। মাইক্রোসফট পকেট পিসি’র আরাে বাল অপারেটিং সিস্টেম আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা করতে পারলে তাদের কাটতিওবেড়ে যাবে বলে তাদের ধারণা। মাইক্রোসফট তাদেরপকেট পিসিতে এখন সিমিং অডিও এবং ভিডিও প্লেয়ারও সংযােজন করেছে। তাই দিনদিন পকেট পিসির চাহিদা বাড়ছে।
উইন্ডােজ এক্সপি। windos XP
কিছুদিন আগে অনেক জল্পনা–কল্পনার পর মাইক্রোসফট করপােরেশন তাদের নিজেদের ভাষায় উইন্ডােজ ৯৫ এর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডােজ এক্সপি এবং লুনা‘ নামের নতুন ইন্টারফেসের বেটা প্রদর্শন করেছে। মাইক্রোসফট চেয়ারম্যান বিল গেটস এ বেটা সংস্কার প্রদর্শন করেন। মাইক্রোসফট যদিও গত বছর থেকে আসছে বহুল আলােচিত ডট নেট প্লাটফর্মের মধ্যমণি হবে উইন্ডােজ এক্সপি। তবে বেটা প্রদর্শন অনুষ্ঠানে ডট নেটের অন্তর্ভুক্ত খুব সামান্য কটি বৈশিষ্ট্যই দেখিয়েছে মাইক্রোসফট। পরিবর্তে নতুন ইন্টারফেস লুনা অনলাইন শপিং, ওয়েবে ছবি প্রকাশ এবং ইন্টারনেটে অ্যাপ্লিকেশন বিনিময়ে কিভাবে ব্যবহারকারীদের সাহায্য করবে এটাই প্রদর্শন করেছে মাইক্রোসফট । উইন্ডােজ এক্সপি’তে থাকবে দুটি ইন্টারফেস। লুনার পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা উইন্ডােজ ইন্টারফেসও ব্যবহারের ধারণাই পাল্টে যাবে-বিল গেটসের এই অতি আশাব্যঞ্জক বক্তব্যের সঙ্গে প্রদর্শিত বেটা সংস্করণের সঙ্গে জড়িত টেস্টাররা বলছেন এখনাে পর্যন্ত সর্বশেষ বাজারজাতকৃত উইন্ডােজ মিলেনিয়াম এডিশনের তুলনায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনাে উন্নয়ন তারা এটাতে পায় নি।
দেশী সফটওয়্যার
আন্তর্জাতিক মাতভাষা দিবস অমর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ভিত্তি করে কয়েকজন তরুণ মিলে তৈরি করেছেন মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার আন্তর্জাতিক অমর একুশে। এতে আছে ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, সে সময়কার পত্রপত্রিকায় প্রকাশিক খবরের অনুলিপি, সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রের অনুলিপি, ভাষা আন্দোলনের স্থিরচিত্র, ভাষার গান, ভাষা-সৈনিকদের সাক্ষাৎকার, ভাষা-শহীদদের তালিকা, ছবি ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতসহ ভাষা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানমালার ভিডিও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলাের সংক্ষিপ্ত পরিচিত ও বিভিন্ন ভাষার উৎপত্তির ইতিহাস। এটির উল্লেখযােগ্য এবং আকর্ষণীয় দিকের মধ্যে আছে বেশ কিছু দুর্লভ ফটো, দুর্লভ দলিলপত্র, ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে আব্দুল লতিফের কণ্ঠে ভাষার গান, বঙ্গবন্ধুর সমকালীন ভাষা দিবস উদযাপনের ভিডিও (১৯৭২), ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দৈনিক পত্রপতিকায় বিশেষ করে দৈনিক আজাদে প্রকাশিত খবরের পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি, ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিত এবং অর্জনের ওপর ভাষা-সৈনিক গাজীউল হকের সাক্ষাঙ্কার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাতৃভাষার ওপর আগ্রাসন বিষয়ে ভাষাতত্ত্ববিদ ড. রফিকুল ইসলাম এবং ড. সৈয়দ আনােয়ার হােসেনের সাক্ষাৎকারও রয়েছে। এটি বাজারজাত করেছে প্রােটিয়াস সফটওয়্যার (প্রা.লি.)।
নতুন প্রােটন বিম
কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুরের দ্য নাশনাল ইউনির্ভাসিটি অভ সিঙ্গাপুরর রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ নির্মাতারা খুব শিগগিরই প্রােটন বিম-এর সাহায্যে অতি ক্ষুদ্র আকৃতির সাটির্ক তৈরি করতে সক্ষম হবে। সিঙ্গাপুরের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ গতিসম্পন্ন ওই প্রােটন বিম-এর ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। বিজ্ঞানীরা অবশ্য ওই প্রােটন বিমের বাস্তবভিত্তিক ব্যবহারের জন্য গত ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশেষে আশার আলাের দেখা পায় সিঙ্গাপুরের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। ওই প্রতিষ্ঠানের নিউক্লিয়ার মাইক্রোস্কোটি বিভাগ প্রােটন বিম উদ্ভাবনে সফলতার মুখ দেখে। অতি ক্ষুদ্রাকৃতির ওই প্রােটন বিমের মাধ্যমে তারা মানব কোষের ব্যাসের ১ হাজার ভাগের ১ ভাগ মাপ বের করতে সক্ষম হয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক গবেষক এবং এই গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ফ্রাঙ্ক ওয়াট জানান, যে পদার্থের পরমাণু ইলেক্ট্রনিক কাঠামাের প্রভাবে নতুনভাবে সজ্জিত হবে। আর একটি সংশ্লিষ্ট পদার্থের কিছুটা ক্ষতিসাধন করলেও ক্ষুদ্রাকৃতির যন্ত্রাংশ তৈরিতে সহায়ক হবে। আর গবেষণা কেন্দ্রটি এখন প্রােটন বিমের পেটেন্ট করাবে ক্ষুদ্রাকৃতির যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য এটি খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। কারণ এতােদিন শুধু পরীক্ষামূলক ক্যান্সার থেরাপি এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্রে এর ব্যবহার হতাে। আর বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ক্ষুদ্রাকৃতির যন্ত্রাংশ তৈরিতে নতুন মাত্রার সংযােগ ঘটাবে তাদের এই নতুন উদ্ভাবন। সেদিন বেশি দূরে নয়।
দৃষ্টিহীনদের ওয়েবসাইট
দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এখন আর যােগাযােগহীন থাকবেন না। দৃষ্টিহীন মানুষ যাতে পৃথিবী জুড়ে একে অপরের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপন করতে পারেন সেজন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট সম্প্রতি প্রকাশ করছে ইন্দোনেশীয় সরকার। ওয়েবসাইটটিতে বর্তমানে শুধু ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। ওয়েবসাইটটিতে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে। সাইটটিতে কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণ এবং কণ্ঠ শনাক্তকারী সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে যাতে দৃষ্টিহীন মানুষ সহজেই কণ্ঠ শুনতে সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে। আর জর্জ নামের সফটওয়্যারটির কার্যকারিতায় গুণে যে কোনাে দৃষ্টিহীন ব্যক্তি কম্পিউটারও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন অতি সহজেই । জর্জ সফটওয়্যারটি ছবি, কম্পিউটারের বিভিন্ন কমাও এবং ছবিকে স্পষ্ট ইংরেজি শব্দে রূপান্তর করে ব্যবহারকারীর কাছে উপস্থাপন করবে। ওয়েবসাইটির আরেকটি উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একটিতে একটি অনলাইন ব্রেইল লাইব্রেরি, খবর এবং দৃষ্টিহীনদের জন্য কাজ করছে এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের লিংক রয়েছে। দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা ইচ্ছা করলে সেই লিংকগুলােতে ক্লিক করলে আরাে অনেক অজনা তথ্যও জানতে পারবেন অতি সহজে।
ভায়ার নতুন চিপ
কয়েকদিন পূর্বে চিপসেট ডিজাইনার ভাষা টেকনােলজিস ভাষা সিথ্রি’ নামের নতুন প্রসেসর বাজারে ছেড়েছে। নতুন চিপটির গতি হচ্ছে ৭৩৩ মেগা হার্টজ। প্রসেররগুলাের আকার ছােট হওয়ার কারণে উৎপাদন খরচও কম পড়ছে। স্বল্প মূল্যের কম্পিউটার বাজারে আধিপত্য স্থাপনের লক্ষে ভায়া এই প্রসেসর তৈরি করছে।
এ.এম.ডি’র নতুন চিপসেট
বাজারে আসছে এএমড়ি’র নতুন চিপসেট। এ চিপসেট কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলােকে অ্যাথলনের সঙ্গে দ্রুতগতির ডিডিআর ডির্যাম সংযুক্তির সুবিধা দেবে। যদিও এ বছরে চিপসেটের সরবরাহ থাকবে খুবই কম তবুও একটি বৃহৎ কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নতুন চিপসেট ও অ্যাথপন প্রসেসরসহ কম্পিউটার বাজারে ছাড়ার ঘােষণা দিয়েছে। এ চিপসেট অ্যাথলনের বাস স্পিডকে ২০০ মেগাহার্টস থেকে ২৬৬ মেগাহার্টজে উন্নীত করতে সহায়তা দিবে ।
লাভ বাগের নতুন রূপ
লাভ বাগ কম্পিউটার ভাইরাসের ধ্বংসযজ্ঞের পাঁচ মাস পরেও ভাইরাসটির নতুন নতুন রূপ আক্রমণের জন্য মুখিয়ে রয়েছে। লাভ বাগের সর্বশেষ রূপটি নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে কিন্তু ধ্বংস করার ক্ষমতার দিক থেকে পূর্বসুরির চেয়ে পিছিয়ে নেই। লাভ বাগের নতুন রূপটি ই-মেইলের শিরােনামে হিসাবে US president and FBI Secrects’ নামে আবির্ভূত হচ্ছে। অ্যান্টিভাইরাস প্রতিষ্ঠান ম্যাকাঠিগ এবং ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান সপােস ভাইরাস হান্টাররা বলছেন, সর্বশেষ রূপটি তেমন ক্ষতিকারক নয়। গত মে লাভ বাগ লাভ ইউ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এটা হচ্ছে ৪৪ তম রূপ 1 মে লাভ বাগ লাইরাস সারা বিশ্বের কম্পিউটার সিস্টেমে আঘাত করেছিল এবং এর ফলে ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা।
নতুন রােবোভগ
রােববাটিক প্রাণী পােষা ও যুগের শখ। অবশ্য এসব প্রাণী তাে আর দীর্ঘদিনের অভ্যাসবশত পােষা হয় না। এরা যান্ত্রিক প্রাণী বলে ভেতরে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে। ব্রিটিশ ফার্ম ‘বােবােসায়েন্স’ সম্প্রতি এমনি এক পােষা কুকুর বানিয়েছে, যা এ ধরনের প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে শক্তিশালী বর্টে। এর নাম দেয়া হয়েছে আরএস-০১। ওজন বারাে কেজি। যে কোনাে শিশুতে পিঠে তুলে নিতে পারে সে। আর এটাই এর একমাত্র গুণ নয়, আরাে আছে। এ রােবােগ বাধা ডিঙ্গাতে পারে, গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে পারে, হাতে নানা জিনিস নিতে পারে, প্রায় ৬০টি মৌখিন নির্দেশনা মেনে চলতে পারে। দুপায়ে কাজ করে সে। প্রথমত স্বয়ংসম্পূর্ণ উপায়ে, যার সাহায্যে তার সাইবারভপি মস্তিষ্ক স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দ্বিতীয় উপায় হলাে ‘এক্সপ্লোয়ার অর্থাৎ কণ্ঠস্বর বা পিসির সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয় সে। সুতরাং এটি হাইটেক খেলনায় চেয়েও বেশি কিছু। মাইন পরিষ্কার করার মতাে বিপজ্জনক সামরিক কাজও সে পারে। সফটওয়্যার হিসাবে মাইক্রোসফট উইন্ডােজে চলে এটি। তারবিহীন ইন্টারনেট যােগাযােগের সাহায্যে যে কেউ তার ই-মেইলে এর কণ্ঠ শুনতে পারেন। অর্থাৎ এটিকে রিমােট কন্ট্রোল গার্ডডপ হিসেবে কাজ করাতে পারবেন। কারণ ওয়েবে এর একটি ভিডিও ক্যামেরা চোখ রয়েছে। এতাে গুণের জন্যই এটি খুব সস্তা নয়, দাম প্রায় ২৯ হাজার ডলার।
কম্পিউটারের অন্যান্য তথ্য
চিপ কীভাবে তৈরি হয়?
আমরা জানি চিপ তৈরি হয় সিলিকন দিয়ে। চিপ বা মাইক্রোচিপ সিলিকনের ক্ষুদ্র একটি খণ্ড। এর ভেতর আছে লক্ষ কোটি ট্রান্সিস্টরগুলাে প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ কোটি বার অন অফ অবস্থার মধ্যে আসা যাওয়া করে। কিভাবে এই ক্ষুদ্র খণ্ডের মধ্যে এত এত বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়। মিনিয়েচারাইজেশন বা ক্ষুদ্র করার প্রযুক্তিই আছে তার মূলে। চিপ আকারেহ আঙুলের নখের চেয়ে ছােট বা সমান। কম্পিউটারে ব্যবহৃত চিপ দু ধরনের হতে পারে। একটি মাইক্রোপ্রসেসর রূপে, অন্যটি মেমােরি রূপে ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোপ্রসেসর প্রােগ্রাম নির্দেশ পালন করে। আর মেমােরি চিপ ও মেমােরি ও অন্যান্য ডাটা ধরে রাখে। মাইক্রোপ্রসেসর বহু ধরনের যন্ত্রে ব্যবহৃত হয়। মেমােরি চিপের ব্যবহৃত মূলত কম্পিউটারেই সীমাবদ্ধ। সিলিকন আমরা জানি আধা-পরিবাহী। সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ সিলিকন বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে। না তবে তাতে খাদ মেশালে সেটি সুপরিবাহী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা সিলিকনে বােরন এবং ফসফরাস মিশিয়ে এ কাজটি করেন। যে সব জায়গায় খাদ মেশানাে হয়, সে সব জায়গায় বিদ্যুৎ সংকেত তৈরি করা যায়। এভাবে চিপের মধ্যে কোনােটি হয় ট্রান্সিস্টর, কোনােটি ক্যাপাসিটর, কোনােটি ডায়ােড, কোনােটি রেজিস্টর। ট্রান্সিস্টরকে বৈদ্যুতিক সুইচ বলা যায়। ক্যাপাসিটর বৈদ্যুতিক আধার বা চার্জ জমা রাখতে পারে। ডায়ােড় বিদ্যুকে কোনাে একদিকে যেতে বাধা দেয়। আর রেজিস্টর জমা রাখে ভােল্টেজ। এভাবে যে সকল ছােট ছােট অংশ তৈরি হয়, তার কোনাে কোনােটির দৈর্ঘ্য একমাইক্রোমিটার বা এক মিলিটারের ১ হাজার ভাগের ১ ভাগেরও কম। এগুলােকে সংযুক্ত করা হয় সাধারণ এলুমিনিয়ামের সূক্ষ্ম তারের সাহায্যে। এ চিপের সাথে বাইরে সংযােগ দানের জন্য ছােট একটি কাঠামাে ব্যবহার করা হয়, যার মাপ ২ ইঞ্চির মতাে। দুধারে থাকে অনেকগুলাে পিন। এর নাম ডুয়াল ইনলাইন প্যাকেজ বা ডিপ। এ পিনগুলাে তারের সাহায্যে চিপের অভ্যন্তরে সংযােগ রক্ষা করে। এ প্যাকজটিকেই সার্কিট বাের্ড স্থাপন করা হয়।
বিট, বাইট ও ওয়ার্ড। Bit, Byte & Word
কম্পিউটারে ডাটা রাখা হয় বাইনারি সংখ্যা রূপে । বাইনারি বা দ্বিপদী নিয়মে সংখ্যা মাত্র দুটি। এক আর শূন্য। ফলে দুটি মাত্র সংখ্যাই ওই দুটির কম্বিনেশন বা বিন্যাস থেকে পাওয়া যায়। আগেই বলেছি, কম্পিউটার বিদ্যুতের সংকেতকে বিশ্লেষণ করেই ওগুলােকে চেনে। এ দুটি সংখ্যাই কম্পিউটারকে কত ক্ষমতাবান করেছে, ভাবলে বিস্মিত হতে হয়। দুটি সংখ্যার সীমাবদ্ধতাকে আসলে অতিক্রম করা যায়। ওই দুটি সংখ্যাকে পাশাপাশি বাড়ানাে যায়। যেমন : ওগুলােকে দু ঘরে লিখে ০০,০১ ১০ এবং ১১ পাওয়া যায়। তিন ঘরে লিখলে ০০০,০০১ ০১১, ১০০, ১০১, ১১০, ও ১১১ ওই ৮টি সংখ্যা পাওয়া যায়। কম্পিউটারে এরকম এক একটি ঘরকে বিট নামে আখ্যায়িত করা হয়। এভাবে প্রতিবার একটি হকরে বিট বাড়িয়ে সংখ্যা গঠনের মাত্রা বাড়ানাে সম্ভব। আটটি বিট ব্যবহার করে পাওয়া যায় ২৫৬ টি সম্ভাব্য বিন্যাস। এ সবই দুয়ের গুণিতক। এই ৮ বিটকে কম্পিউটারের ভাষায় বলে বাইট‘। এতে আছে শূন্য ও একের ২৫৬টি বিন্যাস বা ২৫৬ বাইট । আসলে মাত্র ৭টি ঘরই হরফের জন্য ব্যবহার হয়। অতিরিক্ত ঘরটি ব্যবহার করা হয় ভাটার সংহতি পরীক্ষার জন্য । ওই অতিরিক্ত ঘরটিকে বলে প্যারিটি। ওই ২৫৬টি বাইটের প্রতিটিকে বর্ণমালার বর্ণ প্রতিস্থাপন করা যায়। সেক্ষেত্রে ভেতর সব কটি ইংরেজির বর্ণ সহ সংকেত চিহ্ন ও সংখ্যা সংকুলান করা সম্ভব হয়। আসলে ১২৮টি ঘরই বর্ণমাল ও অন্যান্য চিহ্নের জন্য ব্যবহৃত হয়। বাদ বাকি ১২৮টি সংরক্ষিত থাকে গ্রাফিকসের প্রয়ােজনে।