Computer

লিনাক্স কি?উইন্ডোজের বেস্ট বিকল্প যেটা হাজারো গীক মিলে বানিয়েছেন!

কেন লিনাক্স ব্যবহার করবেন?

লিনাক্স রয়েছে সর্বত্র। আপনার মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, সার্ভার এমনকি সুপার কম্পিউটারেও রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এই অবস্থায় আপনার অবশ্যই এর সম্পর্কে জানার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এবং সেই প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে এবং বহুত অনুরোধের জন্য আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি লিনাক্স সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবার। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সবকিছু 🙂


এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস কি?

লিনাক্স নিয়ে বিস্তারিত জানার আগে আপনার অবশ্যই কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কেনোনা অনেকে এই বিষয়টি বুঝতেই করে ফেলেন বিশেষ ভুল। আপনি বা আমি কিন্তু কখনোই ভেবে দেখিনা যে কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে। আমরা শুধু মাত্র কম্পিউটারকে টাস্ক দিয়ে যাই এবং বদলে কম্পিউটার আমাদের টাস্ক সম্পূর্ণ করে দিলেই ব্যাস। সে কীভাবে তা সম্পূর্ণ করলো বা কি কি প্রসেস চালালো তা নিয়ে আমরা কখনোই মাথা ঘামাতে চাই না।

কিন্তু আপনার কম্যান্ড দেওয়া প্রত্যেকটি কাজ করার জন্য কম্পিউটারকে বহুত প্রসেস সম্পূর্ণ করতে হয়। যে প্রোগ্রাম গুলো আপনার কম্পিউটারের সকল কাজ যেমন মিউজিক প্লে, ভিডিও প্লে, ওয়ার্ড টাইপ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইমেইল সেন্ড ইত্যাদি করে থাকে তাদের মূলত বলা হয় অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপস। কিন্তু এই সকল অ্যাপ্লিকেশন গুলো জার উপর দিয়ে চলে বা রান হয় সেটিই হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস।

অপারেটিং সিস্টেমকে কম্পিউটারের সকল বেসিক কাজ গুলো করতে হয়। যেমন অপারেটিং সিস্টেম নির্ধারণ করে কখন আপনার স্ক্রীনে কি প্রদর্শন করা হবে, আপনি কী-বোর্ডে কোন কী কখন চাপলেন, প্রসেসর গরম হয়ে গেলে ফ্যান চালু করতে হবে। অপারেটিং সিস্টেম সকল তথ্য হার্ডড্রাইভে সংরক্ষন করে এবং প্রয়োজনে ডাটা আবার অ্যাক্সেস করে। কিন্তু আপনার ইন্সটল করা অ্যাপ্লিকেশন গুলো কোন চিন্তায় করে না এসব বিষয় নিয়ে। অ্যাপ্লিকেশন শুধু মাত্র আপনার দেওয়া কম্যান্ড গুলো অনুসরন করে কাজ করে। এবং প্রয়োজনে অপারেটিং সিস্টেমের উপর কাজ চাপিয়ে দিয়ে বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে।

চলুন অপারেটিং সিস্টেম কি তা বুঝাতে একটি সুন্দর উদাহরণ দেওয়া যাক। আপনার কম্পিউটারকে একটি অফিস হিসেবে কল্পনা করুন। যেখানে একজন টাইপার রয়েছেন যিনি শুধু টাইপ করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। সে তার কাজ খুব ভালোভাবে করছে। সে কিন্তু কখনো এটা চিন্তা করবে না যে অফিসের ক্যান্টিন কীভাবে চলবে বা অফিস কীভাবে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা যাবে বা অফিসের জানালা গুলো মুছতে হবে। অফিসটির ক্যান্টিন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখতে মনে করুন আরেকটি কোম্পানি কাজ করে। তার নাম মনে করুন সুযোগ সুবিধা ম্যানেজমেন্ট। তো আপনার কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম হলো সেই সুযোগ সুবিধা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। অপারেটিং সিস্টেম সকল খুঁটিনাটি কাজ সম্পূর্ণ করে থাকে যাতে অ্যাপ্লিকেশন তার নির্দিষ্ট কাজ আরো বেশি মনোযোগের সাথে করতে পারে। আশা করছি এই উদাহরণ থেকে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে আপনার সুস্পষ্ট ধারণা হয়ে গেছে।

অপারেটিং সিস্টেমের কেন প্রয়োজন পড়লো?

আপনি এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছেন যে কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের উদ্ভবনের আগের কম্পিউটার গুলোতে কোন অপারেটিং সিস্টেম ছিল না। তৎকালীন কম্পিউটার গুলোকে মাইক্রো কম্পিউটারস বা মাইক্রোস বলা হতো। তখনকার মেশিন গুলো প্রত্যেকটি চলতো তাদের নিজের আলাদা আলদা মৌলিক পদ্ধতিতে। কারো প্রোগ্রামের সাথে কারো প্রোগ্রামের কোন মিল ছিল না। কোন গেম ডেভেলপার যদি একটি কম্পিউটারের জন্য গেম তৈরি করতো তবে অন্য কম্পিউটারের কাছে সেটি একদম বেকার ছিল। যেহেতু এক কম্পিউটারের ভাষা আরেক কম্পিউটার থেকে আলদা ছিল তাই এদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা ছিল একেবারে অসম্ভব।

কিন্তু সে সময়ে সিপি/এম নামক একটি অপারেটিং সিস্টেম এই অসুবিধা দূর করেছিলো। যখন মাইক্রো কম্পিউটারস গুলো সিপি/এম ব্যবহার করতে শুরু করলো তখন তারা একই প্রোগ্রাম সকল কম্পিউটারে রান করাতে সক্ষম হলো। ডেভেলপার রা তখন আলদা আলদা কম্পিউটারের জন্য প্রোগ্রাম না লিখে সিপি/এম এর জন্য প্রোগ্রাম লিখতে আরম্ভ করলো। এবং কম্পিউটিং প্রযুক্তিতে নতুনত্ব আসলো।

কিন্তু ১৯৮০ সালের দিকে আইবিএম নামক এক প্রতিষ্ঠান যখন তার প্রচণ্ড জনপ্রিয় পার্সোনাল কম্পিউটার মেসিনের জন্য সিপি/এম এর দাবি কিনতে যায় তখন তারা তা কিনতে অক্ষম হয়। ফলে তখন এক প্রচণ্ড মেধাবী যুবক “বিল গেটস” বিকল্প হিসেবে তার নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম লিখতে শুরু করেন। এবং জন্ম নেয় ডস (DOS) অপারেটিং সিস্টেমের। পরে এটির নাম উইন্ডোজ হয়ে যায়। আর এই উইন্ডোজ বিলকে পৃথিবীর সবচাইতে ধনী ব্যাক্তি করে তোলে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সবচাইতে আসল কথা হলো এটির মাধ্যমে একই ভাষার অ্যাপ্লিকেশন আলাদা আলদা মেশিনে চালানো যায়। ফলে যেকোনো কম্পিউটার একে পরের সাথে খুব সহজেই সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়। তো বন্ধুরা এই হলো মূলত প্রধান কারন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম জনপ্রিয়তা পাবার এবং অপারেটিং সিস্টেম প্রয়োজনীয়তার।

লিনাক্স কি?

এতক্ষণ অনেক হয়েছে ইতিহাস ঘেঁটে দেখা এবার আজকের দিনে ফিরে এসে আলোচনা করা যাক লিনাক্স নিয়ে। অনেকে মনে করেন লিনাক্স একটি অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু আসলে লিনাক্স কোন অপারেটিং সিস্টেম নয়, বরং এটি হলো একটি কার্নেল। কার্নেল কি এ বিষয়ে বুট লোডার, রম, কার্নেল নিয়ে লেখা পোস্টে হালকা ধারণা দিয়েছিলাম। কিন্তু এই পোস্ট লিখার সময় মনে হচ্ছে কার্নেল নিয়ে একটি বিস্তারিত পোস্ট করা দরকার। যাই হোক, কার্নেল মূলত হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করে।

ডেভেলপাররা লিনাক্স কার্নেলের জন্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে। তাই আপনি যদি আপনার কম্পিউটারে লিনাক্স রান করাতে চান তবে এই কার্নেলের উপর লেখা অ্যাপ্লিকেশন বা প্যাকেজ আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। আর লিনাক্সের এই প্যাকেজ গুলোকে বলা হয়ে থাকে ডিস্ট্রিবিউশন বা ডিস্ট্রো। লিনাক্স কার্নেলের উপর বহুত ডিস্ট্রো রয়েছে। এবং সেগুলো বিভিন্ন কাজের জন্য প্রস্তুতকৃত। এই কার্নেল আপনার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের কাজ করার উপযোগী করে গড়ে তোলে। লিনাক্স ডিস্ট্রো প্রত্যেকটি কম্পিউটিং ক্ষেত্রের জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, টুলস, এবং ডেক্সটপ পরিবেশ সরবরাহ করে থাকে। এবং এসকল কাজ লিনাক্স কার্নেলের সাথে একত্রে যুক্ত থাকে ফলে এটি একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমে পরিণত হয়েছে।

এখন কেউ যদি বলে যে সে তার কম্পিউটারে লিনাক্স ব্যবহার করছে, তাহলে এর মানে হলো সে লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করছে এবং সেই কার্নেলের উপর লেখা অ্যাপ্লিকেশন পিসিতে রান করাচ্ছে। কি পরিষ্কার হলো বিষয়টি?

কেন লিনাক্স ব্যবহার করবেন?

লিনাক্স কি তার সম্পর্কে এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছেন। এবার চলুন আলোচনা করি কেন এটি আমরা ব্যবহার করবো তা নিয়ে। দেখুন আজকের দিনে সবচাইতে জনপ্রিয় কম্পিউটিং অপারেটিং সিস্টেম হলো উইন্ডোজ। আর হাঁ, উইন্ডোজ অবশ্যই তার নিজের ক্ষেত্রে থেকে অনেক ভালো আকজ করছে। কিন্তু উইন্ডোজ বা ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম গুলো ইউজার এবং ডেভেলপারদের কাছে যা ইচ্ছা তা করার অনুমতি প্রদান করে না। আপনি উইন্ডোজ মেশিনের অ্যাডমিন হয়েও অনেক ফাইল মডিফাই করতে পারবেন না। আপনি যদি একজন গেমার হোন বা সাধারন কম্পিউটিং করেন তবে উইন্ডোজ আপনার কাছে উত্তম একটি অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু আপনি যদি ডেভেলপার হোন তবে উইন্ডোজে আপনি সর্বাধিক স্বাধীনতা পাওয়া থেকে বার্থ হবেন। কারন এটি একটি ক্লোজড অপারেটিং সিস্টেম।

কিন্তু অপর দিকে লিনাক্স সম্পূর্ণ ফ্রী একটি কার্নেল। যেখানে বহুত ডিস্ট্রো রয়েছে এই কার্নেলের সাথে কাজ করার জন্য। এবং এর সাথে আপনি যা ইচ্ছা তা করতে পারবেন। প্রায় সকল কম্পিউটিং পরিবেশের জন্যই আলদা ডিস্ট্রো রয়েছে। যেমন ডেক্সটপ কম্পিউটিং এর জন্য উবুন্তু বা মিন্ট রয়েছে, মোবাইলের জন্য রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড এমনকি লিনাক্স ভার্সন সুপার কম্পিউটারেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

লিনাক্স সর্বদা ফোকাস করে থাকে নিরাপত্তা এবং শক্তিশালী হওয়ার উপর। কিন্তু অপরদিকে উইন্ডোজ সর্বদা ফোকাস করে ব্যাবহারের সুবিধার উপর। এই জন্য অধিকাংশ সার্ভার এবং হাই টেক নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় সর্বদা লিনাক্সকে কাজে নেওয়া হয় এবং এটি জটিল কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য মারাত্মকভাবে জনপ্রিয়। তাই আমি মনে করি লিনাক্স ভার্সন কম্পিউটিং এর জন্য উইন্ডোজের সর্বউত্তম বিকল্প। তাছাড়া লিনাক্স উইন্ডোজের তুলনায় অনেক হালকা ওজনের হয়ে থাকে। যার জন্য এটি তাদের জন্য সর্বউত্তম যারা তাদের পার্সোনাল মেশিনে অনেক ফাস্ট কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা পেতে চায় এমনকি লো কনফিগার মেশিনেও।

গত কয়েক বছরে লিনাক্স ডেস্কটপ ডিস্ট্রো অনেক পরিবর্তিত হয়ে সহজ ইউজার ইন্টারফেসে আনা হয়েছে। ফলে আপনি যদি উইন্ডোজ কিংবা ম্যাক ব্যাবহারেও অভ্যস্ত হোন তবুও লিনাক্স আপনার কাছে কঠিন মনে হবে না। তাই এটি একটি বড় কারন হতে পারে আপনার হোম পিসিকে লিনাক্সে মাইগ্রেড করার জন্য।

লিনাক্সের সুবিধা

চলুন এবার কথা বলি লিনাক্সের কিছু বিশেষ সুবিধা গুলো নিয়ে। লিনাক্স ব্যাবহারে সবচাইতে বড় সুবিধা হলো এটি ব্যবহার করা হাইলি নিরাপদ। মানে এটি ব্যাবহারের মাধ্যমে আপনাকে ভাইরাস, ট্রোজান ইত্যাদি সম্পর্কে ভুলে যেতে হবে। তাছাড়া লিনাক্স ডিস্ট্রো গুলো সম্পূর্ণ ফ্রী ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার পিসি একটি হোক আর ১০টি, লিনাক্স ডিস্ট্রোর চার্জ সর্বদা ০ ডলার। যেখানে উইন্ডোজ ব্যবহার করতে আপনাকে কয়েকশো ডলার খরচ করতে হবে।

বেশিরভাগ সময় লিনাক্সের ডিস্ট্রোর সাথে সকল প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন প্রি-ইন্সটল থাকে। এবং আপনার প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন প্যাকেজ আপনি ফ্রী ইন্সটলও করতে পারবেন। উইন্ডোজের তুলনায় দেখতে গেলে এটি একটি অনেক বড় ডীল। তাছাড়া লিনাক্স সম্পূর্ণ ফ্রী লাইসেন্সের হওয়ায় আপনি এর সাথে যেমন ইচ্ছা তেমন করে সাজাতে পারেন। যদিও কিছু বাদ্ধকতা বিদ্ধমান রয়েছে।

লিনাক্স অনেক হালকা ওজনের হওয়ার জন্য এটি যেকোনো ধরনের মেশিনে চলতে পারে। ২০০৪ সালে মাইক্রোসফট তাদের এক্সপির উপর থেকে সমর্থন উঠিয়ে নেবার পর অনেকে তাদের পুরাতন মেশিনকে ভাইরাস ফ্রী রাখতে লিনাক্সে চলে গেছে। আশ্চর্যজনক ভাবে পুরাতন মেশিনে লিনাক্স ব্যাবহারে অনেক ফাস্ট অভিজ্ঞতা পাওয়া গেছে।

এছাড়া ওয়াইন ব্যবহার করে আপনি লিনাক্সে উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারবেন। তাই এটিও একটি বড় সুবিধা। আবার গেমস পাগলদের জন্যও রয়েছে সুখবর। নতুন লিনাক্স কার্নেল নির্ভর স্টিম অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে প্রায় ১ হাজারের উপর গেমস। এবং এই গেম গুলো লিনাক্সে খুব ভালো রান করে। লিনাক্স ব্যাবহারে পুরাতন মেশিনেও লেটেস্ট ইন্টারনেট ব্রাউজার যেমন ফায়ারফক্স বা ক্রমিয়াম, লেটেস্ট অফিস অ্যাপ্লিকেশন ব্যাবহারের সুবিধা পাওয়া যায়। এমনকি আজ থেকে ১০-১৫ বছরের আগের মেশিনেও রকেটের গতিতে চলে লিনাক্স।

লিনাক্সে রয়েছে লাইভ সিডি বা ডিভিডি বা ইউএসবি সুবিধা। আপনি আপনার কম্পিউটারে লিনাক্স রান করাতে পারবেন ইন্সটল না করে। এতে আপনার বর্তমান উইন্ডোজের উপর ইফেক্ট পড়বে না। জাস্ট লিনাক্স ইউএসবি আপনার মেশিনে প্লাগ করুন আর প্লে করুন। লিনাক্সে রয়েছে বহুত ডিস্ট্রো পছন্দ করার সুবিধা। আপনার একটি পছন্দ না হলে জাস্ট আরেকটি ব্যবহার করুন, আরেকটি না হলে আরেকটি। কিন্তু উইন্ডোজে এই সুবিধা আপনি কখনোয় পাবেন না।

উইন্ডোজে কোন সমস্যা হলে উইন্ডোজ রি-ইন্সটল করার প্রয়োজন পরে। কিন্তু লিনাক্সের যেকোনো সমস্যা এমনিতেই সমাধান করা সম্ভব, এতে একদমই আপনার কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম রি-ইন্সটল করতে হবে না। তাছাড়া লিনাক্সে রয়েছে মাল্টি ডেক্সটপ ব্যাবহারের সুবিধা। যা উইন্ডোজে উইন্ডোজ ১০ এ যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এর আগে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন টাস্ক ওপেন রেখে ডেস্কটপে জঙ্গল পাকিয়ে ফেলত। একাধিক ডেক্সটপ মানে স্বাধীন ও পরিষ্কারভাবে কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা নেওয়া।

লিনাক্সের কিছু অসুবিধা

এর হাজার হাজার সুবিধার মধ্যে কিছু অসুবিধাও রয়েছে যার ফলে ব্যবহারকারীরা কিছু সমস্যায় পড়তে পারেন। লিনাক্সে উইন্ডোজের মতো এতো ড্রাইভার থাকে না। ড্রাইভার হলো এক প্রকারের ছোট প্রোগ্রাম যা আপনার কম্পিউটারের সাথে যেকোনো এক্সটারনাল ডিভাইজ যেমন প্রিন্টার, ইউএসবি মোডেম ইত্যাদি ঠিকঠাক ভাবে কাজ করাতে সাহায্য করে। এবং কম্পিউটারকে বুঝতে দেয় যে কোনটি কোন ডিভাইজ। হতে পারে আপনার বাসার প্রিন্টারটি লিনাক্সে কাজ করছে না যেটি উইন্ডোজে আরামে চলতে পারে। তবে এই সমস্যারও হাল রয়েছে। যদি কোন ডেভেলপার তার ফ্রী সময়ে ঐ ডিভাইজটির জন্য কোন ড্রাইভার তৈরি করেন যা লিনাক্সে চলবে তবে আপনি ডিভাইজটি রান করাতে পারবেন।

যদিও এখনো লিনাক্স কোন প্রকারের তৃতীয় পক্ষ ড্রাইভার ছাড়ায় ডিফল্ট উইন্ডোজের তুলনায় অনেক বেশি ডিভাইজ সমর্থন করার ক্ষমতা রাখে। তারপরেও আজকাল অনেক ডিভাইজ প্রস্তুতকারী কোম্পানিরা উইন্ডোজের পাশাপাশি লিনাক্সের জন্যও ড্রাইভার প্রস্তুত করে, এবং এটি অবশ্যই একটি ভালো কথা।

লিনাক্স ব্যবহার কীভাবে শুরু করতে পারি?

আপনি যদি নতুন লিনাক্স ব্যবহারকারী হতে চান তবে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কীভাবে শুরু করবেন। দেখুন আপনি যদি নতুন ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তবে আমি বলবো সরাসরি লিনাক্স ইন্সটল না করে লাইভ সিডি দিতে লিনাক্স বুট করুন। আপনার পছন্দের ডিস্ট্রোটির আইএসও ডাউনলোড করুন এবং ফ্ল্যাশ ভাবে ব্যবহার করা শুরু করুন। ডেস্কটপের জন্য সর্বাধিক জনপ্রিয় ডিস্ট্রো হলো লিনাক্স মিন্ট এবং উবুন্তু। তো এর যেকোনো একটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।


বন্ধুরা আপনি যদি এখনো লিনাক্স ব্যবহার করে না থাকেন তবে আমি সাজেস্ট করবো ব্যবহার করার। হতে পারে সেখান থেকে আপনি হয়তো অনেক নতুন অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। আশা করছি লিনাক্স নিয়ে আজকের পোস্ট থেকে আপনি অনেক কিছু জেনেছেন এবং হয়তো ইতিমধ্যে অনেকটা আগ্রহীও হয়ে পড়েছেন। যাই হোক, আজ একদম শেষের পথে। যাবার আগে অনুরোধ অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করবেন এবং আপনার যেকোনো প্রকারের অনুরোধ বা মতামত জানতে অবশ্যই আমাকে নিচে কমেন্ট করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button