Smartphone NewsTechnology

অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সাহায্যে যেকোনো টিভিকে স্মার্ট টিভি বানিয়ে ফেলুন!

অ্যান্ড্রয়েড থেকে সেগুলোকে টিভিতেও ট্র্যান্সফার করা সম্ভব

আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে কি যেকোনো এইচডি টিভিকে স্মার্ট টিভি বানিয়ে ফেলতে চান? হ্যাঁ, আপনি সেটা সহজেই করতে পারবেন। বাজারে অনেক টাইপের স্মার্ট টিভি বক্স পাওয়া যায়, যেমন- অ্যামাজন ফায়ার স্টিক, রকু – ইত্যাদি, কিন্তু সেগুলোর আপনার মোটেও দরকার নেই, কেনোনা আপনার অ্যান্ড্রয়েড নিজেই অনেক কিছু করতে সক্ষম। অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে অলরেডি বড় বড় ভিডিও স্ট্রিম প্রভাইডারকে পকেটে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর অ্যান্ড্রয়েড থেকে সেগুলোকে টিভিতেও ট্র্যান্সফার করা সম্ভব। কিন্তু কিভাবে? সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন…

এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

মাইক্রো এইচডিএমআই টু এইচডিএমআই ক্যাবল

যেকোনো টিভিকে স্মার্ট টিভি বানাতে অবশ্যই আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্ক্রীন টিভিতে কাস্ট করতে হবে। ক্রোমকাস্ট ব্যবহার করে এটা সহজেই করা সম্ভব, কিন্তু তার চেয়েও সস্তা পদ্ধতি হচ্ছে টিভির সাথে আপনার স্মার্টফোন এইচডিএমআই ক্যাবল দ্বারা কানেক্ট করা। যদিও ডিভাইজ প্রস্তুতকারী কোম্পানিরা তাদের ডিভাইজে খুব একটা মাইক্রো এইচডিএমআই ইনক্লুড করতে পছন্দ করে না, যদি আপনি যথেষ্ট ভাগ্যবান হয়ে থাকেন, এবং আপনার ডিভাইজে মাইক্রো এইচডিএমআই থাকে, আপনি সহজেই মাইক্রো এইচডিএমআই পোর্ট টু এইচডিএমআই পোর্টে স্মার্ট ফোন কানেক্ট করতে পারবেন।

মাইক্রো এইচডিএমআই ক্যাবলের দাম এইচডিএমআই ক্যাবলের দামের মতোই হয়ে থাকে, জাস্ট সস্তা একটা ক্যাবল কিনে নিলেও কাজ হয়ে যাবে। বাজারে যেকোনো ইলেকট্রনিক শপে আরামে পেয়ে যাবেন, টিভিতে স্মার্টফোন কানেক্ট করার পরে অবশ্যই টিভি থেকে সোর্স পরিবর্তন করে দিয়ে এইচডিএমআই করে দিতে হবে এবং অবশ্যই আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ল্যান্ডস্কেপ মুডে রাখতে হবে, এতে বেস্ট ভিউ পাওয়া সম্ভব হবে। চিন্তার কোন কারণ নেই, বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং ট্যাবলেটে ১৬ঃ৯ অ্যাসপেক্ট রেসিও থাকে, ফলে এইচডি টিভিতে বড় স্ক্রীনে ঠিকঠাক মানানসই হয়ে যাবে।

তবে এই পদ্ধতিতে সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে আপনার ফোনের সাথে টিভিতে তার দিয়ে লাগিয়ে রাখতে হচ্ছে। যখন মুভি দেখবেন, তখন খুব একটা সমস্যা হবে না হয়তো, কিন্তু গেমিং করার সময় বিপদে পরে যাবেন, মানে একেবারেই সুবিধা ফিল করতে পারবেন না। যদি আপনার ডিভাইজ মাইক্রো এইচডিএমআই সমর্থন না করে আপনি মাইক্রো ইউএসবি পোর্টে MHL/SlimPort ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

ওয়্যারলেস সলিউসন

হাতে স্মার্টফোন ধরে রেখে যদি স্ক্রীন টিভিতে প্রজেক্ট করতে চান, অবশ্যই তারের মাধ্যমে এই সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে না, আপনাকে ওয়্যারলেস সলিউসন গ্রহন করতে হবে। গুগলের ক্রোমকাস্ট এই কাজের জন্য বেস্ট সলিউসন, তবে মিরাকাস্টও ব্যবহার করতে পারেন। তবে স্মার্ট টিভি স্টিক বা টিভি বক্স গুলোর মতো ক্রোমকাস্টের নিজের কিছু করার ক্ষমতা থাকে না, এটি জাস্ট অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে স্ক্রীন উঠিয়ে টিভিতে প্রদর্শিত করাতে সাহায্য করে। মূল ব্রেইন বলতে পারেন এখানে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইজ।

ক্রোমকাস্ট তেমন একটা দামী গাজেট নয়, হাজার ৪ এর নিচে এর দাম পড়তে পারে, আর আপনি ট্রু স্ক্রীন কাস্টিং করতে সক্ষম হবেন এর মাধ্যমে। যেকোনো কিছু এমনকি নেটফ্লিক্স, হুল্যু সবকিছু টিভিতে কাস্ট করতে পারবেন। ক্রোমকাস্ট ব্যবহার করা অত্তাধিক সহজ, জাস্ট আপনার টিভিতে ডঙ্গলটি কানেক্ট করতে হবে। এবার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের গুগল হোম অ্যাপ স্বয়ংক্রিয় ক্রোমকাস্ট সার্চ করতে আরম্ভ করবে। এবার অ্যাপটি ক্রোমকাস্ট ডিটেক্ট করবে এবং কানেক্ট হয়ে যাবে।

মাইক্রো ইউএসবি টু এইচডিএমআই

আপনার ফোনে মাইক্রো এইচডিএমআই পোর্ট নেই, কোন সমস্যা নেই! আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে যার নাম এমএইচএল (মোবাইল হাই-ডেফিনিসন লিঙ্ক), যেটা আপনার ডিভাইজের মাইক্রো ইউএসবি পোর্টের সাথেই কাজ করে। আরেকভাবে বলতে পারেন, মাইক্রো ইউএসবি টু এইচডিএমআই লিঙ্ক। অনেক ব্র্যান্ডের ফোন বর্তমানে এটিকে সমর্থন করে থাকে। এই লিস্টটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখুন, আপনার ডিভাইজটি এই সাপোর্টেড লিস্টে রয়েছে কিনা!

এই অপশনটি সম্পূর্ণ মাইক্রো এইচডিএমআই টু এইচডিএমআই এর মতোই কাজ করে, কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার খরচটি একটু বেড়ে যেতে পারে, কেনোনা আপনাকে একটি এমএইচএল অ্যাডাপ্টার কিনতে হবে, আর যার দাম ২০০০-৪০০০ পর্যন্ত পরে যেতে পারে, অনেক সময় এটি ক্রোমকাস্টের চেয়েও বেশি চার্জ করতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রে ক্রোমকাস্ট বেস্ট সলিউসন!

স্লিম পোর্ট

স্লিম পোর্ট অনেকটা ডিসপ্লে পোর্টের মতই কাজ করে, এবং একই প্রযুক্তি, এখানে অডিও এবং ভিডিও আলাদা করে টিভি স্ক্রীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি, কিন্তু এটা যেকোনো ডিভাইজ যাতে সমর্থন করতে পারে সে অনুসারে বানানো হয়েছে। LG V20, Acer Chromebook R13, HTC 10, LG G Pad II এবং Amazon Fire HD tablets এটি সমর্থন করে। তবে এই লিস্টথেকে চেক করে নিতে পারেন, আপনার ডিভাইজ সাপোর্টেড কিনা!

যদি আপনার ডিভাইজ এটিকে সমর্থন করে তাহলে এমএইচএলের মতো একটি অ্যাডাপটার প্রয়োজনীয় হবে এবং একটি এইচডিএমআই ক্যাবলও দরকার পড়বে। এটি ও অনেক দামী হতে পারে, অনেক সময় ২০০০-৪০০০ পর্যন্ত খরচ পরে যেতে পারে। তবে একবার আপনার কাছে অ্যাডাপ্টার আর এইচডিএমআই ক্যাবল থাকলে, এটা সেটআপ করা একেবারেই সহজ।


তো এই ছিল কিছু পদ্ধতি, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করে যেকোনো সাধারণ ফ্ল্যাট টিভিকে স্মার্ট টিভিতে পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন। আমি জানি, আপনি একটু কনফিউশনের মধ্যে পরে গেছেন হয়তো, কেনোনা এখানে অনেক অপশন রয়েছে, আর আপনি ঠিক কোনটার সাথে যাবেন হয়তো সেটার সিদ্ধান্ত নিতে পাড়ছেন না। আমি সাজেস্ট করবো, এতো ঝামেলা না করে গুগল ক্রোমকাস্ট ব্যবহার করুণ, ব্যাস একেবারে ঝামেলা ফ্রী সলিউসন হিসেবে প্রমানিত হবে। ক্রোমকাস্ট ব্যবহার করে যেকোনো ভিডিও টিভিতে স্ট্রিম করতে পারবেন এবং ইউটিউব, নেটফ্লিক্স অ্যাপ গুলোও টিভিতে মিরর করতে পারবেন। আর এটা সেটআপ করে নেওয়াটাও পানির মতো সহজ। তো আপনার পছন্দ কোনটা? বা আপনার কি কোন প্রশ্ন রয়েছে? আমাকে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button