ComputerTechnology

মেশিন লার্নিং | আপনি শিক্ষা দিন কম্পিউটারকে | বিস্তারিত

মেশিন লার্নিং এর প্রয়োজনীয়তা

বন্ধুরা হতে পারে আপনি মেশিন লার্নিং সম্পর্কে শুনেছেন। এখন এটি আসলে কি, কীভাবে কাজ করে এবং কি এর ভবিষ্যৎ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমি এখন আলোচনা করতে চলেছি। চলুন আজ আরো নতুন কিছু জেনে নেওয়া যাক।

মেশিন লার্নিং

বন্ধুরা ভেবে দেখুন যদি আমরা কোন মেশিন কে কোন কিছু শেখায় তবে কেমন হয়? এখন মেশিনটা কি? মেশিন হলো কম্পিউটার। আপনি নিশ্চয় জানেন যে কম্পিউটার একটি অতি আধুনিক ডিভাইজ। যেটি সেকেন্ডের মধ্যে সেরে ফেলতে পারে কোটি কোটি গাণিতিক সমস্যা। কিন্তু আপনি কি ভাবেন? কম্পিউটার কি অনেক বেশি বুদ্ধিমান? যদি আপনি যদি এটি ভেবে থাকেন যে আপনার কম্পিউটার একটি বুদ্ধিমান ডিভাইজ তবে আপনি ভুল ভাবছেন। বন্ধুরা আমাদের কম্পিউটার অনেক ফাস্ট হয়ে থাকে, প্রচণ্ড প্রসেসিং ক্ষমতা থাকে কিন্তু কম্পিউটার কখনোয় মানুষের মতো বুদ্ধি এবং কৌশল খাটাতে পারে না। বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশল রয়েছে আমাদের মধ্যে অর্থাৎ মানুষের মধ্যে।

উদাহরণ স্বরূপ আপনি যদি অনেক বড় একটি গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে দেন কম্পিউটারকে তবে সে আপনার না জানি কত গুন আগে সমাধান করে ফেলবে। আপনি হয়তো চাঁদে যেতে চান বা মঙ্গল গ্রহে রকেট পাঠাতে চান তবে সেখানকার হিসাব নিকাশ কম্পিউটার আপনাকে নিমিষেই করে দিতে পারে। আপনাকে কষ্ট করে আর কোন হিসেব করতে হবে না। কিন্তু বন্ধুরা কম্পিউটার বুদ্ধি খাটাতে জানেনা। কিন্তু আমরা যদি চাই যে আমরা কম্পিউটারকে শেখাতে চাই আমাদের মস্তিস্কের মতো করে যাতে সে আমাদের মতো বুদ্ধিমান হবে পারে তবে এটিইকে বলা হবে মেশিন লার্নিং।

কম্পিউটার বড় বড় হিসেব নিকাশ তো করে ফেলবে কিন্তু আপনি যদি একটি কুকুকের ছবি কম্পিউটারকে দেখিয়ে বলেন যে এটি কি? তবে সে কখনোয় বলতে পারবে না যে এটি কুকুরের ছবি, না তাহমিদের ছবি, না বিড়ালের ছবি। কারন কম্পিউটার জানেই না যে কুকুরের ছবি কেমন হয়। তো এই অবস্থায় যদি কম্পিউটারকে আমরা শেখাতে চাই যে দেখো এই হচ্ছে কুকুর, এটা এমন হয়ে থাকে অথবা এটা এই ব্রিডের কুকুর ইত্যাদি। আবার মনে করুন শেখানো হলো এটা একটি দেশের পতাকা এবং অমুক দেশের পতাকা। আবার কম্পিউটারের সামনে একটি ওয়ার্ড রাখা হলো “টেকনোলজি”। কম্পিউটার হয়তো ওয়ার্ডটি স্ক্যান করতে পারবে। কিন্তু বলতে পারবে না যে এটি কোন কাজে ব্যবহার হয়। অথবা সে মানুষের আবেগ বুঝতে পারবে না। যদি মানুষের বুদ্ধি, মানুষের আবেগ, মানুষের কৌশল একটি কম্পিউটারকে শেখানো যায় তবে সেটিই হলো মেশিন লার্নিং।

মেশিন লার্নিং এর প্রয়োজনীয়তা

এখন আপনি হয়তো বলবেন যে ভাই মেশিন লার্নিং এর প্রয়োজনীয়তা কি? মেশিনকে এতো কিছু শিখিয়ে হবেটা কি? বন্ধুরা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ ভেবে দেখুন সেলফ ড্রাইভ কারের কথা। রাস্তায় যখন সেলফ ড্রাইভ কার চলতে থাকে তখন তার সামনে আরো অনেক গাড়ি থাকে, মানুষ থাকে, রাস্তায় খাঁদ থাকতে পারে, রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক থম্বা থাকতে পারে আবার আরেকটি গাড়ি সামনে থেকে দ্রুত গতিতে চলে আসতে পারে। তো ভেবে দেখুন কতগুলো জিনিষ একসাথে থাকে। তো এই অবস্থায় কারকে প্রত্যেকটি জিনিষ স্ক্যান করতে হয় এবং তাদের গুরুত্ব নির্ণয় করতে হয়। এমনটা হবে না যে কারটি রাস্তার খাঁদ বাঁচাতে গিয়ে কোন মানুষকে ধাক্কা দিয়ে দেবে। বা রাস্তায় একটি ছোট বোতল পরে আছে তা দেখে সম্পূর্ণ গাড়ি সাইড করে অন্য দিকে চলে যাবে।

তো কারকে অ্যানালাইসিস করতে হয় যে কোন জিনিষটা কি এবং কোনটির গুরুত্ব সবার আগে। আবার দেখুন রাস্তাতে অনেক প্রকারের সাইন থাকে যেমন স্টপ সাইন, লেফট ন্যাভিগেশন, রাইট ন্যাভিগেশন, ডু নট হর্ন ইত্যাদি। তো এই অবস্থায় কম্পিউটারকে বুঝতে হবে যে কোনটি কোন সাইন এবং কোনটির কাজ কি। এখন একটু ভাবুন বন্ধুরা মনে করুন রাস্তার পাশে একটি স্টপ সাইন আছে। এখন সেই সাইনটি দেখে কম্পিউটার অনেক সহজেই বলে দেবে যে এটি স্টপ সাইন। কিন্তু সাইনটির উপর যদি কোন ধুল বা মাটি লেগে থাকে বা সাইনের যদি রঙ খারাপ হয়ে যায় কিংবা যদি ঝড়ে একটু বেকে যায় তবে মানুষ কিন্তু সহজেই বুঝতে পারবে যে এটা একটি সাইন ছিল। কিন্তু কম্পিউটার যদি সেটি বোঝার ক্ষমতা অর্জন করে তো ভাবে দেখুন কতটা আশ্চর্য কিছু হতে চলেছে মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে।

এবার ভেবে দেখুন গুগলের নতুন অ্যাপ্লিকেশন অ্যালো বা অ্যাপেলের আই ম্যাসেজ এর কথা তবে দেখুন মোবাইল ফোন আপনার পুরো স্ক্রীন পড়ে আপনি কি লিখছেন তা বোঝার ক্ষমতা রাখে। আবার মনে করুন গুগল নাউ ট্যাপ এর কথা। আপনার ফোনের গুগল নাউয়ে গিয়ে ট্যাপ করলে আপনার ফোনের স্ক্রীন গুগল নাউ স্ক্যান করবে এবং বলে দিতে পারবে আপনি কোন কোন কাজ করছেন। আপনি ভিডিও দেখছেন না কারো সাথে কথা বলছেন না ইন্টারনেট ব্রাউসিং করছেন। তো এই সমস্ত কিছু আপনার মোবাইল বলে দিতে পারবে।

আবার মনে করুন গুগল ফটোস অ্যাপ এর কথা বা নতুন আইওএস ১০ এর অ্যাপ এর কথা। এখানে যখন আপনি কোন ফটো রাখেন তবে সেগুলো আলাদা আলদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। মনে করুন আপনি কোন মাউন্টেনে গিয়ে ফটো উঠিয়েছেন তখন সেই ফটো মাইউন্টেন নামে গ্রুপ হয়ে যায়। যদি কোন বিশেষ জায়গায় গিয়ে বা আপনার পোষা বেড়ালের ছবি যদি উঠান তবে তা ক্যাট নামক গ্রুপ তৈরি করে সেভ করে। এখন যখন আপনি ফটো অনুসন্ধান করার জন্য সার্চ এ গিয়ে লিখবেন যে ব্লু বেলুন অন মাই হ্যান্ড তো ফটোস অ্যাপ আপনার সকল সবই স্ক্যান করে দেখবে যে কোন ছবির হাতে নীল রঙের বেলুন আছে। এবং খুঁজে পেলে তা আপনার সামনে এনে দেবে। আপনি হয়তো মনে করতে পারেন এটা আবার কোন ব্যাপার হলো? কিন্তু হাঁ বন্ধুরা এটাই অনেক বড় ব্যাপার। কেনোনা একটি কম্পিউটার কখনোই এটা বোঝার ক্ষমতা রাখে না। শুধু মাত্র মেশিন লার্নিং এর ফলেই এটা হওয়া সম্ভব।

তো বন্ধুরা সামনের দিনে মেশিন লার্নিং অনেক বিশাল বিপ্লব বয়ে নিয়ে আসতে চলছে। মেশিন লার্নিং এর ফলে যে সুবিধা গুলো আমরা পেতে চলেছি বন্ধুরা তা একদম শেষ হওয়ার মতো নয়। এমনকি আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না যে এতো কিছু হতে পারে। কারন আপনি এতো কিছু কখনো এক্সপ্লোরই করেন নি।

শেষ কথা

বন্ধুরা আশা করছি মেশিন লার্নিং সম্পর্কে আপনি এতক্ষণে অনেক কিছু জেনে গেছেন। এবং এতক্ষণে নিশ্চয় ধারণাও করতে পারছেন যে অদূর ভবিষ্যতে কতকিছু হয়ে চলেছে কম্পিউটার দ্বারা। আশা করছি পোস্টটি এবং আজকের টপিকটি অনেক চমৎকার ছিল। এবং আপনি যদি আমার মতো হয়ে থাকেন যে নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ভালোবাসেন তবে নিশ্চয় আপনার পোস্টটি ভালো লেগেছে। মেশিন লার্নিং এর ফলে আরো কি কি সুবিধা আমরা পেতে পারবো এই ব্যাপারে আপনার কি মনে হয় তা আমাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না 🙂

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button