প্রশ্ন ও উত্তর

পদার্থবিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২১)

প্রশ্ন-১। বিদ্যুৎ কিভাবে উৎপন্ন করা যায়?

উত্তরঃ ইবোনাইট, প্লাস্টিক, রাবার, গাটাপর্চা, কাচ ইত্যাদিতে ফ্লানেল, সিল্ক, পশমযুক্ত বিড়ালের চামড়া ইত্যাদি দিয়ে ঘর্ষণ করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়।

প্রশ্ন-২। বক্র চলন গতি কাকে বলে? বক্র চলন গতির উদাহরণ

উত্তরঃ চলন গতি সম্পন্ন বস্তু যদি বক্র পথে চলে তবে বস্তুর ঐই গতিকে বক্র চলন গতি বলে। আঁকাবাকা রাস্তায় গাড়ির গতি বক্র চলন গতির উদাহরণ।

প্রশ্ন-৩। সরল ছন্দিত স্পন্দন গতি কি?

উত্তরঃ সরল ছন্দিত স্পন্দন গতি বিশেষ ধরনের পর্যাবৃত্ত গতি, যেখানে বস্তুর গতির অর্ধেক সময় একদিকে চলে, বাকি অর্ধেক সময় বিপরীত দিকে চলে। যেমন– সরল দোলকের গতি।

প্রশ্ন-৪। সরলরৈখিক গতি কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন যদি একটি সরলরেখা বরাবর ঘটে তবে তার গতিকে সরলরৈখিক গতি বলে। যেমন– মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তুর গতি।

প্রশ্ন-৫। পরম স্থিতি কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি বস্তু প্রকৃতপক্ষে স্থির থাকলে তার এ অবস্থাকে পরম স্থিতি বলে। মহাবিশ্বে পরম স্থিতি বলে কিছু নেই।

প্রশ্ন-৬। আপেক্ষিক স্থিতি কী?

উত্তরঃ একটি বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন না হলে সেটিই আপেক্ষিক স্থিতি।

প্রশ্ন-৭। বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ বলতে কি বুঝ?

উত্তরঃ তরল পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করতে থাকলে যখন তাপমাত্রা স্ফুটনাঙ্কে চলে আাসে তখন যতই তাপ প্রয়োগ করা হোক না কেন সম্পূর্ণ তরল বাষ্পে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা স্থির থাকে। এখানে যে পরিমাণ তাপ তরল পদার্থকে বাষ্পীয় অবস্থায় রূপান্তর করল তাই বাষ্পীভবনের সুপ্ততাপ।

প্রশ্ন-৮। স্থিতি কি?

উত্তরঃ সময়ের পরিবর্তনের সাথে পরিপার্শ্বের সাপেক্ষে যখন কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে না তখন ঐ বস্তুকে স্থিতিশীল বা স্থির বস্তু বলে। আর এই অবস্থান অপরিবর্তিত থাকাকে বলে স্থিতি।

প্রশ্ন-১০। তড়িৎ প্রবাহের সময় পরিবাহীতে রোধের সৃষ্টি হয় কেন?

উত্তরঃ ইলেকট্রন প্রবাহ দ্বারা তড়িৎ প্রবাহ তৈরি হয়। ইলেকট্রন নিম্ন বিভব থেকে উচ্চ বিভবের দিকে প্রবাহিত হয়। এই ইলেকট্রন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে চলার সময় পরিবাহীর অভ্যন্তরস্থ অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষ হয়। তখন তাদের গতি বাধা পায় এবং রোধের সৃষ্টি হয়। তাই তড়িৎ প্রবাহের সময় অণু-পরমাণুর সংঘর্ষের জন্য পরিবাহীতে রোধের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-১১। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিটি লিখ।

উত্তরঃ শক্তি অবিনশ্বর, এর সৃষ্টি বা বিনাশ নাই। এটি কেবল একরূপ হতে অন্য এক বা একাধিক রূপে পরিবর্তিত হতে পারে। রূপান্তরের আগে ও পরে মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।

প্রশ্ন-১২। সুষম মন্দন কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর বেগ যদি নির্দিষ্ট দিকে সবসময় একই হারে কমতে থাকে তাহলে সেই মন্দনকে সুষম মন্দন বলে।

প্রশ্ন-১৩। কীভাবে প্লাজমা উৎপাদন করা যায়?

উত্তরঃ নিম্নচাপে গ্যাসকে উত্তপ্ত করার পর যখন পরমাণুগুলোর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় তখন এদের মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের ফলে এরা পরস্পরকে আয়নিত করে। এর ফলে প্লাজমা গঠিত হয়। সাধারণত, কোনো গ্যাসকে 50,000°C তাপমাত্রার উপরে উত্তপ্ত করলে সকল ইলেকট্রন পরমাণু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্লাজমা গঠন করে।

প্রশ্ন-১৪। আবেশহীন কুণ্ডলী কাকে বলে?

উত্তরঃ যে কুণ্ডলীর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন করা হলে তাতে তড়িচ্চালক বল আবিষ্ট হয় না তাকে আবেশহীন কুণ্ডলী বলে।

প্রশ্ন-১৫। পানির ব্যতিক্রমী প্রসারণ কি?

উত্তরঃ 4°C তাপমাত্রায় পানিকে গরম বা ঠান্ডা যাই করা হোক না কেন তা প্রসারিত হয়। এটি তরল পদার্থের প্রসারণের সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম। তাই পানির এই প্রসারণকে ব্যতিক্রমী প্রসারণ বলে।

প্রশ্ন-১৬। ভোল্টমিটার (Voltmeter) কাকে বলে?

উত্তরঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে বর্তনীর যে কোন দুই বিন্দুর মধ্যকার বিভব পার্থক্য সরাসরি ভোল্ট এককে পরিমাপ করা যায় তাকে ভোল্টমিটার বলে।

প্রশ্ন-১৭। ভার্নিয়ার স্কেল আবিষ্কার করেন কে?

উত্তরঃ ফরাসী গণিত শাস্ত্রবিদ পিয়েরে ভার্নিয়ার এই স্কেল আবিষ্কার করেন। তাঁর নামানুসারে একে নামকরণ করা হয়।

প্রশ্ন-১৮। স্নেলের সূত্র (Snell’s Law) কি?

উত্তরঃ একজোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং নির্দিষ্ট বর্ণের আলোক রশ্মির ক্ষেত্রে আপতণ কোণের sin এবং প্রতিসরণ কোণের sin-এর অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক। এটিই স্নেলের সূত্র।

প্রশ্ন-১৯। প্রত্যেক রাশি পরিমাপে একটি একক নির্ধারণ প্রয়ােজন কেন?

উত্তরঃ এ ভৌত জগতে পরিমাপযােগ্য যা কিছু সবই রাশি। আর প্রত্যেকটি ভৌত রাশিকে পরিমাপের জন্য একক নির্ধারণ অবশ্যই প্রয়ােজন। কারণ, যদি বলা হয় কোনাে একটি বস্তুর দৈর্ঘ্য 10 তবে এটি দ্বারা বস্তুর সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায় না। প্রকৃত ধারণা পাওয়ার জন্য দৈর্ঘ্যের সংখ্যাগত মানের পাশে একক ব্যবহার করতে হয়। যেমন, একটি বস্তুর দৈর্ঘ্য 10 মিটার।

প্রশ্ন-২০। কীভাবে এক্সরে উৎপন্ন হয়?

উত্তরঃ এক্সরে টিউবে এক্সরে উৎপন্ন হয়। এক্সরে টিউব একটি বায়ুশূন্য কাচ নল। নলের দুই প্রান্তে দুটি ইলেকট্রোড লাগানো থাকে। একটি ক্যাথোড ও অপরটি অ্যানোড। ক্যাথোডে সংযুক্ত টাংস্টেন ধাতুর তৈরি ফিলামেন্টের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহ ক্যাথডকে উত্তপ্ত করে। ফলে ইলেকট্রন মুক্ত হয়। অ্যানোড ও ক্যাথোডের মধ্যে উচ্চ বিভব পার্থক্য থাকায় দ্রুতগতিসম্পন্ন এই ইলেকট্রন অ্যানোডকে ধাক্কা মারে এবং এই ইলেকট্রনের গতিশক্তির কিছু অংশ এক্সরে আকারে নির্গত হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button