প্রশ্ন ও উত্তর

এইচএসসি (HSC) রসায়ন ২য় পত্র ৪র্থ অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে এমন পদার্থকে কী বলে?

উত্তর : তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে এমন পদার্থকে পরিবাহী বলে।

প্রশ্ন-২. বিজারণ তড়িদদ্বার কাকে বলে?

উত্তর : যে তড়িদদ্বারে বিজারণ ঘটে তাকে বিজারণ তড়িদদ্বার বলে।

প্রশ্ন-৪. অর্ধ-কোষ কী?

উত্তর : একটি পূর্ণাঙ্গ কোষের এক একটি তড়িদদ্বার ও তড়িৎ বিশ্লেষ্যের যুগলই অর্ধ-কোষ নামে পরিচিত।


প্রশ্ন-৫. অ্যানোড কাকে বলে?

উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় যে তড়িৎদ্বারে জারণ সংঘটিত হয়, তাকে অ্যানোড বলে।


প্রশ্ন-৬. ক্যাথোড কাকে বলে?

উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় যে তড়িৎদ্বারে বিজারণ সংঘটিত হয়, তাকে ক্যাথোড বলে।


প্রশ্ন-৭. দুর্বল তড়িৎবিশ্লেষ্য কী?

উত্তর : যেসব পদার্থ দ্রবণে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় তারা খুব সামান্য তড়িৎ পরিবহন করে। এরা দুর্বল তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসেবে পরিচিত।


প্রশ্ন-৮. সবল তড়িৎবিশ্লেষ্য কাকে বলে?

উত্তর : যেসব যৌগ তাদের সাধারণ লঘু দ্রবণে যথেষ্ট পরিমাণ বিয়োজিত হয় তাদেরকে সবল তড়িৎবিশ্লেষ্য বলে।


প্রশ্ন-৯. গ্যালভানিক কোষ কাকে বলে?

উত্তর : রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা এবং বাহ্যিক বিদ্যুৎ প্রবাহ ছাড়া যে কোষে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় তাকেই গ্যালভানিক কোষ বলে।


প্রশ্ন-১০. তড়িৎ রাসায়নিক কোষ কাকে বলে?

উত্তর : যে তড়িৎ রাসায়নিক ব্যবস্থাপনায় রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে তড়িৎ শক্তি উৎপাদন বা তড়িৎ শক্তি প্রবাহ দ্বারা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো হয় তাকে কোষ তথা তড়িৎ রাসায়নিক কোষ বলে।

প্রশ্ন-১১. তড়িৎ অবিশ্লেষ্য কাকে বলে?

উত্তর : যে সব যৌগ দ্রবণে বা বিগলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে না, তাদেরকে তড়িৎ অবিশ্লেষ্য বলে। সমযােজী যৌগ তড়িৎ অবিশ্লেষ্য। যেমন- চিনি, গ্লুকোজ প্রভৃতি হল তড়িৎ অবিশ্লেষ্য পদার্থ।

তড়িৎবিশ্লেষ্য যৌগ কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব যৌগ বিগলিত বা পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে এবং সে সাথে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তাদেরক তড়িৎবিশ্লেষ্য যৌগ বলে।

তড়িৎ রাসায়নিক তুল্যাঙ্ক কাকে বলে?

উত্তরঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় একটি তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের দ্রবণে 1.0 কুলম্ব বিদ্যুৎ চার্জ প্রবাহিত করলে যত গ্রাম পদার্থ যেকোনো তড়িৎদ্বারে সঞ্চিত বা দ্রবীভূত হয় তাকে ঐ পদার্থের তড়িৎ রাসায়নিক তুল্যাঙ্ক বলে।

প্রমাণ তড়িৎদ্বার বিভব কাকে বলে?

উত্তরঃ কোন তড়িৎদ্বার বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী উপাদানগুলির প্রত্যেকটির সক্রিয় ভর যদি একক (1) হয়, তবে ২৫°C তাপমাত্রায় ঐ তড়িৎদ্বারে যে তড়িৎ বিভবের সৃষ্টি হয়, তাকে ঐ তড়িৎদ্বারের প্রমাণ তড়িৎদ্বার বিভব বলে।

এক ফ্যারাডে বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ 1 mol ইলেকট্রনের প্রবাহ করতে যে বিদ্যুৎ চার্জ প্রয়োজন বা 1 mol ইলেকট্রনের প্রবাহ দ্বারা যে বিদ্যুৎ চার্জ উৎপন্ন হয় তাকেই এক ফ্যারাডে বলে।

1.0F বিদ্যুৎ = 96500C আধান।

তড়িৎবিশ্লেষ্য কোষে ক্যাথোডে ধাতু সঞ্চিত হয় কেন?

উত্তরঃ তড়িৎবিশ্লেষ্য কোষে ক্যাথোডে ধাতু সঞ্চিত হয়, কারণ-

(i) ক্যাথোডে বিজারণ বিক্রিয়া ঘটে।

(ii) ক্যাথোডে ধাতব আয়ন প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন গ্রহণ করে ধাতব পরমাণুতে পরিণত হয়।

তড়িৎবিশ্লেষণে তড়িৎদ্বারে যুক্ত বা বিমুক্ত পদার্থের ভর কয়টি শর্তের উপর নির্ভরশীল?

উত্তরঃ তড়িৎবিশ্লেষণ চলাকালে তড়িৎদ্বারে মুক্ত বা যুক্ত পদার্থের পরিমাণ বা ভর তিনটি জিনিসের উপর নির্ভরশীল— ১. প্রবাহিত বিদ্যুতের পরিমাণ; ২. বিদ্যুৎ প্রবাহের সময়কাল; ৩. যুক্ত হওয়া আয়নসমূহের চার্জ বা আধান।

লবণ সেতু কেন ব্যবহার করা হয়?

উত্তরঃ তড়িৎ রাসায়নিক কোষে বা ডেনিয়েল কোষে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করার জন্য (Salt bridge) লবণ সেতু ব্যবহার করা হয়। কারণ, তড়িৎ রাসায়নিক কোষে উভয় অর্ধকোষের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য লবণ সেতুর মধ্যে KCl/NH4NO3 দ্বারা সংযোগ দেওয়া হয়। লবণ সেতু থেকে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন জারণ অর্ধকোষ ও বিজারণ অর্ধকোষের মধ্যে আয়নের নিরপেক্ষতা বজায় রাখে।

গ্যালভানিক সেলে জিংক দন্ড থেকে কপার দন্ডে ইলেকট্রন স্থানান্তর হয় কেন?

উত্তরঃ গ্যালভানিক কোষের অ্যানোডে জিংক দন্ড এবং জিংক সালফেট দ্রবণ এবং ক্যাথোডে কপার দন্ড এবং কপার সালফেট দ্রবণ ব্যবহার করা হয়। জিংক এবং কপারের মধ্যে জিংকের সক্রিয়তা বেশি বলে জিংক বিজারক এবং কপার জারক হিসেবে কাজ করে। আমরা জানি, বিজারক ইলেকট্রন দান করে এবং জারক ইলেকট্রন গ্রহণ করে। সুতরাং, উল্লিখিত কোষে জিংক দন্ড হতে কপার দন্ডে ইলেকট্রন স্থানান্তর হয়।

ধাতু তড়িৎ পরিবহন করে কিন্তু আয়নিক যৌগের কেলাস তড়িৎ পরিবহন করে না কেন?

উত্তরঃ ধাতুতে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে। ধাতুর তড়িৎ ধনাত্মকতা ও অষ্টক গঠন লাভের জন্য সৃষ্ট এই ইলেকট্রনগুলো তড়িৎক্ষেত্রের প্রভাবে তড়িৎ উৎসের ঋণাত্বক দিক থেকে ধনাত্মক প্রান্তের দিকে প্রবাহিত হয়। তাই ধাতুগুলো ইলেকট্রন পরিবহন করে।

অপরদিকে আয়নিক কেলাসে থাকা ইলেকট্রনগুলো কেলাসে আবদ্ধিত অবস্থায় থাকে। তাই বহিঃস্থ বিভবের প্রভাবে এতে ইলেকট্রনের প্রবাহ ঘটে না। তাই আয়নিক যৌগের কেলাস তড়িৎ পরিবহন করে না।

লেড ব্যাটারি দ্বারা পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ লেড ব্যাটারিতে লেড (Pb) ধাতু ব্যবহার করা হয়। এ লেড ভারী ধাতু বলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। এগুলো পরিবেশে আসলে প্রাণী ও উদ্ভিদের নানারকম রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার, লেড স্টোরেজ ব্যাটারিতে তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসেবে সালফিউরিক এসিড ব্যবহার করা হয়। এটি তীব্র এসিড, যখন মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের সংস্পর্শে আসে তখন ক্ষতিসাধন করে।

NaCl এর জলীয় দ্রবণ বিদ্যুৎ পরিবহন করে কেন?

উত্তরঃ বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য প্রয়োজন বিচ্ছিন্ন ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আয়ন। আয়নিক যৌগ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নিত অবস্থায় (বিচ্ছিন্ন ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে অবস্থান করে) থাকে। এই আয়নের মাধ্যমে আয়নিক যৌগ বিদ্যুৎ পরিবহন করে।

NaCl একটি আয়নিক যৌগ। এটি কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে না কিন্তু গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে এবং বিদ্যুৎ পরিবহনের সাথে সাথে এর রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে।

খাদ্য লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) পানির সংস্পর্শে আসলে এটি পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জলীয় দ্রবণ তৈরি করে এবং এই  দ্রবণে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে Na+ ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে Cl- বিচ্ছিন্নভাবে চলাচল করে।

NaCl(s) + H2O (l) = Na+(aq) + Cl-(aq)

যেহেতু জলীয় দ্রবণে NaCl বিচ্ছিন্ন ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে অবস্থান করে কাজেই এটি জলীয় দ্রবণে বিদ্যুৎ পরিবহন করে।

উদাহরণস্বরূপ, একটি বিকারে খাদ্য লবণের (NaCl) জলীয় দ্রবণ নিয়ে এতে ইলেকট্রোড হিসেবে দুটি গ্রাফাইট দণ্ড কিংবা যেকোনো ধাতব দণ্ড ডুবিয়ে দণ্ডদ্বয়ের সাথে ব্যাটারি এবং বাল্ব যুক্ত করে বর্তনী পূর্ণ করি।

পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, বর্তনীতে বাল্ব জ্বলছে অর্থাৎ খাদ্য লবণ বা NaCl এর জলীয় দ্রবণ বিদ্যুৎ পরিবহন করে।

আরো পড়ুনঃ-

১। এইচএসসি (HSC) রসায়ন ২য় পত্র ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

২। এইচএসসি (HSC) রসায়ন ২য় পত্র ২য় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

৩। এইচএসসি (HSC) রসায়ন ২য় পত্র ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

৪। এইচএসসি (HSC) রসায়ন ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button