Computer

ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ

কম্পিউটার, ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি করবেন ?

বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ গুলোর বিষয়ে জানবো। আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস (virus) থাকলে সেটা কিভাবে বুঝতে পারবেন, সেই বিষয়ে আমরা আজকে আলোচনা করবো।

আমরা আমাদের কম্পিউটারে বিভিন্ন external storage drive যেমন pen-drive, hard-drive, mobile ইত্যাদি প্রায় সময় connect করে থাকি এবং file এর আদান প্রদান করে থাকি।

এছাড়া, বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটি কম্পিউটার সিস্টেম ইন্টারনেটের সাথে অবশই সংযুক্ত হয়ে থাকে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন online websites গুলোতে প্রবেশ করে থাকি।

তবে, ওয়েবসাইট গুলো safe কি না সেটা যাচাই করার প্রয়োজন আমরা মনে করে থাকিনা।

তাই, একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার সিস্টেম এর দ্বারা হওয়া এই বিভিন্ন ধরণের কার্যকলাপ (activities) গুলোর কারণে ম্পিউটার ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।

আর এটা সত্যি যে অনেক সময় আমরা নিজেও বলতে পারিনা যে কখন কিভাবে আমাদের কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে ফেলে।

তবে, যদি আপনার কম্পিউটারে কোনো ভাবে ভাইরাস প্রবেশ করেছে তাহলে কিছু লক্ষণ অবশই দেখতে পাবেন।

কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ গুলোর তালিকা

কম্পিউটারে ভাইরাস থাকার লক্ষণ গুলোর মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণটি হলো, “কম্পিউটার নিজে নিজে স্লো হয়ে যাওয়া”.

তাই, যদি অকারণে নিজে নিজে আমরা কম্পিউটার অনেক স্লো হয়ে গেছে, হ্যাং হচ্ছে বা নিজে নিজে রিস্টার্ট হচ্ছে, তাহলে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস থাকার সুযোগ অনেক বেশি রয়েছে।

কম্পিউটার স্লো হওয়া ছাড়াও অন্যান্য আরো লক্ষন গুলো রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটারে ভাইরাস এর উপস্থিতি বুঝা যেতে পারে।

কম্পিউটার স্লো কাজ করছে

আমি আগেই বলেছি, যদি আপনার কম্পিউটারের স্পিড হটাৎ অনেক কমে গিয়েছে, তাহলে আপনার কম্পিউটার অবশই কোনো ভাইরাস এর ফাঁদে পড়েছে। কম্পিউটার ভাইরাস গুলো অবশই সব থেকে প্রথমেই কম্পিউটারকে অনেক স্লো করে ফেলে।

কারণ, ভাইরাস গুলোর কাজ হলো ভিতরে ভিতরে আপনার কম্পিউটারটি ব্যবহার করে কিছু কাজ করতে থাকা।

আর তাই, কম্পিউটারের দ্রুততা অনেক কমে আসবে বা কম্পিউটার হ্যাং হতে থাকবে।

আপনার কম্পিউটার যদি নিজে নিজে অনেক স্লো হয়ে গিয়েছে যার কারণ আপনি বুঝতে পারছেননা তাহলে অবশই একটি ভালো এবং প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস দিয়ে সম্পূর্ণ কম্পিউটার স্ক্যান করুন।

অনেক দেরি করে চালু হওয়া

যদি আপনার কম্পিউটার আগে অনেক তাড়াতাড়ি বুট (boot) বা চালু হয়ে যেত এবং হটাৎ কিছুদিন থেকেই চালু (boot) হতে অনেক সময় নিচ্ছে, তাহলে এর জন্যেও কোনো ভাইরাসই দায়ী হওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেশি।

কারণ, যখনি আপনি নিজের কম্পিউটারের পাওয়ার বাটন টিপে কম্পিউটার চালু করতে চাইবেন, তখন সাথে সাথে আপনার কম্পিউটারে থাকা ভাইরাস গুলো সক্রিয় হয়ে যাবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড এর মধ্যে কাজ করা শুরু করে দিবে।

এর ফলে, কম্পিউটারের প্রসেসর এবং অন্যান্য সফটওয়্যার / হার্ডওয়্যার গুলো অনেক স্লো হয়ে যায় ফলে কম্পিউটার চালু করতে তাদের অনেক সময় লাগে।

কম্পিউটার নিজে নিজে রিস্টার্ট হয়ে যাচ্ছে

এমনিতে একটি কম্পিউটার নিজে নিজে রিস্টার্ট হওয়ার প্রচুর অন্যান্য কারণ অবশই থাকতে পারে। তবে জেনে রাখুন, একটি কম্পিউটার ভাইরাস ও কিন্তু নিজে নিজে সিস্টেম রিস্টার্ট (system restart) হওয়ার একটি মূল কারণ।

তাই, যদি আপনি এই সমস্যা পাচ্ছেন তাহলে অবশই নিজের সম্পূর্ণ কম্পিউটার একটি ভালো antivirus এর মাধ্যমে full-scan করে দেখুন।

প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার গুলো ওপেন হতে সময় নিচ্ছে

হটাৎ কিছু দিন থেকে কম্পিউটারের প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার গুলোতে ক্লিক করলে সেগুলো যদি ওপেন হতে অনেক সময় নিচ্ছে তাহলে এটাও কিন্তু আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস লুকিয়ে থাকার একটি সংকেত।

এর কারণও একই, ভাইরাস গুলো যখন ভিতরে ভিতরে তাদের কাজ করতে থাকে তখন আপনার সিস্টেম সেখানেই ব্যস্ত হয়ে যায়।

এতে, পরে যখন আপনি নতুন program বা software চালু করার নির্দেশ কম্পিউটারকে দিয়ে থাকেন তখন সে আগের থেকে ব্যস্ত থাকার কারণে অনেক স্লো কাজ করে।

মনে রাখবেন, বেশিরভাগ computer virus প্রায় সব সময় আপনার system এর resources গুলো ব্যবহার করতে থাকে।

কম্পিউটার চলতে চলতে হ্যাং হয়ে যাওয়া

অনেক সময় এরকম হয় যে, আপনি আপনার কম্পিউটারে কাজ করছেন এবং হটাৎ কম্পিউটার হ্যাং (hang) হয়ে গেলো।

এমনিতে, আপনার কম্পিউটারে RAM, storage বা processor power / speed যদি অনেক কম থাকে তাহলেও সিস্টেম হ্যাং করবে।

কিন্তু এখানে আমি তাদের ক্ষেত্রে বলছি যাদের কম্পিউটারে ভালো মানের processor, storage এবং RAM লাগানো আছে।

তাই, হটাৎ কিছু দিন থেকে যদি কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যাচ্ছে তাহলে জেনে রাখুন, এই সমস্যার কারণ অবশই কোনো কম্পিউটার ভাইরাস।

অচেনা প্রোগ্রাম / সফটওয়্যার ইনস্টল হওয়া

যদি আপনার কম্পিউটারে নিজে নিজে কোনো অচেনা প্রোগ্রাম, ফাইল বা সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে গেছে, তবে আপনি জানেন যে আপনি সেটা ইনস্টল করেননি, তাহলে নিশ্চিত হয়ে যেতে হবে যে এটা কোনো ভাইরাস এরই কাজ।

এরকম অনেক কম্পিউটার ভাইরাস আছে যেগুলো আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে নিজে নিজে অন্যান্য program বা software গুলোকে আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করতে থাকে।

প্রোগ্রাম / সফটওয়্যার install বা uninstall করতে পারছেননা

অনেক সময় এরকম সমস্যা ও আপনি পেতে পারেন যে, আপনার কম্পিউটার থেকে প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার uninstall বা install কিছুই হচ্ছেনা।

এমনিতে অনেক সময় এর কারণ একটি কম্পিউটার ভাইরাস হওয়া দেখা যায় যদিও অনেক সময় অন্যান্য কারণেও এই ধরণের সমস্যা হতে পারে।

এরর মেসেজ (error message) এবং সিস্টেম ক্র্যাশ (system crash)

অনেক সময় যখন আমাদের কম্পিউটারে একটি ভাইরাস বসবাস করে থাকে তখন ঘন ঘন বিভিন্ন এরর মেসেজ এবং সিস্টেম ক্র্যাশ হওয়া দেখা যায়। কোনো কারণ ছাড়া হটাৎ যদি এই ধরণের সমস্যা গুলো আপনি পাচ্ছেন, তাহলে অবশই এটার কারণ কোনো ভাইরাস।

ঘন ঘন pop-up windows চলে আসছে

কম্পিউটারে কাজ করতে থাকতে বা এমনি কম্পিউটার চালু থাকা অবস্থায় যদি কিছুক্ষন পর পর বা ঘন ঘন নিজে নিজে কিছু অসম্ভাবিত pop-up চলে আসছে যেগুলোর বিষয়ে আপনি একেবারেই জানেননা, তাহলে এর কারণ একটি কম্পিউটার ভাইরাস অবশই হতে পারে।

  হটাৎ প্রচুর বিজ্ঞাপন চলে আসছে

আমরা যখন নিজের কম্পিউটার থেকে কিছু অবিশ্বস্ত (untrusted) ওয়েবসাইট গুলোতে প্রবেশ করি, তখন অনেক সময় সেগুলোর থেকে কিছু adware virus গুলো আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করে থাকে।

ফলে, সম্পূর্ণ কম্পিউটারে, ওয়েব ব্রাউজারে বা যেকোনো প্রোগ্রাম ওপেন করলে স্ক্রিনে কেবল বিজ্ঞাপন চলে আসে।

আপনি সেই অপ্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন গুলোর কারণে কিছুই করতে পারেননা।

তাই, যদি হটাৎ করে কম্পিউটারে স্ক্রিনে যেকোনো ক্ষেত্রেই কেবল বিজ্ঞাপন এর পপ-আপ দেখানো হচ্ছে, তাহলে এটার সরাসরি একটি অ্যাডওয়্যার ভাইরাস।

কম্পিউটার, ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি করবেন ?

যদি আপনি ভাবছেন যে আপনার কম্পিউটারেও ভাইরাস আছে বা ভাইরাস আক্রান্তের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে, তাহলে সবচে আগে আপনাকে একটি ভালো এবং প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করাটা দরকার।

১. একটি ভালো antivirus software এবং an anti-malware program এর মাধ্যমে full system scan করতে হবে।

এতে, যদি আপনার কম্পিউটারে কোনো virus থেকে থাকে তাহলে সেটা ধরা পড়বে এবং সেটাকে ডিলিট করা যাবে।

২. যদি আপনি সেই virus বা infected files গুলো delete করতে পারছেননা, তাহলে সরাসরি নিজের কম্পিউটার রিস্টোর করে ফেলুন।

৩. এবার, যদি কোনো মতেই আপনি আপনার কম্পিউটার থেকে সেই ভাইরাস গুলো ডিলিট করতে পারছেননা, তাহলে এর দারুন এবং কার্যকর একমাত্র উপায় হলো, “নতুন করে OS install করা”.

এর ফলে আপনার system থেকে পুরোনো প্রত্যেকটি files, programs, data, OS ইত্যাদি delete হয়ে যাবে এবং কেবল নতুন করে ইনস্টল করা OS এবং তার সাথে জড়িত files ও programs গুলো থাকবে।

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বন্ধুরা, ওপরে বলা কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্তর লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পারবেন যে আপনার কম্পিউটারে বা ল্যাপটপ কি ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে আছে কি না।

এছাড়া, আমরা নিচে কিছু সমাধান গুলো নিয়েও আলোচনা করলাম, যেগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটার থেকে ভাইরাস গুলোকে ডিলিট করা যাবে।

কম্পিউটারে ভাইরাস আছে কি নেই সেটা বুঝাটা অনেক সময় অনেক সোজা কাজ হয়ে দাঁড়ায় যদি আমরা নিজের সিস্টেম এর আচরণ গুলোর ওপরে ভালো করে নজর দিয়ে থাকি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button